বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নামে কোনো রাজনীতি হবে না : সালাহউদ্দিন আহমেদ

প্রকাশিতঃ 8:57 pm | July 15, 2025

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, কালের আলো:

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশে কখনো আওয়ামী ফ্যাসিবাদের জায়গা হবে না। এ দেশে আওয়ামী লীগের নামে কোনো রাজনীতি হবে না। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে ছাত্রদল কর্তৃক আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থানের বাঁক বদলের দিন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য ১৯৭১ সালে লক্ষ শহীদ জীবন দিয়েছিল, তা ভুলে গিয়ে শেখ মুজিব চার বছরের মাথায় গণতন্ত্রকেই ভ্যানিশ করে দিল। একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করল। এটা তারাই করেছে যারা ফ্যাসিবাদের প্রবক্তা। শেখ মুজিবুর রহমান ফ্যাসিস্ট ছিল, তার কন্যা (শেখ হাসিনা) তো ডাবল ফ্যাসিস্ট হয়েছে। দেশে ফ্যাসিবাদ কখনো প্রত্যাবর্তন করুক, তা বাংলাদেশের মানুষ চায় না।

তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে আন্দোলনকারীদের রক্তদানকে যারা কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরাতে চাইছে, বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনায় বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতৃস্থানীয় নেতৃবৃন্দের নামে কুৎসা রটানোর চেষ্টা করছে, বিভিন্ন রকমের স্লোগানের মধ্যদিয়ে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে; তারা ফ্যাসিবাদের আগমনকে স্বাগত জানায়।

সালাহউদ্দিন বলেন, বিগত ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। মাত্র ৩৬ দিনে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।

জুলাই সনদ নিয়ে তিনি বলেন, জুলাই সনদ নিয়ে কাজ চলছে, তবে তা হচ্ছে খুব ধীরগতিতে। আমি জানি না এত ধীরগতির কাজ করে তারা সফল হবে কিনা। ১২ ফেব্রুয়ারি আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে একটি খসড়া সনদ সরকারকে দিয়েছি। কিছুদিন আগে তারা আবার একটি রিফাইন্ড ভার্সন চেয়েছে, আমরা সেটাও দিয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের যথাযথ মর্যাদা দেব এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেব। সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে তার বর্ণনা থাকবে। যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, তার স্বীকৃতিও সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী।

এ সময় তিনি জোর দিয়ে বলেন, ৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, দুঃখের বিষয় হচ্ছে— ছাত্রলীগের বিচারের কোনো তৎপরতা আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি না। এমনকি বৈষম্যবিরোধী ব্যানারধারীদের অনেকের মধ্যেও কোনো তৎপরতা দেখতে পারছি না। সম্প্রতি মিটফোর্ডের ঘটনায় মব সৃষ্টি করে আমাদের সর্বোচ্চ নেতাকে নিয়ে কুৎসিত স্লোগান দেওয়া হয়েছে। মব সৃষ্টি করে যদি দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়, তাহলে ছাত্রদল উপযুক্ত ভাষায় জবাব দেবে।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র মৈত্রী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্র মজলিস, ছাত্রফ্রন্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম অ্যাকশন সোসাইটি, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদসহ অনেক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

কালের আলো/এসএকে