গাজায় ৪৮ ঘণ্টায় মারা যেতে পারে ১৪ হাজার শিশু

প্রকাশিতঃ 4:32 pm | May 20, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:

দ্রুত ত্রাণ না পৌঁছালে ফিলিস্তিনের গাজায় আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবিক কার্যক্রম বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল টম ফ্লেচার।

বিবিসিকে তিনি বলেছেন, আমি যতটা পারি এই ১৪ হাজার শিশুকে রক্ষা করতে চাই।

এদিকে গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর ওপর ১১ সপ্তাহ ধরে চলা অবরোধ তুলে নিয়েছে ইসরায়েল। যদিও ফ্লেচার বলেছেন মাত্র পাঁচটি লরি ত্রাণ নিয়ে সেখানে যেতে পেরেছে।

তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, মঙ্গলবার অন্তত ১০০ ত্রাণবাহী লরি গাজায় পৌঁছাতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তার বন্যা বইয়ে দেয়া দরকার।

তার মতে আরও সহায়তা নেওয়া যায় কি-না সেটাই হবে জাতিসংঘের ‘সত্যিকার পরীক্ষা’। অন্যদিকে, গাজায় সামরিক অভিযান জোরদার করার বিষয়ে ইসরায়েলকে সতর্ক করে এটি বন্ধ করতে বলেছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা।

একইসঙ্গে দেশ তিনটি গাজায় ত্রাণ প্রবাহ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই যুদ্ধ কালই শেষ হয়ে যেতে পারে যদি হামাস সব জিম্মিকে ছেড়ে দেয় ও অস্ত্র সমর্পণ করে।

এখনো হামাসের হাতে ৫৮ জন জিম্মি আছে এবং এদের মধ্যে ২৩ জন জীবিত আছে বলে মনে করা হয়।

বিবিসির আন্না ফস্টার টম ফ্লেচারকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে আরো সহায়তা না পেলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় গাজায় ১৪ হাজার শিশু মারা যেতে পারে- এটি জাতিসংঘ কীভাবে ঠিক করলো।

জবাবে তিনি বলেছেন, সেখানে আমাদের শক্তিশালী টিম আছে এবং অবশ্যই তাদের অনেকে নিহত হয়েছে। তারপরও এখনো আমাদের অনেকে লোকজন আছে সেখানে।

ফ্লেচার বলেন, তারা চিকিৎসা কেন্দ্রে আছে, স্কুলে আছে।…. আরও মূল্যায়নের চেষ্টা করছে। যা ত্রাণ যাচ্ছে তা সাগরে এক বিন্দুর মতো

তারা বলেছে, ওই অবরোধ তারা দিয়েছিলো হামাসের ওপর চাপ তৈরির জন্য। এর মধ্যে ত্রাণের অপব্যবহারের বিষয়টিও দেশটি উল্লেখ করেছে।

যদিও সোমবার সন্ধ্যায় টম ফ্লেচার বলছেন, মাত্র নয়টি ট্রাক কেরেম শালম ক্রসিং দিয়ে গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে।

কিন্তু এটি সাগরে এক বিন্দু পানির মতো। মঙ্গলবার সকাল থেকে আরও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ত্রাণ গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে।

লুটপাট কমাতে ত্রাণের নিয়মিত প্রবাহ থাকতে হবে। মানবিক কর্মীদের একাধিক রুটে সেখানে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে। মানবিক সহায়তার পাশাপাশি বাণিজ্যিক পণ্যসামগ্রী যেতে দিতে হবে।

জেরুসালেম থেকে অ্যালিস কাড্ডি লিখেছেন উত্তর গাজায় ফিলিস্তিনিরা অনেকে বিবিসির কাছে খাবারের জন্য তাদের সংগ্রামের কথা জানিয়েছেন।

তাদের আশঙ্কা যে অল্প পরিমাণ ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে সেটি তাদের কাছে নাও পৌঁছাতে পারে। বাচ্চাকে খাওয়ানোর জন্য একটা রুটির টুকরো পর্যন্ত পাচ্ছি না।

দক্ষিণাঞ্চল থেকে কীভাবে আমরা সাহায্য পাবো? সেখানে যাওয়া আমাদের জন্য কঠিন। আমরা একটি ট্রাজেডির মধ্যে বাস করছি, গাজায় এক ব্যক্তি বলছিলেন।

ক্ষুধায় এবং খাদ্যের অভাবে লোকজন অজ্ঞান হয়ে পড়তে শুরু করেছেন। আমরা জানি না বাচ্চাদের কী খাওয়াবো। ডাল, চাল, ময়দা কিংবা অন্য কোনো ধরনের খাবার পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ একটা টমেটো পর্যন্ত কিনতে পারছে না। কেউ এক ব্যাগ ময়দা পাচ্ছে না।

সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের চাপের কারণে ‘ন্যূনতম পরিমাণ’ সহায়তা পাঠানোর অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস ত্রাণের অপব্যবহার ও ত্রাণ চুরি করে। তবে এ ধরনের অভিযোগ হামাস প্রত্যাখ্যান করেছে

কালের আলো/এএএন