গৌরীপুরে গ্রাহকের লাখ লাখ টাকা আত্নসাত করেছে বন্ধু উন্নয়ন সঞ্চয় সমিতি

প্রকাশিতঃ 7:23 pm | March 15, 2018

মশিউর রহমান কাউসার, কালের আলো :

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সরকারি রেজিষ্ট্রেশনকৃত বন্ধু উন্নয়ন সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেডের বিরুদ্ধে গ্রাহকের লাখ লাখ টাকা আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৫ বছর যাবত এ সমিতি সহস্রাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে সঞ্চয় ও বিভিন্ন মেয়াদে বীমা অংকের টাকা আদায় করলেও তাদের ঋণ ও সঞ্চয়ের মুনাফা দিতে নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করছে।

জানা যায়, উপজেলার শ্যামগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত এ সমিতি ২০১২ সালে সমবায় অধিদপ্তর থেকে রেজিষ্ট্রেশন নিয়ে সেখানে প্রধান কার্যালয়সহ আশপাশ এলাকায় বেশ কয়েকটি শাখা ব্রাঞ্চের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। সমিতি গঠন করে টানা পাঁচ বছর ধরে ঋনদানের প্রতিশ্রুতি ও নানা প্রলোভন দেখিয়ে সহস্রাধিক সদস্যদের কাছ থেকে সঞ্চয় ও বিভিন্ন মেয়াদে বীমা অংকের টাকা আদায় করছে সমিতির কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও এ সমিতির সদস্যদের মাঝে ঋন বিতরণ অথবা পাঁচ বছরে জমাকৃত সঞ্চয়ের বিপরীতে কোন মুনাফা প্রদান করা হয়নি। এদিকে সদস্যদের বীমা অংকের মেয়াদ শেষ হলেও বীমা দাবি নিষ্পত্তি নিয়ে বিভিন্ন টালবাহনার মাধ্যমে সময় ক্ষেপন করা হচ্ছে।

ঋন তো দুরের কথা সঞ্চয় ও বীমা অংকের টাকা না পেয়ে সমিতির সদস্যরা বর্তমানে রয়েছেন দুশ্চিন্তায় এবং তাদের মাঝে বিরাজ করছে টাকা না পাওয়ার আতঙ্ক। এ সমিতির নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলাম (৩০) উপজেলার মেছিডেঙ্গী গ্রামের আবু সাঈদের ছেলে।

ভুক্তভোগী স্থানীয় কান্দুলিয়া গ্রামের এ সমিতির সদস্য নুরুনাহার, জ্যোতি রানী, রুমেছা খাতুন, জায়েদা খাতুন, সাবিনা, সেলিনা, নিজাম উদ্দিন, বিলকিছ বেগম, হাওয়া খাতুন, আয়েশা খাতুন, তানজিলা আক্তারসহ আরো অনেকেই তাদের টাকা ফেরত পেতে ও সমিতির নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় জড়িদতের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে সমিতির নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলাম (৩০) স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিনটি ব্রাঞ্চের মাধ্যমে তাদের সমিতির কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। ইতিমধ্যে দুটি ব্রাঞ্চের কার্যক্রম স্থগিত করে সদস্যদের দেনা-পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে।

তিনি দাবি করেন, বর্তমানে শুধুমাত্র এ সমিতির শ্যামগঞ্জে হেড অফিসের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ব্রাঞ্চের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৫ শতাধিক। তাদের সকল দেনা পাওনা মিটিয়ে উক্ত ব্রাঞ্চের কার্যক্রমও তারা বন্ধ করে দিবেন। এক্ষেত্রে সমিতির সদস্যদের টাকা পরিশোধের জন্য তাদের কাছে সময় চাওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে গৌরীপুর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন জানান, এ সমিতির কার্যক্রম মোটেও সন্তোষজনক নয়। উল্টো গ্রাহকদের টাকা আত্নসাতেরও অভিযোগ রয়েছে। তাই এ সমিতির নামে রেজিষ্ট্রেশন বাতিলের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

কালের আলো/আরএস/এএ

Print Friendly, PDF & Email