লাইভে এসে নিজের অস্ত্র দিয়ে নায়ক রিয়াজের শ্বশুরের আত্মহত্যা

প্রকাশিতঃ 10:35 am | February 03, 2022

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:

রাজধানীর ধানমন্ডিতে নায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খান ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

বুধবার (০২ ফ্রেরুয়ারি) রাত পৌনে ১০টার দিকে ফেসবুক লাইভে মাথায় গুলি চালান তিনি। ঘটনার পরপরই লাইভটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা পরে সরিয়ে নেওয়া হয়।

তবে দ্রুত সময়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছেন ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম আলী মিয়া।

ওসি বলেন, চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন।

ফেসবুক লাইভে যা বলেছেন
আবু মহসিন ফেসবুক লাইভে এসে প্রথমেই নিজের পরিচয় দেন। বলেন, ‘আমি মহসিন। ঢাকায় থাকি। আমার বয়স ৫৮ বছর। কোনো এক সময় আমি ভালো ব্যবসায়ী ছিলাম। বর্তমানে আমি ক্যানসারে আক্রান্ত। তাই আমার ব্যবসা কিংবা কোনো কিছু নেই। ভিডিও লাইভে আসার উদ্দেশ্য হলো: মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং আমার যে অভিজ্ঞতা সেটা শেয়ার করলে সবাই জানতে পারবে, সবাই সাবধানতা অবলম্বন করবে।’

তিনি বলেন, ‘গত ৩০ তারিখ আমার খালা মারা যান। তার একটি ছেলে আমেরিকায় থাকে। মা মারা গেল অথচ ছেলেটি আসল না। এটা আমাকে অনেক দুঃখ দিয়েছে। আজ আমার আরেকজন খালা মারা গিয়েছেন। তারও একটি ছেলে আমেরিকায় ছিল। অবশ্য তার তিনটা ছেলেই ইঞ্জিনিয়ার। তিনজনই বর্তমানে বাংলাদেশে আছেন। তারা হয়তো দাফন–কাফনের কাজ সম্পন্ন করছে। সেদিক দিয়ে বলবো, এই খালা অনেক ভাগ্যবান।’

নিজের ছেলের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমার একটা মাত্র ছেলে। সে অস্ট্রেলিয়ায় থাকে। আমি বাসায় সম্পূর্ণ একা থাকি। আমার খালা মারা যাওয়ার পর থেকে আমার ভেতরে খুব ভয় করছে। আমি যদি বাসায় মরে পড়েও থাকি, মনে হয় না এক সপ্তাহ কেউ জানতে পারবে, আমি মারা গেছি।’

‘আমরা সব কিছু করি সন্তান এবং পরিবারের জন্য। আপনি যদি ১শ টাকা আয় করেন, তার ২০ শতাংশ টাকাও নিজের জন্য ব্যয় করেন না। যদি ২০ শতাংশ নিজের জন্য ব্যয় করেন, তাহলে ৮০ শতাংশ টাকা পরিবারের জন্য ব্যয় হয়।’

করোনাকালে একাকীত্বে ভোগার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারি শুরুর আগ থেকে আমি বাংলাদেশে আছি। একা থাকা যে কী কষ্ট, যারা একা থাকে, তারাই একমাত্র বলতে পারে বা বোঝেন।’

বন্ধুর প্রতারণা শিকার হয়েছেন জানিয়ে আবু মহসিন বলেন, ‘যাদের জন্য বেশি করেছি, প্রত্যেকটা লোকের কাছে আমি প্রতারিত হয়েছি। আমার এক বন্ধু ছিল, নাম কামরুজ্জামান বাবলু। আমি না খেয়ে তাকে খাইয়েছি। সে আমার ২৩-২৫ লাখ টাকা মেরে দিয়েছে।’

কালের আলো/ডিএসকে/এমএম