পরিবেশ অধিকারকে মৌলিক অধিকার করার দাবি অ্যাটর্নি জেনারেলের

প্রকাশিতঃ 7:41 pm | July 11, 2025

চবি প্রতিবেদক, কালের আলো:

পরিবেশ অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তুলেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, পরিবেশ অধিকার এখন কেবল পরিবেশের বিষয় নয়, এটা মানুষের জীবনের অধিকারের সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। তাই সংবিধানে একে মৌলিক অধিকার হিসেবে যুক্ত করার সময় এসেছে।

শুক্রবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আয়োজিত ‘এসসিএলএস আইন অলিম্পিয়াড ২০২৫’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রসঙ্গত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের এ কে খান অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হয় দেশের অন্যতম বৃহৎ আইনভিত্তিক প্রতিযোগিতা ‘এসসিএলএস আইন অলিম্পিয়াড ২০২৫’। প্রতিযোগিতার এবারের থিম ছিল ‘পরিবেশ আইন ও জলবায়ু ন্যায়বিচার’। চবির আইন অনুষদের শিক্ষার্থীদের সংগঠন সোসাইটি ফর ক্রিটিক্যাল লিগ্যাল স্টাডিজ (এসসিএলএস) অলিম্পিয়াড আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন, জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম, চবি আইন অনুষদের ডিন ড. জাফর উল্লাহ তালুকদার ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. আহসানুল করিম।

এটর্নি জেনারেল বলেন, নদীর দুই পাড়ে দখল, প্লাস্টিক ফেললে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়। একসময় স্রোতস্বিনী নদী রূপ নেয় মৃত জলাশয়ে। এমন বাস্তবতা থেকেই পরিবেশ নিয়ে আন্দোলন এখন সময়ের দাবি। আমি চাই না বাংলাদেশের মেধাবীরা বিদেশে পাড়ি দিক। তারা যেন এখানেই স্বপ্ন বুনতে পারে, এমন বাংলাদেশ গড়তেই পরিবেশ বাঁচাতে হবে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, জেলায় জেলায় পরিবেশ উন্নয়নের জন্য তহবিল থাকলেও তা ব্যয় হয় না। একটি জেলায় গিয়েছিলাম, যেখানে জেলা প্রশাসক জানালেন ৪০ লাখ টাকার তহবিল পড়ে আছে, যা খরচই হয় না। তিনি উদ্যোগ নিয়েছেন শিক্ষার্থীদের গাছ উপহার দেওয়ার। এ ধরনের উদ্ভাবনী চিন্তা সব জেলায় ছড়িয়ে দিতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন বলেন, পরিবেশ আদালতে মামলার প্রক্রিয়া সীমিত। ফলে সাধারণ মানুষের পক্ষে পরিবেশ বিষয়ক ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা কঠিন হয়ে পড়ে। কেবল পরিবেশ অধিদপ্তর মামলা করতে পারে। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠানটি কার্যত অচল হয়ে আছে।

ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী বলেন, এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আইনের শিক্ষার্থীরা পেশাগত বাস্তবতা জানতে পারছে। এতে তারা বিভিন্ন আইনজীবীর সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য বড় সুযোগ।

প্রতিযোগিতায় দেশের ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাছাই করা ৪০টি দল অংশ নিয়েছে, যাদের নির্বাচন করা হয়েছে ৭০টিরও বেশি নিবন্ধিত দলের মধ্য থেকে। অলিম্পিয়াডটি পাঁচটি ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, ‘পিক্টোরিয়াল প্লী’, ‘রেবেলিয়াস স্পিরিট’, ‘ক্রিটিক্যাল আই’, ‘রিফর্ম অ্যাসেম্বলি’ ও ‘সিম্পোজিয়াম রাউন্ড’। প্রতিটি রাউন্ডে অংশগ্রহণকারীরা আটটি গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা নিয়ে আইনি বিশ্লেষণ, যুক্তি ও বিতর্কভিত্তিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।

কালের আলো/এসএকে