টানা বৃষ্টির পর জমে উঠেছে কাঁচাবাজার, দামে তেজ

প্রকাশিতঃ 11:06 am | July 11, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

টানা কয়েকদিনের বর্ষণের পর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জমে উঠেছে কাঁচাবাজার। তবে ক্রেতাদের ভিড় বাড়লেও মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাজারে দেখা দিয়েছে বাড়তি উত্তাপ। অধিকাংশ কাঁচা পণ্যের দাম কেজিতে ১ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, টানা বৃষ্টির কারণে গ্রামের বাজার ও খেত-খামার থেকে শহরে সবজি পরিবহন ব্যাহত হয়। কিছু অঞ্চলে রাস্তা কাদা ও পানিতে ডুবে যাওয়ায় গাড়ি চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়ে পাইকারি বাজারে এবং সেখান থেকেই ছড়িয়ে পড়ে খুচরা বাজারে। অনুকূল আবহাওয়াতে আজ বাজারগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। বৃষ্টির পর পণ্যের সরবরাহ বাড়লেও বাড়তি দামে বিক্রির অভিযোগ করছেন ক্রেতারা।

শুক্রবার (১১ জুলাই) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, রায়েরবাগ, চিটাগংরোড, মেয়াদিয়াসহ বিভিন্ন বাজারে এমন চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারে ক্রেতাদের ভিড় যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে অধিকাংশ পণ্যের দামও। বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহে সমস্যা ও পরিবহন ব্যয় বাড়ার কারণে এই মূল্যবৃদ্ধি। তবে ক্রেতারা বলছেন, সুযোগ পেলেই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেন। গত সপ্তাহের চেয়ে আজ বেশিরভাগ সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে শসা, কাঁচামরিচ, পটল, ঢেঁড়শ ও করলার দাম।

পটোল ৭০-৮০ টাকা (পূর্বে ৬০-৭০ টাকা), ঢেঁড়শ ৬০ থেকে ৭০ (পূর্বে ৪০-৫০ টাকা), কাঁচামরিচ ৪০০ টাকা (পূর্বে ১৬০-১৮০ টাকা), শসা: ৭০-৮০ টাকা (পূর্বে ৫০-৬০ টাকা), করলা: ৮০-৯০ টাকা (পূর্বে ৬০-৭০ টাকা) দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বরবটি প্রতি আঁটি ৬০ টাকা, কচুর চড়া ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, কলা প্রতিহালি ৫০ টাকা, লাউ প্রতিপিস ৬০, ঝিঙা ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ২০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে আলু, পেঁয়াজ, রসুনের দামে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি।

ক্রেতারা বলছেন, প্রতি বর্ষায় একই কাহিনি। টানা বৃষ্টির পর বাজারে এসে ক্রেতারা যেন আঁতকে উঠছেন দাম শুনে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর জন্য এই দাম বাড়া একরকম চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গার্মেন্টস কর্মী মেহেরুন বলেন, সব কিছুতেই তো দাম বাড়ে। কিন্তু বৃষ্টি হলেই এমন করে বাড়ে যেন এটাই সুযোগ ব্যবসায়ীদের জন্য।

এক তরুণ ক্রেতা উষ্মা প্রকাশ করে ঢাকা মেইলকে বলেন, নানা অজুহাতে বাজার দর বেড়েই চলছে। আমরা মধ্যবিত্ত বাজারে এসে হতাশ হয়ে যাই।

অপর এক ক্রেতা বলেন, সবজির দাম বাড়লে আমরা একবেলার তরকারি দিয়ে দুবেলা চালিয়ে নিই। কিন্তু প্রতিদিন তো সেটা সম্ভব না।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে পণ্য পরিবহনের কোনো সুসংগঠিত ব্যবস্থা না থাকায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। বৃষ্টির মতো স্বাভাবিক ঘটনা বাজারে তেজ আনছে, এর মানে সরকারিভাবে নজরদারি ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। বৃষ্টির কারণে অনেক জায়গায় গাড়ি ঠিকমতো আসতে পারেনি। খেত থেকে পচা পণ্য ফেলা হয়েছে। তাই বাজারে পণ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

কালের আলো/এএএন