আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত সেনাবাহিনী সহযোগিতা করবে : জিওসি

প্রকাশিতঃ 8:11 pm | June 05, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের আগুন যতক্ষণ পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ করতে না পারবে ততক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন।

রোববার (৫ জুন) বিকেল ৫টার দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি এলাকার বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন বলেন, বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের কারণে লাগা আগুন এখন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নতুন করে আর ছড়াতে যেন না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরপরও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত ১০টা পর্যন্ত সময় লাগবে।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর প্রায় ২০০ সদস্য ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কাজ করছে। সবার আগে এই জায়গা থেকে সাধারণ জনগণকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে ফায়ার সার্ভিসের কাজ করতে সুবিধা হয়েছে। আশেপাশের কনটেইনারগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এতে আগুন নতুন করে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই।

সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি বলেন, এরপরও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত ১০টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তবে নতুন করে হতাহতের কোনো আশঙ্কা নেই। পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা সারারাত প্রস্তুত ছিলাম। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাধারণ জনগণের জন্য দুর্যোগকালে সবসময় পাশে থাকতে প্রস্তুত। এখানে জেলা প্রশাসক ও এসপি রয়েছেন। আজ সকালে ডাকা মাত্রই আমরা চলে এসেছি।

তিনি বলেন, এখানকার মতো চট্টগ্রাম মেডিকেলেও সেনাবাহিনীর একটি টিম যাচ্ছে। সেখানে তারা মানুষের ভীড় সরাবেন। এতে ডাক্তার ও নার্সদের চিকিৎসাসেবা দিতে সহজ হবে।

জিওসি আরও বলেন, প্রথমে আমরা চট্টগ্রাম সামরিক হাসপাতালকে প্রস্তুত করার জন্য নির্দেশ পেয়েছিলাম। ফায়ার সার্ভিসের যারা আহত ছিলেন তাদের ভর্তি করা হয়। সিএমএইচ ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছয়জনকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই এলাকায় জনসমাগম খুব বেশি ছিল। যে কারণে আহত ও ক্ষতি বেশি হয়েছে।

মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা এই এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেছে যাতে আরও বেশি জনসমাগম ও নাশকতামূলক কোনো কার্যক্রম পরিচালিত না হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে জিওসি তিনি বলেন, পরিবেশবাদীরা বলেছিল হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ড্রেনের পানির সঙ্গে মিশে বঙ্গপোসাগরে যাবে। সেনাবাহিনীর একটি চৌকশ ইঞ্জিনিয়ারিং দল এই নিয়ে কাজ করেছে। দেখা যায় দুটি ড্রেন সাগরের পানির সঙ্গে মিশেছিল। ইঞ্জিনিয়ারিং দল সেই ড্রেন দুটির সংযোগস্থল বন্ধ করে দিয়েছে। সাগরে আর এখান থেকে কিছু ছড়িয়ে পড়তে পারবে না।

এর আগে শনিবার (৪ জুন) রাত ১১টার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। এসময় এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে ছড়িয়ে পড়তে থাকে আগুন। কিছু কনটেইনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত চার কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। ভেঙে পড়ে আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাচ।

রোববার (৫ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ৪৯ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী। এর মধ্যে আটজন ফায়ার সার্ভিস কর্মী। আহত আছেন কয়েকশ। ডিপোটিতে ১৩শ কনটেইনার ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রাথমিকভাবে এ আগুনে নয়শ কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কালের আলো/এসবি/এমএম