ম্যাজিস্ট্রেটের ভয়াবহ তথ্যের সাংঘাতিক জবাব দিলেন ওসি
প্রকাশিতঃ 4:37 pm | April 16, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
কয়েকদিন আগে ফেনীর পুলিশ-প্রশাসন নিয়ে ভয়াবহ কিছু তথ্য তুলে ধরে ফেসবুকে লিখেছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা। তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন, ‘ফেনীর পুরো প্রশাসন হয় উদাসীন, নয় অপরাধের সাথে জড়িত, সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত, অন্যায়ের সাথে, দুর্নীতির সাথে জড়িত।’
সেই লেখায় ছিনতাই, জমি দখল, যৌনপল্লীসহ বিভিন্ন বিষয়ে পুলিশের নেতিবাচক ভূমিকা তুলে ধরেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানার ওই লেখার জবাব দিয়েছেন সোনাগাজী থানা ও ফুলগাজী থানার সাবেক ওসি হুমায়ুন কবির।
ওসি হুমায়ুন কবির জবাব দিয়েছেন ফেসবুকেই। এতে তিনি ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানাকে ‘কাপুরুষ’, ‘ভীরু’, ‘সংকীর্ণমনা’, ‘শৃগাল’, ‘বালক’ হিসেবে উল্লেখ করে বার বার তার ওপর থু থু নিক্ষেপ করতে চেয়েছেন।
ওসি হুমায়ুন কবিরের ফেসবুক পোস্ট কেন্দ্র করে ফেনীর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে খবরও প্রকিাশিত হয়েছে।তিনি লিখেছেন-
‘‘নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানাকে বলছি: ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের দারুণ অপচেষ্টা আপনার! নুসরাত হত্যা মামলায় পূর্বাপর ওসি সোনাগাজীর গাফেলতি পরিচ্ছন্ন। আমিও চাই পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তির জন্য হলেও তাকে আইনের আওতায় এনে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। এমন পুলিশ অফিসারের জন্যই পুলিশের কলঙ্ক বইতে হয়। কিন্তু আপনি ফেনী জেলা পুলিশকে নিয়ে যে পাশা খেলতে শুরু করেছেন, তাতে রীতিমত স্তব্ধ আমি! আপনিই তো ফেনী জেলা পুলিশকে নিয়ে লিখবেন। কারণ :
১. ফেনী জেলা পুলিশ অন্তত হাফ ডজন বার আপনার একটি জীবনকে রক্ষা করেছেন। এটা করা তাদের উচিত হয়নি তাই তো?
২. ফুলগাজীর ওসি, ইউএনও কে না জানিয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে চালিয়েছিলেন মাদক উদ্ধার অভিযান। সেখানে হামলার শিকার হলে আপনাকে বাঁচাতে গিয়ে একজন ব্যাটালিয়ন আনসারের প্রাণ গেল। আপনি জান হাতে নিয়ে কাপুরুষের মত পালিয়ে এলেন। আপনার সোর্সকে আটকে রেখে দিল। আজও জানেন না সে কোথায় আছে?
নিজের প্রাণ দিয়ে আপনার মত ভীরুকে বাঁচিয়ে মোটেও ঠিক করেননি ওই বীর ব্যাটালিয়ন সদস্য। সে সিংহের মত লড়েই মরেছিল আর আপনি শৃগালের ন্যায় পালিয়েছিলেন। ধিক্কার জানাই আপনাকে। থু-থু-থু আপনার মত কাপুরুষ ম্যাজিস্ট্রেটকে।
৩. ফেনী শহরের রামপুর একটি গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক এলাকা। কোন প্রকার নোটিশ ছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় এ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে যেদিন বিশ্ব ম্যারাথন দৌড়বিদ মানব হিসেবে গ্রিনিচ বুকে নাম লিখিয়েছিলেন সেদিন সেই আপনাকে বাঁচিয়েছিল হে বালক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট? সেটাও তো মোটেও ঠিক করেনি পুলিশ।
৪. ফেনী শহরের গুরুত্বপূর্ণ ও প্রসিদ্ধ একটি মার্কেটে ভারতীয় কাপড় ধরার নামে বার বার একই দোকানে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে অভিযান চালানোর কারণে ওই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা আপনাকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে যখন আলুভর্তা বানাচ্ছিল, তখন কে বাঁচিয়েছিল?
এভাবে আপনার প্রাণ বাঁচিয়েছিল এই পুলিশ। তাই তো আপনি আজ আমেরিকায়। কিন্তু যার প্রাণ দিয়ে আপনার এ ভীরু প্রাণটি বাঁচিয়ে রেখেছিল, একটিবারের জন্যও কি আপনি তার পরিবারের খবর নিয়েছিলেন? এতটা ভীরু, কাপুরুষ আর সংকীর্ণমনা আপনি। আমার ধিক্কার আপনায় ! থু-থু-থু জানাই ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের এ অপচেষ্টাকে।
আপনার মত সংকীর্ণমনা উদ্ভট চরিত্রের কুৎসিৎমনা শিক্ষিত ভীরু কাপুরুষের জীবন না বাঁচিয়ে নুসরাতের মত মেধাবী ছাত্রীটিকে বাঁচানোই উচিত ছিল পুলিশের। যা ঐ থানার ওসি করেনি। তাই, তার জন্য বড় কোন শাস্তিও অপেক্ষা করছে।’’
কালের আলো/এমএইচএ