ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচনের তিন খাতে ব্যয় হবে ১০ কোটির বেশি

প্রকাশিতঃ 10:41 am | April 15, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের (এমসিসি) প্রথম নির্বাচনে ব্যয় ১০ কোটি টাকার চেয়ে বেশি হবে বলে ধারনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

তবে নির্বাচনের তিন খাতে এসব ব্যয় হলেও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এ সব কেন্দ্রে ভোট হওয়ায় এর খরচ একটু বেশি। বাকি দুই খাত নির্বাচন পরিচালনা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যয় সে তুলনায় কম।

ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন পরিচালনা ব্যয় দেড় কোটি আর আইন-শৃঙ্খলার পেছনে আড়াই কোটি সম্ভাব্য ব্যয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর বাকিটা ইভিএমের পেছনেই হবে।

দেশের ১২তম এ সিটির ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৫ মে। মোট ১৩০টি কেন্দ্রের সবগুলোতেই ইভিএমে ভোট নেবে নির্বাচন কমিশন।

ইসির বাজেট শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. এনামুল হক বলেন, এখনো খাতভিত্তিক বাজেট চূড়ান্ত করা হয়নি। আমাদের বাজেট পর্যাপ্ত আছে। সেখান থেকেই ব্যয় সংকুলান করা হবে। নির্বাচন পরিচালনা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ৪ কোটির মতো ব্যয় হতে পারে। আর ইভিএমের পেছনে কয়েক কোটি টাকা লাগবে।

ইভিএমের পেছনে এতো ব্যয়ের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মেশিনগুলোর দাম রয়েছে, যেটা পরবর্তীতে আর কাউন্ট হবে না। এটা এককালীন। তারপর তো কমে আসবে। আর যেহেতু সবগুলো কেন্দ্রেই ইভিএমে ভোট হবে তাই প্রশিক্ষণও হবে বড় আকারে। মক ভোটিংও নিতে হবে সব কেন্দ্রে, সেটার ব্যয় আছে। ইভিএম পরিচালনার জন্যও আলাদা ব্যয় হবে। সশস্ত্র বাহিনীর সহয়তাও নিতে হতে পারে। সে ব্যয়ও যোগ হবে। কাজেই সব মিলিয়ে ইভিএমের পেছনে ব্যয়টা বেড়ে যায়।

নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে ইভিএম প্রস্তুত করে নিচ্ছে। প্রতিটি ইভিএমের দাম পড়ছে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা। এমসিসি ভোটে ১৩০টি কেন্দ্রের প্রতিটিতে ৩টি করে ৩৯০টি ইভিএম ব্যবহার করবে। ব্যাকআপ হিসেবেও সমসংখ্যক মেশিন রাখা হবে। তাই ইভিএম কেনার পেছনেই প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন এই মেশিনগুলোকে উন্নতমানের বলে দাবি করছে। যদিও এ পর্যন্ত যতগুলো নির্বাচনে এই মেশিন ব্যবহার করা হয়েছে, কোনোটাতেই ১ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি। এছাড়া ভোটের হারও তেমন নয়। অর্থাৎ, এই যন্ত্রে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের মধ্যে এখনো আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারেনি।

ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ এপ্রিল।

দেশের সবশেষ সিটি করপোরেশন ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।

২০১৮ সালের ২ এপ্রিল প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) বৈঠকে ‘ময়মনসিংহ পৌরসভাকে দেশের ১২তম সিটি করপোরেশন করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। একই বছরের ১৪ অক্টোবর ভৌগলিক সীমানা নির্ধারণ করে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের গেজেট প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

এর আগে ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর ও নেত্রকোণা জেলা নিয়ে বিভাগ গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন দেয় নিকার।

গেজেট অনুযায়ী, ময়মনসিংহ টাউন, গোহাইলকান্দি, গলগণ্ডা, বলাশপুর, কাশর, ভাটিকাশর, সেহরা, কৃষ্ণপুর, কেওয়াটখালী, চকছত্রপুর, রাক্তা, ঢোলাদিয়া, মাসকান্দা, বয়রা ভালুকা, ছত্রপুর, আকুয়া, বাড়েরা, কল্লা, চরসেহড়া, হাসিখালী, বাদেকল্পা, বাইসাখাই, খাগডহর, সুতিয়াখালী, রহমতপুর, কিসমত, বেলতলী, দাপুনিয়া, চরঈশ্বরদিয়া, গোবিন্দপুর, চররঘুরামপুর ও জেলখানার চরমৌজা নিয়ে সিটি করপোরেশন গঠন করা হয়।

কালের আলো/এসএম/এমএইচএ