চট্টগ্রামের ভোটের মাঠে অস্ত্রের ছড়াছড়িতে তোলপাড়

প্রকাশিতঃ 10:25 am | February 10, 2022

কালের আলো সংবাদদাতা:

ভোটের মাঠে অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি নিয়ে তোলপাড় চলছে চট্টগ্রামে। কারা এই অস্ত্রধারী, এতো অস্ত্রই বা কোথা থেকে এসেছে এই প্রশ্নই এখন সবার মুখে। এ নিয়ে বিব্রত সরকারি দলের নেতারাও। ব্যবহৃত এসব আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়নি এখনও। কোনো অস্ত্রধারীকেও চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তাদের শনাক্ত করতে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।

সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সপ্তম ধাপে ইউপি নির্বাচনের দিন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় কেন্দ্রগুলোর চিত্র ছিল এমনই। এর মধ্যে খাগরিয়া ইউনিয়নে গণিপাড়া স্কুল কেন্দ্রে চলে প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণ। আরও কয়েকটি কেন্দ্রে অনেকের হাতে হাতে দেখা গেছে অস্ত্র। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই গুলি করতে দেখা গেছে তাদের। সেই সাথে লাঠিসোটার ছড়াছড়ি তো ছিলই। দেখে মনে হতে পারে, ভোটকেন্দ্র নয় যেনো যুদ্ধক্ষেত্র।

সাতকানিয়ায় একাধিক কেন্দ্রে অস্ত্রের ঝনঝনানি দেখে বিস্মিত ভোটাররা।

সাতকানিয়ার প্রায় সবকটি কেন্দ্র অতি ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও ভোটের আগে কেনো অস্ত্র উদ্ধারে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এখন।

ভোটের মাঠে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার আর প্রাণঘাতি সংঘাত অশনি সংকেত বলছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা।

চট্রগ্রাম সুজনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী বলেন, তাদের গ্রেফতার করে এই অস্ত্রগুলো যদি উদ্ধার করা না হয়; এগুলো যায়গা দখল, আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে জনপথ অস্থির করে তুলবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চূড়ান্ত অবনতি ঘটবে মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা একেবারেই আশঙ্কাজনক হয়ে যাবে। নির্বাচনের আগে অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রম চালানো না হওয়ার কারনেই এই পরিণতি।

স্থানীয়রা বলছেন, অস্ত্রধারীদের বেশিরভাগ বহিরাগত। বিভিন্ন ইউনিয়নে ভোটকেন্দ্রে এদের জড়ো করার অভিযোগ উঠছে মূলত সরকারি দলের প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থী উভয়ের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বিব্রত দলের নেতারাও।

চট্রগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, কিছু লোকের ব্যক্তিগত স্বার্থের কারনে আমরা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে দিতে পারিনা। আমরা সাংগঠনিকভাবে দৃঢ় পদক্ষেপ নিবো। যে অস্ত্রবাজি করুক, তদন্তের মাধ্যমে দোষি সাব্যস্ত হলে অব্যাহতি দেওয়া হবে। দলীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চট্রগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, সংঘর্ষে যারা লিপ্ত ছিল, যারাই অপরাধকর্মটি করেছে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হবে এবং তাদের গ্রেফতার করা হবে। কে কোন পলিটিক্যাল আদর্শের অনুসারী এখানে এই বিষয়ের ওপর নজর দেওয়ার প্রয়োজন ও দরকার নেই।

তবে সংঘাতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজনকে গ্রেফতার এবং একটি মাত্র অস্ত্র উদ্ধার করতে পেরেছে পুলিশ। এ নিয়েও অসন্তুষ্ট স্থানীয়রা।

কালের আলো/ডিএসবি/এমএম