বাংলাদেশ-রাশিয়া জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা

প্রকাশিতঃ 9:43 pm | April 03, 2024

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র রাশিয়া। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে জোরালো ভূমিকার
পাশাপাশি দু’দেশের সামরিক সহযোগিতাও উষ্ণ ও নিবিড়। সেই সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিতে নিয়মিত বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (০৩ এপ্রিল) সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে দু’দেশের মধ্যকার তৃতীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা। সভায় সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।

এই সভায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম। রাশিয়া প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করেন রাশিয়ান ফেডারেল সার্ভিস ফর মিলিটারি টেকনিকাল কো-অপারেশনের চীফ অফ ফার্স্ট ডিপার্টমেন্ট মি. ভরন্টসভ আলেকজেন্ডার ভেনিয়ামিনোভিক।

জানা যায়, সামরিক-প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ক্ষেত্রসহ বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সহযোগিতা ক্রমশ বাড়ছে। দু’টি দেশই সামরিক ও সামরিক-প্রযুক্তিগত সহযোগিতা জোরদার করতে বরাবরই নিজেদের আন্তরিকতার কথা জানিয়েছে। ঐতিহাসিক কারণে এবং বাস্তবতার নিরিখে বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের সৌহার্দপূর্ণ ও দৃঢ় সম্পর্ক ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদী উভয় দেশই। নিজেদের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫২ বছরে সামরিক সহযোগিতা বিশেষ গতি পেয়েছে। ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাশিয়া সফরকালে দেশটি থেকে ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের (প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা) সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের চুক্তি করা হয়। সে সময় বিমান ও ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র-যুদ্ধ বিমান কেনে বাংলাদেশ। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে রাশিয়ার কাছ থেকে সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় করেছে বাংলাদেশ।

আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে সামরিক উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণে সহযোগিতা প্রদানের জন্য রাশিয়া নিয়মিত সহায়তা করছে। এই সহায়তাকে আরও ত্বরান্বিত করতে ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশে ওই বছরের ৩ থেকে ৫ ডিসেম্বর প্রথম ও ২০১৯ সালে রাশিয়ায় ২০ থেকে ২২ আগস্ট দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। দু’দেশের মধ্যে সামরিক সরঞ্জাম সংক্রান্ত সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তৃত সুযোগ সৃষ্টি করাই এই ওয়ার্কিং গ্রুপের লক্ষ্য বলে জানায় আইএসপিআর।

আইএসপিআর আরও জানায়, এবারের সভাটিও প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, রক্ষণাবেক্ষণ, প্রশিক্ষণ, সামরিক সফর ও পরিদর্শন, কর্মশালা ইত্যাদি ক্ষেত্রে উভয় দেশের মধ্যকার সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে। সভায় বাংলাদেশের পক্ষে তিন বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ও রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। ১৯ সদস্যের একটি দল এই সভায় রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন।

কালের আলো/এমএএএমকে