দাম্পত্য কলহের জেরে নায়িকা শিমুকে হত্যা করে স্বামী, লাশ গুম করে ফরহাদ

প্রকাশিতঃ 3:51 pm | January 18, 2022

শোবিজ ডেস্ক, কালের আলো:

দাম্পত্য কলহের জেরে চিত্রনায়িকা শিমুকে তার স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার।

তিনি বলেছেন, নায়িকা শিমু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার আগেই জড়িতদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। এ ঘটনায় শিমুর স্বামী নোবেল ও তার বাল্যবন্ধু ফরহাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জব্দ করা হয়েছে মরদেহ লুকানোর কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন আলামত।

এর আগে চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর (৩৫) বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধারের পর তার স্বামী সাখাওয়াত আলী নোবেল ও গাড়িচালক ফরহাদকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

মারুফ হোসেন সরদার বলেন, সোমবার সকাল ১০ টায় স্থানীয়ভাবে সংবাদ পেয়ে কেরানীগঞ্জ থানাধীন হযরতপুর ইউপির আলীপুর ব্রিজ থেকে ৩০০ গজ উত্তর পাশে বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি মহিলার (বয়স অনুমান বত্রিশ বৎসর) মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহের সুরতহাল তথ্য প্রস্তুত করে মৃতদেহের পরিচয় শনাক্ত করার জন্য আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয় এবং পোস্টমর্টেমের জন্য মৃতদেহটি মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে মৃত দেহের নাম পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়।

তিনি বলেন, তদন্তকালে জানা যায় যে, মৃতদেহটি চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর। তার বয়স ৪১ এবং তিনি সপরিবারে ঢাকার গ্রিন রোড এলাকায় বসবাস করেন। মৃতদেহের নাম পরিচয় ও ঠিকানা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করার জন্য পুলিশ সুপার ঢাকার নির্দেশনায় কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করে।

পুলিশ সুপার বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ চিত্রনায়িকা শিমুর বাসায় যায় এবং এ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করা শুরু করে। খুনিরা যদিও খুবই পরিকল্পিতভাবে লাশটি কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন হযরতপুরে ফেলে যায় তবে তারা কিছু চিহ্ন রেখে যায়। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করি এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভিকটিম চিত্রনায়িকা শিমুর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বন্ধু এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদকে রাতেই কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়।

মারুফ হোসেন সরদার বলেন, তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের ফলে চিত্রনায়িকা শিমুর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বাল্যবন্ধু এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদের এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া যায়। বিভিন্ন পারিবারিক বিষয়কে কেন্দ্র করে শিমুর সঙ্গে নোবেলের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। এই ঘটনা কেন্দ্র করে তাকে হত্যা করা হয়।

মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, দাম্পত্য কলহের জেরে রোববার আনুমানিক সকাল ৭-৮ টার মধ্যে খুন হন শিমু। শিমুর লাশ গুমের চেষ্টায় যে গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি জব্দ করে থানায় নিয়েছি এবং অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করেছি। তবে কীভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে এ বিষয়টি এখনই বলা যাচ্ছে না। তদন্তের পর বলতে পারব।

এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।

কালের আলো/এসবি/এমএম