দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রশ্ন, যুবলীগ নেতা রেজার বিরুদ্ধে আর কত ‘ষড়যন্ত্র’?

প্রকাশিতঃ 3:17 am | May 26, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলে দলের ঘোর দু:সময়ে ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ছিলেন কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য। তারেক-নিজামী ও তাদের দোসরদের রক্তচক্ষু, হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে বেলকুচিতে বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনার পক্ষে অমিত দৃঢ়তা প্রদর্শন করে আলোচিত হয়েছিলে।

২০০৩ থেকে ২০০৪ সময়ের গতিধারায় বেলকুচি উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জোট সরকারকে হটাতে ছিল তাঁর আপোসহীন ভূমিকা। ওয়ান ইলেভেনে ফখরুদ্দিনের শাসনামলে শেখ হাসিনা মুক্তি আন্দোলনেও ছিলেন মিছিলের অগ্রভাগে।

২০১০ এ এসে স্বীয় যোগ্যতায় সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও দুই বছর আগে থেকে আহবায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেলকুচি উপজেলা যুবলীগকে। কিন্তু নিজ দলের শাসনামলেও মহল বিশেষের কারসাজিতে তাঁর ভাগ্যে কেবলই জুটেছে ‘তিরস্কার’!

স্থানীয় দলীয় প্রভাবশালী এক নেতার ‘বিরাগভাজন’ হওয়ায় বারবার ষড়যন্ত্রের মুখে পড়েছেন। এতে করে ক্ষোভ দানা বাঁধছে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির আওয়ামী লীগ যখন রাষ্ট্রক্ষমতায় তখনো বিরোধী দলের সময়কার মতোই কারাগারই যেন হয়ে উঠেছে তাঁর ‘ঠিকানা।’

ফলে দলীয় ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের একটিই প্রশ্ন আর কবে ন্যায় বিচার পাবেন স্থানীয় উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা? আর কতদিন নষ্ট রাজনীতির ‘বলি’ হতে হবে তাকে?

স্থানীয় উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক আহমেদ ও কলেজ ছাত্রলীগ নেতা পাপ্পু সাহা কালের আলোকে অভিযোগ করে বলেন, আপাদমস্তক আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান সাজ্জাদুল হক রেজা।

গোটা এলাকায় তাঁর পরিচিতি রয়েছে ত্যাগী ও পরিশ্রমী মুজিব আদর্শের সৈনিক হিসেবেই। হাজার হাজার অনুসারী রয়েছে তাঁর।

রাজপথে এরাই বিএনপি-জামায়াত জোটকে প্রতিহত করে। নির্বাচন বিরোধী ষড়যন্ত্র নসাৎ করে দেয়। দলের আদর্শ আর নেতা-কর্মীদের আপদে-বিপদে তিনিই এগিয়ে আসেন।

ফলে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের কাছে তাঁর প্রশ্নাতীত জনপ্রিয়তার কারণেই এক শ্রেণির নেতা আর প্রশাসনের গুটিকয়েক কর্মকর্তাদের ‘গাত্রদাহ’র কারণ হয়ে উঠেছেন। ফলে তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র থেমে নেই।

কিন্তু সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেই সাজ্জাদুল হক রেজা এগিয়ে যাবেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের পুরো সমর্থন রয়েছে তাঁর অনুকূলে।’

স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজার সহোদর ভাই নুরুল ইসলাম সাজেদুল সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

কিন্তু তাঁর জনপ্রতিনিধি হওয়ার বিষয়টি ভালোভাবে নিতে পারেননি নিজ দলীয় স্থানীয় এক প্রভাবশালী রাজনীতিক। তাঁর কুটকৌশলের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না তৃণমূলের রাজনীতিতে জনপ্রিয় এ মুখ।

জানা যায়, স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি এখানে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত। এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস।

আরেকটি বলয়ের নেতৃত্ব দেন সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মোমিন মন্ডল। উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মীর সিরাজুল ইসলামও আরেকটি পক্ষের নিয়ন্ত্রণ করেন।

কিন্তু সাজ্জাদুল হক রেজা সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ায় মনোনয়ন বঞ্চিত প্রভাবশালী ওই নেতা তাঁর প্রতি ভীষণ অসন্তুষ্ট।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বর্তমান এ সংসদ সদস্য এলাকায় মনোনয়ন নিয়ে আসার পথে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়।

ওই সময় স্থানীয় সায়দাবাদে বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সাজ্জাদুল হক রেজার নেতৃত্বে প্রায় ৫ হাজার মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার মাধ্যমে তাকে বরণ করে নেওয়ায় ঘটনাটিও ছিল ‘টক অব দ্যা ডিস্ট্রিক্ট। সেই সময়ই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেছিলেন ‘একদা’ প্রভাবশালী সেই নেতা।’

কালের আলো/এসটি/এমএইচ