মাইলস্টোনের বিধ্বস্ত ভবনে ছিল স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী, সশস্ত্র বাহিনীর মানবিকতা ও পেশাদারত্ব’র প্রশংসা

প্রকাশিতঃ 11:43 pm | July 24, 2025

কালের আলো রিপোর্ট:

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহতাব ভূঁইয়ার (১৪) পর চলে গেলো অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোছা. মাহিয়াও (১৫)। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৩১ জনে। আহতদের জরুরি চিকিৎসা সহায়তা দিতে ঢাকায় আসা ভারতীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্সরা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেছেন। চার সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে পৌঁছান। মর্মান্তিক এই ঘটনার পর আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দিয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতির তথ্যমতে, মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ জন শিক্ষার্থী, দুজন শিক্ষক ও দুজন অভিভাবকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। এছাড়া তিনজন শিক্ষার্থী ও দুজন অভিভাবক এখনো নিখোঁজ বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে দুর্ঘটনার সময়, হতাহতসহ পুরো চিত্র তুলে ধরা মাইলস্টোন কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলমের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিওয়ান যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণরত অবস্থায় বিধ্বস্ত হয়।

দুপুর ১টায় স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়ায় তখন অভিভাবকদের জন্য শুধু স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী অপেক্ষারত অবস্থায় ছিল। এ সময়ে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার আকস্মিকতায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ হতবিহ্বল, স্তব্ধ ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে মুহূর্তের মধ্যে মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এলাকাবাসী উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ নৌ বাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ ও র‌্যাবের প্রশিক্ষিত জনবল সম্মিলিতভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণ করেন। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিবৃতির পাশাপাশি দুর্ঘটনার ভয়াবহতা, আগুনের তীব্রতা আর হতাহতদের হৃদয়বিদারক চিত্রের মাঝেও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অনন্য মানবিকতা ও পেশাদারত্ব সব পরিমণ্ডলেই প্রশংসিত হয়েছে।

মা-ছেলের বীভৎস মরদেহ গর্বের পোশাক খুলে ঢেকে দেন সেনা কর্মকর্তারা
বিমান বিধ্বস্তে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির সামনে এক মা ও এক ছেলে বীভৎস অবস্থায় পড়ে ছিল। শোকস্তব্ধ হৃদয়ে নিজেদের গর্বের পোশাক খুলে মরদেহ দু’টি ঢেকে দেন সেনা কর্মকর্তারা। সেনা সদস্যদের এই মানবিকতা প্রশংসা কুড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে ঘটনাস্থলে এসে সেনাবাহিনীর ৪৩ রেজিমেন্টের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেজর মেহেদী এই বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর আমরা যখন ঘটনাস্থলে আছি, তখন দেখি বিমান বিধ্বস্তে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির সামনে এক মা ও এক ছেলে বীভৎস অবস্থায় পড়ে আছে। তখন আমাদের গর্বের পোশাক খুলে মরদেহগুলো ঢেকে দিই।’ মেজর মেহেদী বলেন, ‘দুর্ঘটনার পরপরই আমরা প্রথম রেসপন্স টিম হিসেবে ঘটনাস্থলে প্রবেশ করি। স্পটে প্রবেশের পর দুটি মরদেহ দেখতে পাই-সম্ভবত একজন মা ও তার ছেলে। দৃশ্যটি এতটাই হৃদয়বিদারক ছিল যে সঙ্গে সঙ্গে আমি ও আমার সহকারী সৈনিক আশিক আমাদের গর্বের ইউনিফর্ম খুলে মরদেহ দুটি ঢেকে দেই। আমাদের পোশাকের চেয়ে ওই মা-ছেলের মরদেহের সম্মান আমাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছিল।’

  • মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৩১ জনে
  • বার্ন ইন্সটিটিউটে ভারতীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্সরা
  • মা-ছেলের বীভৎস মরদেহ গর্বের পোশাক খুলে ঢেকে দেন সেনা কর্মকর্তারা
  • পুড়ে অঙ্গার ৫ দেহ, ডিএনএ নমুনা দিলেন ১১ জন
  • বার্ন ও সিএমএইচে বিমানবাহিনীর সমন্বয় সেল গঠন

মেজর মেহেদী বলেন, ‘ঘটনার দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যেই সেনাবাহিনীর দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। কারণ, বিধ্বস্তস্থলের একদম কাছেই আমাদের অস্থায়ী আর্মি ক্যাম্প ছিল।’ তিনি বলেন, ‘বিমানটি যেখানে বিধ্বস্ত হয় সেখানে প্রবল আগুন জ্বলছিল। সেই অবস্থায় আমরা ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পাই, একটি শ্রেণিকক্ষে আগুন জ্বলছে এবং তার সামনেই পড়ে আছে দুটি মরদেহ। ভয়াবহ আগুনের মধ্যেও আমরা ভেতরে প্রবেশ করি এবং উদ্ধারকাজ শুরু করি। আমাদের উদ্ধার তৎপরতায় হতাহত অনেক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, স্টাফ ও অভিভাবকদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো সম্ভব হয়েছে। এখনো অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’

উদ্ধার কার্যক্রমে সেনাবাহিনীর পাশে মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থীরাও দাঁড়িয়েছিল জানিয়ে মেজর মেহেদী বলেন, ‘এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থী আমাদের সঙ্গে উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। তাদের সাহস ও সহযোগিতা আমাদের কাজকে আরও সহজ করেছে। আমরা কৃতজ্ঞ।’ সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, ‘উদ্ধার অভিযানের সময় সেনাবাহিনীর ২৫ জন সদস্য আহত হন, তবে গুরুতর কেউ নন। তারা বর্তমানে ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসাধীন। দুর্ঘটনার ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়াদের বের করতে ভবনের গ্রিল ভেঙে একটি স্লাইডিং পদ্ধতি ব্যবহার করে উদ্ধারকাজ চালানো হয়েছিল। পরে আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছিল।

নিহতদের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে নানা ধরনের তথ্য প্রচার হওয়ায় বিষয়ে মেজর মেহেদী বলেন, ‘উদ্ধার অভিযান চালানোর সময় যে যার মতো করে হতাহতদের উদ্ধার করেছিল। ফলে সঠিক সংখ্যা আমাদের কাছে নেই। এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য দিতে পারবে মাইলস্টোন স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলো।’

মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষের বিবৃতি ‘ছুটির পর বিধ্বস্ত হয় বিমান’
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মাইলস্টোন কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানাচ্ছি যে, এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আমাদের স্কুল শাখার ১৯ জন শিক্ষার্থী, দুজন শিক্ষক, দুজন অভিভাবক মৃত্যুবরণ করেন। দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হন ৫১ জন। তাদের মধ্যে ৪০ জন শিক্ষার্থী, ৭ জন শিক্ষক, একজন অভিভাবক, একজন আয়া ও একজন পিয়ন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন মোট ৫ জন। নিখোঁজদের মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থী ও দুজন অভিভাবক।’

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনায় ২২ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ শুধু এ প্রতিষ্ঠানে নিহত, আহত ও নিখোঁজের তথ্য তুলে ধরছে। কর্তৃপক্ষের তথ্য হালনাগাদকরণের কাজ চলমান। এ দুঃখজনক ঘটনায় হতাহতের সর্বমোট সংখ্যা তুলে ধরছে আইএসপিআর। হৃদয়বিদারক এ দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের শোকাহত সদস্যদের প্রতি আমরা গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আহতদের চিকিৎসাসহ সকল প্রয়োজনে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ সবর্দা পাশে রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থী ও সন্তান হারানোর এ চরম শোকসন্তপ্ত অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টাবৃন্দ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিএনসিসি, রোভার স্কাউট, রেডক্রিসেন্ট, অভিভাবক, এলাকাবাসীসহ পুরো জাতি আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়। প্রত্যেকেই তাদের অবস্থান থেকে সহানুভূতি, সহমর্মিতা ও সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গুরুতরভাবে আহতদের উন্নত ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এ ব্যাপারে চিকিৎসা ও সেবাকার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য একটি জরুরি সেল গঠন করেছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী।’ এতে আরও বলা হয়, দুর্ঘটনার প্রথম থেকে এ পর্যন্ত উদ্ধার, যোগাযোগ, সেবা, চিকিৎসাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে যারা মানবিকতার হাত বাড়িয়েছেন, সেসকল ব্যক্তি, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমরা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি সকল গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের প্রতি, যারা মর্মান্তিক এ ঘটনাকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সকলের দৃষ্টিগোচর করেছেন।’

মেয়ের খোঁজে এসে পোড়া ব্যাগ নিয়ে বের হলেন মা
নিখোঁজ মেয়ে মরিয়ম উম্মে আফিয়াকে খুঁজতে রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে আসেন তার মা তামিমা উম্মে, মামা ও স্বজনরা। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে মেয়েটির মাকে স্কুলের ভেতরে যেতে দেখা যায়। যদিও মাইলস্টোন স্কুল অ্যাড কলেজের ফটকে তালা। শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে মানা। কিন্তু সন্তানহারা মা কী সে বাধা মানে। তার হাউমাউ করে কান্না ও বিলাপে স্কুলের ফটক খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ। পরক্ষণে দৌড়ে যান বিমান বিধ্বস্ত হওয়া ভবনের সামনে। সন্তান মরিয়ম উম্মে আফিয়ার খোঁজ পেলেন না। পরে মেয়ের পোড়া ব্যাগ নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ক্যাম্পাস থেকে বের হোন মা তামিমা উম্মে।

মরিয়ম উম্মে স্কুলটির তৃতীয় শ্রেণির আকাশ শাখায় পড়তো। গত সোমবার (২১ জুলাই) যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে তার কোনো খোঁজ পাচ্ছে না পরিবার। তার খোঁজেই বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে স্কুল প্রাঙ্গণে যান মরিয়মের মা, মামা ও স্বজনরা। এর মধ্যে স্বজনদের একজনের হাতে পোড়া ব্যাগ ছিল। মরিয়ম উম্মে আফিয়ার মামা সাব্বির সাংবাদিকদের জানান, তাদের বাসা চন্ডালভোগ এলাকায়। কথা বলার মতো অবস্থা আমাদের নেই। আমার বোন খুবই অসুস্থ। সবাই দোয়া করবেন। এর আগে বেলা ১১টার দিকে স্কুলের ফটকে এসে কথা বলেন স্কুলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস কে সোলায়মান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পরিচয়পত্র দেখালে ও নিখোঁজ স্বজনের খোঁজ করলে তাদের ভেতরে যেতে দেওয়া হবে। স্কুলের ৫ নম্বর ভবনের নিচতলায় হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে। সেখান থেকে তাদের তথ্য দেওয়া হবে। সেখানে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে।

পুড়ে অঙ্গার ৫ দেহ, ডিএনএ নমুনা দিলেন ১১ জন
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বিকৃত হয়ে যাওয়া মরদেহ শনাক্তে ১১টি ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এসব মরদেহের বিপরীতে ১১ জন দাবিদারের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এ তথ্য জানান সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) শম্পা ইয়াসমিন। তিনি জানান, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে থাকা পাঁচ মরদেহ বা দেহাবশেষ থেকে ১১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর বিপরীতে সিআইডিতে এসে এখন পর্যন্ত ১১ জন দাবিদার তাদের রক্তের নমুনা দিয়ে গেছেন। এদের মধ্যে এক পরিবারের একাধিক ব্যক্তিও রয়েছেন। এদিকে, এই ঘটনায় নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যদের মালিবাগে সিআইডি ভবনে ডিএনএ ম্যাচিংয়ের জন্য নমুনা দেওয়ার অনুরোধ জানায় সরকার। বুধবার (২৩ জুলাই) সরকারি তথ্য বিবরণীতে এই অনুরোধ জানানো হয়।

সেখানে বলা হয়, উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের প্রকাশিত তালিকায় যাদের সন্তান বা স্বজনের নাম নেই, সেসব পরিবারের সদস্যদের মালিবাগে সিআইডি ভবনে ডিএনএ ম্যাচিংয়ের জন্য নমুনা প্রদানের অনুরোধ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী ডা. মো. সায়েদুর রহমান আগেই এ অনুরোধ জানিয়েছেন। এতে আরও বলা হয়, সিএমএইচের মর্গে রাখা ছয়টি মৃতদেহ এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে এরইমধ্যে মৃতদেহগুলোর ডিএনএ অ্যানালাইসিসের (প্রোফাইলিং) জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, যা দিয়ে সিআইডির ল্যাবরেটরিতে ডিএনএ প্রোফাইলিং করা হবে। নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যদের নমুনা পাওয়া গেলে সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই ডিএনএ ম্যাচিংয়ের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করা হবে।

বার্ন ও সিএমএইচে বিমানবাহিনীর সমন্বয় সেল গঠন
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসাসেবা ও সমন্বয়সহ বিভিন্ন সহায়তা দেওয়ার জন্য একটি সমন্বয় সেল গঠন করেছে বিমানবাহিনী। জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট (কক্ষ নং-৮১১, ০১৭৬৯-৯৯৩৫৫৮) এবং সিএমএইচে (০১৮১৫-৯১২৬১৭) এই সমন্বয় সেল গঠন করা হয়েছে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট নম্বরে ফোন দিয়ে তথ্য জানানো ও নেওয়ার জন্য আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

কালের আলো/এমএএইচএন