পঞ্চগড়ে স্ত্রীকে হত্যার ১০ বছর পর স্বামীর যাবজ্জীবন

প্রকাশিতঃ 4:20 pm | June 02, 2025

পঞ্চগড় প্রতিবেদক, কালের আলো: 

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে সফিকুল ইসলাম (৪৬) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।

সোমবার (২ জুন) দুপুরে পঞ্চগড় আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

তবে মামলার অপর ১০ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। এসময় সব আসামি হাজতে ছিলেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, দণ্ডপ্রাপ্ত সফিকুল ইসলাম পঞ্চগড়ে বোদা উপজেলার কাজলদিঘী তরঙ্গীপাড়া এলাকার হামেদ আলীর ছেলে।

এদিকে আদালত সূত্রে জানা যায়, ঘটনার ১৬/১৭ বছর আগে সফিকুল ইসলামের সঙ্গে একই এলাকার আব্দুল মান্নানের মেয়ে মমতাজ বেগমের বিয়ে হয়।

বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু স্বামী সফিকুল প্রতিবেশী এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ।

বিষয়টি নিয়ে একাধিক সালিশ হলেও মমতাজের ওপর চলতে থাকে নির্যাতন। কারণে অকারণে তাকে মারধর করতেন স্বামী সফিকুল। তাকে তার পরিবারের লোকজনও সহযোগিতা করতেন। ২০১৫ সালের ৮ জুলাই রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় মমতাজকে হত্যার হুমকি দেন তার স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। ৯ জুলাই ভোরে নিজ ঘরে মমতাজের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় এবং বোদা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়।

১৪ জুলাই ১১ জনকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা করে নিহত গৃহবধূ মমতাজের বাবা আব্দুল মান্নান। ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপর দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া, সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে প্রায় ১০ বছর বিচারকাজ চলার পর সোমবার আদালত এ রায় দেন।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় আদালতের অতিরিক্ত পিপি ইয়াসিনুল হক দুলাল বলেন, ভিকটিমের মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা বলা হয়েছে। আমরা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। তাই আদালত ১ নম্বর আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। একই সময় মামলার অন্য আসামিদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

কালের আলো/এমডিএইচ