নতুন তিন জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান উদ্ভাবন
প্রকাশিতঃ 11:08 am | June 22, 2019

কালের আলো প্রতিবেদক:
আমন ও বোরো মৌসুমে চাষের উপযোগী তিনটি নতুন উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)। এগুলো হলো রোপা আমনের প্রিমিয়াম কোয়ালিটি জাত ব্রি ধান ৯০ ও বোনা আমনের জাত ব্রি ধান ৯১ এবং বোরো মৌসুমের পানি সাশ্রয়ী জাত ব্রি ধান ৯২।
বুধবার(১৯ জুন) চাষাবাদের অনুমোদন পেয়েছে এই ধানগুলো। ওইদিন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় বীজ বোর্ডের সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
ব্রি ধান ৯০-এর গড় ফলন হেক্টর প্রতি পাঁচ টন। এ ফলন আমন মৌসুমের জনপ্রিয় জাত ব্রি ধান ৩৪-এর চেয়ে হেক্টরে এক থেকে ১.৪ টন বেশি। ব্রি ধান ৯১-এর হেক্টর প্রতি গড় ফলন ২.৩৭ টন যা স্থানীয় জাত ফুলকরির চেয়ে ১.৫ টন বেশি। আর বোরো জাত ব্রি ধান ৯২-এর গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৮.৩ টন। তবে উপযুক্ত পরিচর্যায় এ জাত হেক্টর প্রতি ৯.৩ টন ফলন দিতে সক্ষম।
ব্রি জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মো. আবুল কাসেম জানান, ব্রি ধান৯০ এ আধুনিক উচ্চ ফলনশীল ধানের সব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ এ জাতের দানার আকৃতি ব্রি ধান৩৪-এর মতো হালকা সুগন্ধযুক্ত। এ জাতের পূর্ণ বয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১১০ সেন্টিমিটার। এর গড় জীবনকাল ১১৭ দিন, যা ব্রি ধান৩৪-এর চেয়ে ২১ দিন আগাম। এ ছাড়া এই জাতের ধান চাষে সারও তুলনামূলক কম দরকার হয়।
নতুন উদ্ভাবিত এ জাত স্থানীয় জাত চিনিগুঁড়া এবং চিনি আতপের বিকল্প হিসেবে ভোক্তাদের চাহিদা পূরণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন মো. আবুল কাসেম।
ব্রি ধান৯১ গাছের গড় উচ্চতা ১৮০ সেন্টিমিটার এবং সহজে হেলে পড়ে না। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এটি বাড়তে পারে এবং এটি জলমগ্নতা সহিষ্ণু। এর গড় জীবনকাল ১৫৬ দিন, যা স্থানীয় জলি আমন ধানের জাতের চেয়ে ১০-১৫ দিন আগাম। এ জাতে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রচলিত জাতের চেয়ে কম হয়।
এ জাত দেশের এক মিটার উচ্চতার গভীর পানির বন্যাপ্রবণ অঞ্চলের পাঁচ লাখ হেক্টর জমিতে চাষ করতে পারলে মোট ধান উৎপাদন প্রায় পাঁচ লাখ টন বৃদ্ধি পাবে।
আর বোরো মৌসুমের পানি সাশ্রয়ী জাত ব্রি ধান৯২ চাষে তুলনামূলক কম পানি ব্যবহার করে ব্রি ধান২৯-এর সমান ফলন পাওয়া যায়। সে জন্য বরেন্দ্র অঞ্চলে এটি চাষ করে সুফল পাওয়া যাবে। এ জাতের জীবনকাল ব্রি ধান২৯-এর সমান অর্থাৎ ১৫৬-১৬০ দিন। পূর্ণ বয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১০৭ সেন্টিমিটার।
ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর আশা করছেন, নতুন জাত তিনটি কৃষক পর্যায়ে জনপ্রিয় হবে এবং সামগ্রিকভাবে ধান উৎপাদন বাড়বে। আগামী দিনে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
কালের আলো/এআর/এমএম