ইউরোপের কথা বলে লিবিয়ায় পাঠিয়ে মুক্তিপণ নিতেন তিনি
প্রকাশিতঃ 8:25 pm | July 01, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
ইউরোপের কথা বলে লিবিয়ায় পাঠিয়ে সেখানে আটকে রেখে চালাতেন অমানবিক নির্যাতন। আর সেই নির্যাতনের ছবি-ভিডিও ধারণ করে দেশের স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে আদায় করতেন লাখ লাখ টাকা মুক্তিপণ।
গত ২৮ জুন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের প্রধান মোহাম্মদ মাহাবুব পাঠানকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। সোমবার (১ জুলাই) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সংস্থাটি।
সিআইডি জানায়, মাহাবুব পাঠান দীর্ঘদিন ধরে সপরিবারে লিবিয়ায় অবস্থান করে লিবিয়ার বেনগাজীর বাংলাদেশি কমিউনিটিকে নেতৃত্ব প্রদানের আড়ালে মানবপাচার চক্র পরিচালনা করছিলেন। চক্রটি বাংলাদেশিদের উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে লিবিয়া নিয়ে গিয়ে আটক করত। এরপর তাদের আটক রেখে শারীরিক নির্যাতন করে নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণ আদায় করত। মুক্তিপণ আদায়ের পর বিপজ্জনক নৌযাত্রার মাধ্যমে ইউরোপে পাঠানোর চেষ্টা করত।
২০২১ সালের ১৭ মে ভূমধ্যসাগরে তিউনিসিয়া উপকূলে মাহাবুব পাঠানের চক্রের শিকার ৬৪ বাংলাদেশিসহ ১০৪ জন অভিবাসী তিন সপ্তাহ ধরে ভাসতে থাকা অবস্থায় উদ্ধার হন।
সিআইডির তদন্তে জানা যায়, চক্রটি মিলন ব্যাপারী ও অন্যান্য ভিকটিমদেরকে এমিরেটস বিমানে করে প্রথমে দুবাই নিয়ে যায়। এরপর দুবাই হতে বিমানযোগে মিশর হয়ে লিবিয়ার বেনগাজী নিয়ে যায়। লিবিয়ার বেনগাজীতে মূলহোতা মাহাবুব পাঠান ও তার সহযোগীরা মাহাবুব পাঠানের ক্যাম্পে তাদেরকে আটক রাখে এবং শারীরিক নির্যাতন করে। পরে সেই নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে ভিকটিমদের পরিবারের নিকট পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
২০২১ সালের মে মাসে মিলনের মা বিউটি আক্তার ও চাচী মনি বেগম আসামিদের দেওয়া ব্যাংক প্রায় ৩ লাখ এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত চক্রের সদস্য হেনা বেগমকে নগদ ৪ লাখ টাকা প্রদান করে। এরপর আসামি মাহাবুব পাঠান ও তার সহযোগীরা সুকৌশলে বাদীসহ অন্যান্য ভিকটিমদের ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে দ্বিতীয় পর্যায়ে লিবিয়ার ত্রিপলিতে এই চক্রের সক্রিয় সদস্য মনিরের ক্যাম্পে পাঠায়, সেখানে বাদী ও ভিকটিমদের নিয়ে আটক করে দ্বিতীয় দফায় শারীরিক নির্যাতন করে আরও ৪ লাখ টাকা আদায় করে।
টাকা দেওয়ার ১৫ দিন পর মিলনকে ইতালির উদ্দেশ্যে ভূমধ্যসাগরে হাওয়ায় (বাতাসে) ভাসা একটি প্লাস্টিক নৌকায় আরও কয়েকজনের সঙ্গে তুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে মিলন ইতালিতে রয়েছেন।
কালের আলো/এমএএইচ/ইউএইচ