কোর অব মিলিটারি পুলিশের ‘৬ষ্ঠ কর্নেল কমান্ড্যান্ট’ আর্টডকের জিওসি

প্রকাশিতঃ 7:03 pm | October 19, 2020

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অন্যতম চৌকষ ও পেশাদার অঙ্গসংগঠন কোর অব মিলিটারি পুলিশ। উঁচু পেশাদারিত্বের স্বাক্ষর রেখে মিলিটারি পুলিশ সদস্যরা অর্পিত দায়িত্ব অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গেই পালন করছে। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্ব পরিমন্ডলেও এই কোর এর সুনাম বিস্তৃত হয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনেও তাঁরা রেখে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াত সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন ছিলেন কোর অব মিলিটারি পুলিশের ‘পঞ্চম কর্নেল কমান্ড্যান্ট’।

সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলার ধারক-বাহক কোর অব মিলিটারি পুলিশের ‘৬ষ্ঠ কর্নেল কমান্ড্যান্ট’ হিসেবে এবার অভিষিক্ত হয়েছেন আর্মি ট্রেনিং এন্ড ডকট্রিন কমান্ডের (আর্টডক) জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

সোমবার (১৯ অক্টোবর) সকালে সাভার সেনানিবাসস্থ কোর অব মিলিটারী পুলিশ সেন্টার এন্ড স্কুলে (সিএমপিসিএন্ডএস) বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে এ সম্মানে অভিষিক্ত করা হয়। কোর অব মিলিটারী পুলিশ’র জ্যেষ্ঠ অধিনায়ক এবং জ্যেষ্ঠ সুবেদার মেজর আর্টডকের জিওসিকে ‘কর্নেল কমান্ড্যান্ট’ র‌্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন।

আড়ম্বরপূর্ণ এবং মনোজ্ঞ অভিষেক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী ও গৌরবদীপ্ত কোর অব মিলিটারি পুলিশের ‘কর্নেল কমান্ড্যান্ট’ হিসেবে ‘দুর্লভ সম্মান’ দেওয়ায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন আর্টডকের জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি দু’দফা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার ওপর অর্পিত এই পবিত্র ও গুরুদায়িত্ব পালনে আমি সর্বদা সচেষ্ট থাকবো। একই সঙ্গে কোর এর সঠিক বিকাশ ও উন্নতির জন্য সর্বক্ষেত্রে আমার কার্যকরী ভূমিকা থাকবে।’

লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ নিজের বক্তব্যের শুরুতেই ইতিহাসের মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্নোৎসর্গকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন কোর অব মিলিটারি পুলিশের পঞ্চম কর্নেল কমান্ড্যান্ট মরহুম মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনকে।

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থেকে সিএমপি সেন্টার এন্ড স্কুল শহীদ সালাউদ্দিন সেনানিবাস সাভারে স্থানান্তর এবং সকল প্রকার স্থাপনা নির্মাণে তাঁর দৃষ্টান্তমূলক অবদান কোর অব মিলিটারি পুলিশের সকল সদস্যের নিকট চির অম্লান হয়ে থাকবে বলেও মনে করেন আর্টডকের জিওসি।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে এ কোর এর সদস্যরা শান্তিতে এবং সমরে সর্বত্র দেশের জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে মন্তব্য করে লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সংকটাপন্ন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং বর্তমানে কোভিড-১৯ এর উদ্ভুত পরিস্থিতিতে মিলিটারি পুলিশের অবদান সেনাবাহিনীসহ দেশের স্তরের জনগণের কাছে প্রশংসিত হয়েছে; যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে আশা রাখি।’

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি সুশৃঙ্খল ও পেশাদার বাহিনী হিসেবে আজ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত, যেখানে কোর অব মিলিটারি পুলিশের অবদান অনস্বীকার্য।

এখন পর্যন্ত মিলিটারি পুলিশ কোর এর ১৩০ জন জেসিও, ২ হাজার ৪৯৫ জন এনসিও ও অন্যান্য পদবীর সর্বমোট ২ হাজার ৬২৫ জন জাতিসংঘ মিশনে নিয়োজিত থেকে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে’ যোগ করেন তিনি।

সেনাবাহিনীর উজ্জ্বল ভাবমূর্তি, মিলিটারি পুলিশের পারদর্শিতা ও কার্যকরী ভূমিকার উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল, জানিয়ে আর্টডকের জিওসি আরও বলেন, ‘শৃঙ্খলা রক্ষার গুরুদায়িত্ব কোর অব মিলিটারি পুলিশের ওপর ন্যস্ত। আমি আশা করি কোর অব মিলিটারি পুলিশ এর সকল সদস্য এই গুরু দায়িত্ব যে কোন মূল্যে পালন করতে সচেষ্ট থাকবেন।’

সততা, সত্যনিষ্ঠা এবং আনুগত্য এই তিনটি মূল্যবোধকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করতে কোর অব মিলিটারি পুলিশের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মিলিটারি পুলিশ কোর এর মূলমন্ত্র ‘শৃঙ্খলা’ বিধায় কোর এর সকল সদস্যকে সর্বপ্রথমে সুশৃঙ্খল হতে হবে। কেননা, শৃঙ্খলা ছাড়া আদর্শ সৈনিক গঠন সম্ভব নয়।’

এর আগে আর্টডকের জিওসি অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে কোর অব মিলিটারী পুলিশ এর একটি চৌকস দল তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদিন, ডাইরেক্টর পিএস ডাইরেক্টরেট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নাসের মো.ইলিয়াস, কোর অব মিলিটারী পুলিশ সেন্টার এন্ড স্কুলের (সিএমপিসিএন্ডএস) কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ শামসসহ উর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এপি/এমএএএমকে

Print Friendly, PDF & Email