পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস : সম্ভাবনা ও বাস্তবতা
প্রকাশিতঃ 9:30 am | June 27, 2020

প্রফেসর ড. মোহা. হাছানাত আলী :
কোভিড-১৯ এর প্রভাবে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এক চরম সংকটকাল অতিক্রম করছে। করোনা মহামারি থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখতে সরকারি ঘোষণা অনুসারে গত ১৮ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতি এখনও দৃশ্যমান না হওয়ায় ক্লাসরুম তালাবদ্ধ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেবার মতো পরিস্থিতি এখনও সৃষ্টি হয়নি। বরং করোনা পরিস্থিতি দিনদিন আরও নাজুক হচ্ছে। সরকারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার মতো ঝুঁকি নিতে চায় না বলেই নতুন করে আগামী ৮ আগস্ট পর্যন্ত ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আর কতদিন অপেক্ষা করতে হবে তা ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পযর্ন্ত বলা মুশকিল। তাই ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার মতো পরিস্থিতি দেশে কবে সৃষ্টি হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকার জীবন ও জীবিকা একসাথে চালানোর নীতি অনুসরণ করলেও তার ফলাফল কিন্ত মোটেই সুখকর হয়নি। সামনে কোরবানির ঈদ। সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুরহাট চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা নিয়ে ইতোমধ্যে দেশের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। নিকট অতীত কিন্তু মোটেই সুখকর নয়। আমরা শপিংমলে, হাট-বাজারে, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধির ধারধারিনি। এখন পশুরহাটে স্বাস্থ্যবিধি মানবো তার নিশ্চয়তা কোথায়। করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার দেশের অবনতিশীল করোনা পরিস্থিতি মাথায় রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলার যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। তবে কেউ কেউ যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কথা ভাবছেন না তা কিন্তু নয়। তারা যুক্তি হিসেবে উন্নত বিশ্বের অনলাইন শিক্ষার দৃষ্টান্তকে উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করছেন। তাদেরক বিনয়ের সাথে স্মরণ করে দিতে চাই যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন চোখ ধাঁধানো, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন আকাশছোঁয়া, শিক্ষার্থীদের আর্থিক সামর্থ্য প্রশ্নাতীত। আর আমাদের? ভৌত অবকাঠামো সেকেলে, প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যয়বহুল, অধিকাংশ শিক্ষার্থীর আর্থিক সক্ষমতা অপ্রতুল। আমাদের নীতিনির্ধারকরা মাঝে মাঝে দেশকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার সাথে তুলনা করে আত্মতুষ্টিতে ভোগেন। কিন্তু সেটা শুধু যে কথার কথা তা তো করোনাকাল আমাদেরক চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
ইতোমধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে নিজেদের মতো করে অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা গ্রহণ করছে। এক্ষেত্রে ইউজিসি বা সরকারের কোনো সুনিদিষ্ট নীতিমালা ও কার্যকরি তদারকি না থাকায় শিক্ষার গুণগত মান কতটা নিশ্চিত করা হচ্ছে সে প্রশ্ন আজ বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। নীতিমালার অভাবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের পছন্দমতো পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ করছে। এসব পদ্ধতি শিক্ষার গুণগত মান কতটা নিশ্চিত করছে তা ইউজিসির ভেবে দেখার সময় এসে গেছে। তা না হলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। এমনিতেই দেশের উচ্চশিক্ষার গুণগত মানের সূচক নিম্নমুখী।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চাবি এখন করোনার হাতে। আগেই বলেছি যে, দেশের যা অবস্থ্য তা কোনোভাবেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রশ্নে মোটেই অনুকূল নয়। এখন প্রশ্ন হলো কতদিন তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাখা যাবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ইউজিসি অনলাইনে ক্লাস নেয়ার যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কতটা কার্যকরী বা সফল হবে সেটা নির্ভর করছে অনেকগুলো বিষয়ের ওপর।
বর্তমানে আমাদের চারপাশে এক অদ্ভূত অনিশ্চয়তা ভর করে বসেছে। খাদ্যের অনিশ্চয়তা, চাকরি থাকা না থাকার অনিশ্চয়তা, সন্তানের পড়ালেখার অনিশ্চিয়তা, চিকিৎসার অনিশ্চিয়তা, করোনায় মৃত্যু হলে দাফন কাফনের অনিশ্চয়তা। বিজনেস ইনসাইডারের তথ্যানুযায়ী বিশ্বের প্রায় ১৮৮টি দেশের শিক্ষার্থীরা করোনাকালে সরাসরি ক্ষতির সস্মুখীন হয়েছে। বাধাগ্রস্ত হয়েছে তাদের শিক্ষাজীবন। দেশে দেশে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ। শিক্ষার্থীরা ঘরবন্দী। অবশ্য কিছুকিছু দেশ পরিস্থিতি ভেদে স্কুল-কলেজ খুলে দিতে শুরু করেছে। তবে তা খুবই সীমিত আকারে।
বাংলাদেশে ১৮ মার্চ থেকে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। কবে আবার শিক্ষা কার্যক্রমকে স্বাভাবিক করা যাবে সেটাও অনিশ্চিত। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিকস্তরের শিক্ষা ক্ষেত্রে সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে। মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্যও একইভাবে চালু করা হয়েছে টিভিতে সীমিত আকারে পাঠদান। যদিও ক্লাসের গুণগতমান ও তার কার্যকারিতা নিয়ে দেশের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ও টিভিতে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠদান চালু করেছে। যদিও প্রান্তিক জনপদের প্রতিটি ঘরে টিভি না থাকার বিষযটি এই উদ্যোগকে ব্যাহত করছে। অন্যের বাসায় গিয়ে ক্লাস করবে সেটাও সম্ভব নয়। আবার যাদের টিভি আছে তাদের সমস্যা ভিন্ন। বিদ্যুৎবিভ্রাটের কারণে শিশুদের মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটছে।
আগেই বলেছি বেঁচে থাকার তাগিদে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে সীমিত আকারে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও দেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ উদ্দ্যোগ এখনও সেভাবে চোখে পড়েনি। তবে দু-একটি বিশ্ববিদ্যালয় যে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম সীমিত আকারে শুরু করেনি তা কিন্তু নয়। তবে সে সংখ্যা খুবই সীমিত। কিছু শিক্ষক আবার স্ব-উদ্যোগী হয়ে জুম অ্যাপসের মাধ্যমে ক্লাস নিয়ে তার সচিত্র বিবরণ ফেসবুকে পোস্ট করে অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। যা থেকে জানা যায় যে, ৩৫-৪০% শিক্ষার্থী পূর্বে ঘোষণা দেয়া সত্ত্বেও ক্লাসে অনুপস্থিত থাকছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো কেন?
সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরাই তার কারণ নির্ণয় করে বলছেন যে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কেউ কেউ অসচ্ছলতার কারণে এমবি/নেট কিনতে না পারা বা কারো কারো তা আবার ক্রয়ের সামর্থ্য থাকলেও ইন্টারনেটের গতি অতিমাত্রায় স্লো হওয়ার কারণে তারা ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। আবার আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে অ্যান্ড্রয়েড ফোন না থাকাটাও অন্যতম কারণ হিসেবে আলোচনায় এসেছে। এ সংখ্যাটাও নেহায়েত কম নয়। এদিকে সরকার হঠাৎ করে বাজেটে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর অতিরিক্ত শুল্কহার আরোপ করায় অনলাইনে ক্লাসগ্রহণের ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। যা এই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে।
তা হলে এখন আমাদের করণীয় কি? কতদিনই বা আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা যাবে? কীভাবে এক্ষতি পুষিয়ে নেয়া হবে? এমন হাজারও কিন্তুর সামনে দাঁড়িয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) ইউজিসি দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সাথে এক ভার্চুয়াল সভায় মিলিত হয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা নিঃসন্দেহে সময়োচিত।
তবে দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইনে ক্লাসগ্রহণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে কতটা কার্যকরী হবে তা হয়তো সময়ই বলে দেবে। তবে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা কীভাবে কার্যকরী করা যায় তা এখন সুচারুভাবে নির্ধারণ করাই হবে যুক্তিযুক্ত।
আমাদের মতো দেশে অনলাইনে ক্লাসগ্রহণ প্রক্রিয়া যে পুরোপুরি সফল হবে না তা ধরেই নেয়া যায়। কারণ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী হয় মধ্যবিত্ত নয় তো নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। যাদের অধিকাংশেরই বাস গ্রামে। করোনা দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের আয়ের ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তাদের আয় কমলেও ব্যয় একই রয়েছে। গ্রামে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং তাদের পক্ষে অতিমূল্যে এমবি/নেট ক্রয় করে নিয়মিত ক্লাসে অংশগ্রহণ বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনায় সম্ভবপর হবে না।
অনলাইনে ক্লাসের ক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎব্যবস্থা অপরিহার্য। যা আমাদের দেশে অনুপস্থিত। এদিকে করোনাকালে ভৌতিক বিদ্যুৎ বিল জনমানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। পল্লীবিদ্যুতের অবস্থা তো আরও শোচনীয়। তবে এত কিছুর পরও স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করে আমাদের একদিন না একদিন ক্লাসরুমে ফিরতেই হবে।
দেশে করোনা আক্রান্ত মানুষ ও মৃত্যুর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। অপ্রতুল চিকিৎসাসেবা দেশের গোটা স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে চরম হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। স্বাস্থ্যবিভাগের সংস্কার এখন সময়ের দাবি। এর মধ্যে আবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে স্বাস্থ্যবিভাগের দুর্নীতির চিত্র। স্বাস্থ্যবিভাগের ১৪ জন ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
আজ কিন্তু বেঁচে থাকার জন্য ঘরে থাকাটা খুবই জরুরি। করোনা থেকে মুক্ত থাকার জন্য সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করাটা বিলাসিতা নয় অবশ্যপালনীয় কাজ। এখনও করোনা ভ্যাকসিন কবে তা পাওয়া যাবে তাও নিশ্চিত নয়। এমন এক জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গোটাবিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থা। বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও নাজুক। ইচ্ছে থাকলেও ভৌত ও প্রযুক্তিগত অবকাঠামোর অপ্রতুলতার কারণে হয়তো অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষার সুফল পাওয়া এখনই সম্ভবপর হবে না।
তবে শুরুটা হতে হবে বিজ্ঞানসম্মত ও বাস্তবভিত্তিক। তাড়াহুড়ো করার প্রয়োজন নেই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের আর্থিক, প্রযুক্তি ও অবকাঠামোগত সক্ষমতা ও অক্ষমতার বিষয় চুলচেরা বিশ্লেষণ করে এগুতে হবে। বিজ্ঞান, বাণিজ্য, চিকিৎসা ও প্রকৌশল শিক্ষার অধিকাংশ বিষয়ে ব্যবহারিক ক্লাস রয়েছে। সেসব কিন্ত অনলাইনে সম্ভবপর হবে না। এসব প্রশ্নের সমাধান কী হবে তাও নির্ধারণ করতে হবে যুক্তিসঙ্গতভাবে।
এমন এক জটিল পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় কী সেটা সুচারুভাবে নির্ধারণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মোদ্দাকথায় ইউজিসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইন ক্লাসে যেতে হবে। তবে সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করে শুরু করা গেলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় তা করোনাকালের আশীর্বাদ বলেই বিবেচিত হবে।
১. প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের প্রযুক্তি ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন করে অনলাইন ক্লাসের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। যাতে করে অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা গ্রহণ করা সংশ্লিষ্ট সবার কাছে সহজবোধ্য হয়। এক্ষেত্রে প্রয়োজন মতো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে, যাতে প্রক্রিয়াটি টেকসই হয়।
২. অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের বিনা পয়সায় ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে এ-সংক্রান্ত চুক্তি সম্পাদন করতে পারে। যারা একেবারেই অষচ্ছল তাদের প্রয়োজনমতে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল সেট সরবরাহ করতে হবে।
৩. সংসদের বাজেট অধিবেশন চলমান। ইন্টারনেট এখন আর কোনো বিলাসী সেবা নয়। অতি প্রয়োজনীয় সেবা। তাই ইন্টারনেটের ওপর থেকে প্রস্তাবিত অতিরিক্ত শুল্কহার প্রত্যাহার করে নেয়া যুক্তিযুক্ত হবে।
৪. সংসদের চলমান বাজেট অধিবেশনে দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তিগত ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য চাহিদামতো অর্থবরাদ্দের ব্যবস্থা করে অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থাকে টেকসই প্রযুক্তি হিসেবে গড়ে তোলার ব্যবস্থা করাটা সময়ের দাবি।
৫. সহজশর্তে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের মধ্যে সরকারিভাবে উৎপাদিত ‘দোয়েল’ ল্যাপটপ বিতরণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।
আমাদের দেশে শিক্ষিতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে সঠিক কিন্তু শিক্ষারগুণগত মান হয়েছে নিম্নমুখী। তাই শটকার্ট কোনো পদ্ধতি অবলম্বন না করে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাটাই হবে যুক্তিযুক্ত। আবেগ নয়, তথ্য-উপাত্ত ও বাস্তবতার নিরিখে আমাদের এ যাত্রায় অগ্রসর হতে হবে। নিতে হবে বাস্তবায়নযোগ্য ও বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত।
দেশের বাস্তব আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইনে ক্লাসগ্রহণের একটি কার্যকরী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। তাড়াহুড়ো করার কোনোই দরকার নেই। জাতিও এমনটাই আশা করে।
লেখক : শিক্ষক, আইবিএ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।