‘ফুলটাইম’ মেয়র ইকরামুল হক টিটু’র জয়ের পাল্লা ভারী

প্রকাশিতঃ 10:33 pm | March 08, 2024

রাইসুল ইসলাম খান অনিক, কালের আলো:

সাধারণ নাগরিকের ভালোবাসার মায়াবি মোহনায় কল্যাণের রাজনীতির সুর গেঁথে দিয়েছেন প্রাণে প্রাণে। তাঁর কথায় দলীয় নেতাকর্মীরা উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করে জীবন ঝুঁকি নিয়ে। নগরীর বাসিন্দাদের জন্য নিজের প্রতিদিনের প্রতিটি ক্ষণকে বিলিয়ে দেওয়াই যেন টেবিল ঘড়ি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ইকরামুল হক টিটুর পণ! তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় দলীয় নেতা-কর্মী তো বটেই ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজসহ বিশাল সমর্থক গোষ্ঠীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বত:স্ফূর্ততা প্রমাণ করেছে ভোটের মাঠে তাঁর চালকের আসন। আজ শনিবার (০৯ মার্চ) দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিতব্য ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নগরবাসীর ‘প্রাণভোমরা’কে মেয়র পদে আবারো বেছে নিতে উন্মুখ হয়ে আছেন ময়মনসিংহ সিটির ভোটাররা। আলোচনার টেবিলে ও নানা হিসাব-নিকাশে মেয়র হিসেবে এক নম্বরে ঠাঁই করে নিয়েছেন ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের এ সভাপতি। সার্বক্ষণিক নগরবাসীর সেবায় নিবেদিত ‘ফুলটাইম’ মেয়র ইকরামুল হক টিটুকেই যারপরেনাই পছন্দ নগরবাসীর। টিটু পুনরায় মেয়র পদে নির্বাচিত হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সম্পৃক্ত থেকে ‘স্মার্ট ময়মনসিংহ নগরী’ গড়ার দৃঢ় অঙ্গীকার করেছেন।

জানা যায়, মসিক নির্বাচনে মেয়র পদে ইকরামুল হক টিটুর বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব এহতেশামূল আলম ও ‘হাতি’ প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কী টজু। আলম ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টজু ময়মনসিংহ শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তবে তারা দু’জনই ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনের সংসদ সদস্য মোহিত উর রহমান শান্ত’র পক্ষের হওয়ায় এবং কেউ কারে নাহি ছাড়ে এমন নীতির কারণে তাদের ভোট ভাগাভাগি হবে। এক্ষেত্রেও বাড়তি সুবিধা পাবেন টিটু। কারণ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সমর্থনের পাশাপাশি তাঁর নিজস্ব ভোট ব্যাংক ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একাট্টা অবস্থান রয়েছে। এসবের পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি ও নগরবাসীর পালস বুঝে কাজ করার মানসিকতা ভোটের মাঠে তাঁর জয়ের পাল্লাকে ভারী করবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তাঁর মুখে বিজয়ের হাসি দেখতে আশায় বুক বেঁধেছেন শান্তি আর উন্নয়নের পক্ষের মানুষ।

উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ ফ্যাক্টর ভোটের মাঠে
সদ্য বিদায়ী মেয়র ইকরামুল হক টিটু ময়মনসিংহ নগরীর উন্নয়নের রূপকার হিসেবে পরিচিত। মেয়র নির্বাচিত হয়ে তিনি গত ৫ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন করেন। প্রায় ২ বছর আগে ময়মনসিংহ নগরীর উন্নয়নের জন্য সরকার ১ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। প্রাণঘাতী করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধকল কাটিয়ে নানামুখী কঠিন চ্যালেঞ্জ জয় করে প্রায় ৩২৫ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করেন টিটু। এর মধ্যে ১০৫ কিলোমিটার আরসিসি, বিসি ও সিসি সড়ক, ৫০ কিলোমিটার ড্রেন ও ৩ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছেন। চলমান রেখেছেন ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার ৩৪৮ কিলোমিটার আরসিসি, বিসি ও সিসি সড়ক, ২৪২ কিলোমিটার ড্রেন ও ১০ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ।

সূত্র মতে, প্রকল্পগুলো পুরোদমে বাস্তবায়িত হলে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার আমূল পরিবর্তন ঘটবে। স্মার্ট ময়মনসিংহ নগরী বিনির্মাণে প্রকল্পগুলো মাইলফলক হয়ে থাকবে। বিশেষ করে নগরীর নতুন যুক্ত ২২ থেকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকাসমূহে প্রশস্ত সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই পাল্টে দিয়েছে নাগরিকদের জীবনমান। দখলমুক্ত করে সচল করা হয়েছে ৫টি খালের পানি প্রবাহ।

জানা যায়, নগরীর বিভিন্ন এলাকা আলোকিত করতে ১৭১ কিলোমিটার সড়কে স্থাপন করা হয়েছে জিআই পোলসহ ৬৮৯০টি দৃষ্টিনন্দন সড়ক বাতি। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সোলার প্যানেলসহ স্থাপন করা হয়েছে ৩৫৮টি সড়ক বাতি। নয়নাভিরাম জয়নুল উদ্যানে লাগানো হয়েছে ২৭০টি গার্ডেন লাইট। নগরীর আরো কয়েকটি এলাকা আলোকিত করার জন্য প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। নগরবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য বাঘমারায় নগর মাতৃসদন ও গুলকীবাড়িতে নির্মাণ করা হচ্ছে নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র। নাগরিকদের সেবা দিতে চলমান রয়েছে একটি নগর মাতৃসদন ও ৩টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র। এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিশালতা ভোটের মাঠে টিটুর জন্য প্লাস পয়েন্ট হবে। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ তাকে ভোট দিয়ে আবারো জয়যুক্ত করে পুনরায় নগর ভবনের চাবি তাঁর হাতে তুলে দেবেন বলে আশাবাদী সবাই।

কালের আলো/আরআই/এমকে