সাকিব তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ, জরিমানা পাঁচ লাখ টাকা

প্রকাশিতঃ 11:47 pm | June 12, 2021

স্পোর্টস সংবাদদাতা, কালের আলো:

বিকেল থেকে সাকিব আল হাসানের শাস্তি ঘোষণা নিয়ে চলেছে একের পর এক নাটক। প্রথমে মোহামেডানের এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে, চার ম্যাচ নিষিদ্ধ সাকিব। এরপর বলা হয়, না ওটা সত্যি নয়। পরে জানানো হয়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করবে সিসিডিএম (ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস)। কিন্তু পরে সেটাও বাতিল করা হয়।

অবশেষে সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের গুলশানের বাসভবনে এক অনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন সিসিডিএম চেয়ারম্যান কাজী ইনাম আহমেদ। সেখানেই ঘোষণা করা হয়, সাকিব আল হাসান তিন ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ। সঙ্গে ৫ লাখ টাকা আর্থিক জরিমানা।

শনিবার (১২ জুন) সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস (সিসিডিএম) চেয়ারম্যান কাজী ইনাম আহমেদ।

কাজী ইনাম বলেন, ‘ম্যাচের দুই আম্পায়ার ইমরান পারভেজ ও মাহফুজুর রহমান এবং ম্যাচ রেফারি মোরশেদুল আলমের রিপোর্টের ভিত্তিতে এই শাস্তি দিয়েছে সিসিডিএম।’

গতকাল শুক্রবার ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে অশোভন আচরণ করেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক সাকিব। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে দুবার মেজাজ হারিয়েছেন তিনি। আবাহনীর ইনিংসে ঘটনাটি ঘটে। তখন উইকেটে ছিলেন মুশফিকুর রহিম।

ইনিংসের পঞ্চম ওভারে সাকিবের করা বল ঠিকমতো ব্যাটে লাগাতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। মুশফিকের প্যাডে লেগে যায় বল। সঙ্গে সঙ্গে এলবির আবেদন তোলেন সাকিবরা। খালি চোখে দেখে আউটই মনে হয়েছিল। কিন্তু সাকিবদের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। সাড়া না পেয়ে মুহূর্তের মধ্যে স্টাম্পে লাথি মেরে বসেন মোহামেডানের অধিনায়ক সাকিব।

এরপর আম্পায়ার ইমরান পারভেজের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে যান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সতীর্থরা তাঁকে শান্ত করে পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। সেই সময় আবাহনীর সংগ্রহ ছিল তিন উইকেটে ২১ রান। বৃষ্টির সম্ভাবনা শুরু হয়। তাই বৃষ্টি আইনে এগিয়ে থাকতে পরের ওভারে শুভাগত হোমের বলে শান্ত চড়াও হন। এর পরই বৃষ্টি নামে।

সেই সময় মিডঅফে ছিলেন সাকিব আল হাসান। মুহূর্তের মধ্যে দৌড়ে এসে তিনটি স্টাম্প উপড়ে ফেলে দেন মোহামেডান তারকা। আম্পায়ারের সঙ্গে ফের তর্কে জড়ান তিনি। আবাহনীর ড্রেসিং রুমের দিকেও গিয়েও কিছু বলতে দেখা যায়। এই ঘটনা দেখে আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদও তেড়ে যান সাকিবের দিকে। তাঁকে গিয়ে শান্ত করেন মোহামেডানের ক্রিকেটার শামসুর রহমান শুভ। সতীর্থরা এসে শান্ত করেন সাকিবকে।

এদিকে পাঁচ বছর পর আবাহনীকে হারিয়েছে মোহামেডান। ম্যাচ শেষে নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন সাকিব। নিজের ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, ‘প্রিয় ভক্ত ও অনুসারীরা, মেজাজ হারানোর জন্য ও ম্যাচ নষ্ট করার জন্য আমি সবার কাছে দুঃখপ্রকাশ করছি, বিশেষ করে তাদের কাছে, যারা ঘরে বসে দেখেছেন। আমার মতো একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের উচিত হয়নি এভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো। কিন্তু কখনও কখনও দুর্ভাগ্যক্রমে সবকিছুর বিরুদ্ধে এরকম হয়ে যায়। মানবিক এই ভুলের জন্য আমি দলগুলোর কাছে, ম্যানেজমেন্ট, টুর্নামেন্ট অফিসিয়ালস ও আয়োজক কমিটির কাছে ক্ষমা চাইছি। আশা করি, ভবিষ্যতে আমি আর এরকম করব না। ধন্যবাদ ও ভালোবাসা সবার জন্য।’

কালের আলো/ডিএসবি/এমএম