ই-কমার্সের প্রসারে ন্যাশনাল টাস্কফোর্স

প্রকাশিতঃ 5:37 pm | April 28, 2021

টেক ডেস্ক,কালের আলোঃ

ই-কমার্স খাতের প্রসারে সহায়তা দিতে একটি ন্যাশনাল টাস্কফোর্স গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান।

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) কালের কণ্ঠ ও দেশের অন্যতম বৃহৎ অনলাইন মার্কেট প্লেস দারাজের যৌথ আয়োজনে ‘ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের বিকাশ : ই-কমার্সের ভূমিকা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এসব কথা বলেন।

ভার্চুয়াল বৈঠকে কালের কণ্ঠ সম্পাদক ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক ইমদাদুল হক মিলনসহ এই খাতের সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন। গোলটেবিল আলোচনার সঞ্চালক ছিলেন কালের কণ্ঠ’র বিজনেস এডিটর মাসুদ রুমী।

সালমান এফ রহমান বলেছেন, এ খাতে কর ও লজিস্টিক নিয়ে যেসব সমস্যা রয়েছে তা সমাধানে ন্যাশনাল টাস্কফোর্স গঠন করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবো।

শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা আরো বলেন, সমাজের সব ক্ষেত্রেই এখন ডিজিটাইজেশনের সুযোগ আছে। সামনে ই-কমার্স খাতের মাধ্যমে ব্যবসা ও সব রকম উন্নতি ত্বরান্বিত হবে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে যে নাগরিক সেবা দেওয়া হয় তা অনলাইনের মাধ্যমে করে দেওয়ার জন্য আরো কাজ করা জরুরি। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়বে।

কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আমরা লক্ষ করছি, ই-কমার্স ধীরে ধীরে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়ছে। উন্নত দেশগুলোতে ই-কমার্স আরো বড় ভূমিকা পালন করছে। আমাদের দেশেও গত কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে এটি বেশ বড় পর্যায়ে যাচ্ছে। যেভাবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, তাতে অল্প সময়ের মধ্যেই এই খাত আরো অনেক বড় জায়গায় নিয়ে যেতে পারব। কিন্তু তার পেছনে যে কাজগুলো আমাদের করা দরকার, সেটি হচ্ছে বিদেশি সহযোগিতা। বেশি করে বিদেশি ইনভেস্টরদের আমন্ত্রণ জানাতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা লক্ষ করছি, ই-কমার্সের ভূমিকা শুধু নগরজীবনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এটাকে গ্রাম বা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে হবে।

ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার বলেন, আমরা ই-কমার্স সেক্টরের গ্রোথ দেখেছি মূলত করোনার এই সময়ে। ২০১৪ সাল থেকেই এই সেক্টরের গ্রোথ বাড়া শুরু হয়। তবে করোনার আগে গ্রোথ ছিল ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। কিন্তু করোনাকালে গ্রোথ হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। এই গ্রোথ হওয়ার একটি প্রাথমিক কারণ হচ্ছে আইসিটির ব্যাকবোন প্রস্তুত ছিল।

এটুআইয়ের হেড অব ই-কমার্স রেজওয়ানুল হক জামি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো চেষ্টা করছে ই-কমার্স খাতকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। এই খাতকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্যই ২০১৮ সালে একটি ই-কমার্স পলিসি তৈরি করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে এই পলিসি বাস্তবায়ন করা হয়েছিল। যদিও এটি এখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন। পলিসিটি আপডেট করার জন্য সব রকমের কাজ করা হচ্ছে। ইদানীং টিসিবির পণ্যও কিন্তু ই-কমার্সের মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ই-কমার্সের সেবা গ্রামীণ পর্যায়ে পৌঁছানো না গেলে উন্নতি সম্ভব নয়।

দারাজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোস্তাহিদল হক বলেন, বাংলাদেশে দারাজের যাত্রা সাত বছর। একদম ছোট পরিসরে শুরু করে এখন দেশের সর্বত্র পৌঁছাতে পেরেছি। দেশের ৬৪ জেলায়ই দারাজের নিজস্ব অপারেশন রয়েছে। যেখানে আমরা আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থায় হোম ডেলিভারি করে থাকি। দারাজ ভালো সার্ভিস দিতে পারায় কাস্টমারদের ধরে রাখতে পারছে। কাস্টমারদের আস্থা তৈরির মধ্য দিয়ে ভালো একটি জায়গা করে নিয়েছে।

কালের কণ্ঠের বিজনেস এডিটর মাসুদ রুমী বলেন, করোনার মধ্যে আমরা দেখেছি ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধি এ খাতকে আশাবাদী করে তুলেছে। আমরা দেখেছি যে ই-কমার্সের কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘরে ঘরে পণ্য পৌঁছে দিয়েছেন। প্রথম ঢেউয়ে টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটিতে ই-কমার্স বড় ভূমিকা রেখেছিল। এখন দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রেও ই-কমার্সের দায়িত্বশীল একটি ভূমিকা আমরা দেখছি। ই-কমার্স খাতের প্রবৃদ্ধি টেকসই করতে অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা প্রয়োজন। একইসঙ্গে ভোক্তা স্বার্থ সুরক্ষায়ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উদ্যোগ নিতে হবে।

কালের আলো/আরএস/এমএইচএস

Print Friendly, PDF & Email