দুবাইয়ে ৫৩২ বাংলাদেশির সম্পত্তির দিকে নজর দুদকের

প্রকাশিতঃ 2:39 pm | May 17, 2024

কালের আলো রিপোর্ট:

সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাই শহরে বাংলাদেশিদের সম্পদের তথ্য দিয়েছে ফ্রান্সভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরি (ইউট্যাক্স)। তারা দাবি করেছে, ২০২২ সালে দুবাইয়ের আবাসন বাজারে ৫৩২ বাংলাদেশি মোট ৩৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলার বিনিয়োগ করেছে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ হাজার ৪১৫ কোটি টাকার (১ ডলার সমান ১১৭ টাকা) বেশি।

‘পাচারের খবরে দুদকের নজর রয়েছে’

দুবাইয়ে ৫৩২ বাংলাদেশির সম্পত্তির বিষয়ে ইউট্যাক্সের প্রতিবেদন নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিষয়টি নতুন। তথ্যগুলো সম্পর্কে আরো বিস্তারিত খোঁজখবর নিতে হবে। এরপর দুদকের উদ্যোগ বা করণীয় সম্পর্কে বলা যাবে।’

এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দুদক তার শিডিউলভুক্ত অপরাধের অনুসন্ধান ও তদন্ত করবে। বিদেশে অর্থপাচারের যেসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, কমিশনের সেদিকে নজর রয়েছে। কমিশন অনুমোদন দিলে শিগগিরই এ বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য টিম গঠন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদেশে অর্থপাচারের অনুসন্ধান কাজ বেশ জটিল ও সময়সাপেক্ষ। তবে সব সংস্থার সমন্বয় থাকলে তা দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব। দুদক বিদেশ থেকে পাচারের টাকা ফেরত আনার নজির এর আগেই স্থাপন করেছে।

‘তছরুপের সুযোগ থাকলে পাচার হবেই’

এ প্রসঙ্গে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনেকেই টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দুটি বিষয় রয়েছে—একটি গ্রুপ দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ পাচার করে দিচ্ছে। আরেকটি গ্রুপ বিদেশে যাওয়ার পরে ফিরে আসছে না। দুর্নীতি বন্ধ না হলে দেশে থাকার মতো পরিবেশ তৈরি হবে না। এ কারণে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিদেশে পাড়ি জমাবে। দেশের প্রতি আগ্রহ তৈরি করতে হলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এভাবে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ তছরুপ করার সুযোগ থাকলে দুবাইসহ অনেক দেশেই অর্থ চলে যাবে।

সবাই মিলে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে : সাবেক গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘টাকা পাচার, হুন্ডি ইত্যাদি বন্ধ না করে বারবার ডলারের রেট কমিয়ে-বাড়িয়ে বাজার স্থিতিশীল করা যাবে না। এখানে ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট আছে, অ্যান্টি করাপশন ইউনিট আছে, কাস্টমস আছে। সবাই মিলে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। এসব কাজে দেরি করলে চলে না।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক এ পর্যন্ত ২০টি প্রতিষ্ঠানের ২৪টি ভেঞ্চারে মোট ৬৯.৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের অনুমতি দিয়েছে। এর মধ্যে ৪৫.৪৫ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স হিসেবে গেছে। এ ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

কালের আলো/এমএস/এমডিআর