১০ টাকার ঘুমের ওষুধে তৈরি ইনজেকশন ৬০০ টাকায় বিক্রি!

প্রকাশিতঃ 4:39 pm | March 19, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

প্রচলিত ঘুমের ওষুধ ‘জি-ডায়াজিপাম’কে ঘরোয়াভাবে রূপান্তর করে চেতনানাশক ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশন হিসেবে চালানো হতো। অথচ ‘জি-পেথিডিন’ তৈরির জন্য শুধু অনুমোদন রয়েছে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের। একটি চক্র গত সাত আট বছর থেকে এই জরুরি ইনজেকশনটি নকল করে বাজারজাত করছিল৷ ১০ টাকার ঘুমের ওষুধ দিয়ে ইনজেকশন তৈরি করে তা বিক্রি করা হতো ৬০০ টাকায়। ফলে সেটি কাজ করত না। এতে ভুক্তভোগীরা কিনে প্রতারিত হতেন।

অবশেষে চক্রটির তিন সদস্যকে গ্রেফতারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সোমবার মতিঝিল, বাড্ডা ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চারিয়ে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে ডিবি। তারা হলেন- আলমগীর খান, মাসুদ রানা ও আহসান হাবীব শাওন।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ২০০টি জি-পেথিডিন ইনজেকশন, ২২০টি জি-পেথিডিনের অ্যাম্পুল, এক হাজার ১০টি জি-ডায়াজিপামের অ্যাম্পুল, ৫২০টি জি-পেথিডিনের ফাঁকা বক্স, ২০০টি জি-পেথিডিন ইনটেক স্টিকার, দুটি (১২ কেজি) জি-পেথিডিন ফয়েল পেপার, এক হাজার ৫০০টি জি-পেথিডিনের ব্যবহারবিধি, একটি জি-পেথিডিনের ফয়েল লাগানোর জন্য লোহার চাপ মেশিন, পাঁচ কেজি অ্যাসিড, পাঁচটি কাঠ ও প্লাস্টিক দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি স্কিন প্রিন্ট করার ফ্রেম, ২৫০টি জি-পেথিডিন রাখার প্লাস্টিকের ট্রে জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

ডিবি প্রধান বলেন, আমরা তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এদের মধ্যে আলমগীর খান রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকা থেকে ‘জি- ডায়াজিপাম’ ঘুমের ইনজেকশন প্রতিটি আট টাকায় কিনে বাসায় নিতেন। পরে ইনজেকশন অ্যাম্পুলকে এসিড দিয়ে ভিজিয়ে রেখে গায়ে লেখা তুলে কাঠ ও প্লাস্টিক দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি স্কিন প্রিন্ট করার ফ্রেম দিয়ে ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশনের নামে নামকরণ করতেন। পরে এসব অ্যাম্পুল প্লাস্টিকের ট্রেতে পাঁচটি করে সাজিয়ে হাতে চালানো চাপ মেশিন দিয়ে ‘জি- পেথিডিন’ ব্যথানাশক ফয়েল পেপার সংযুক্ত করা হতো। জি-ডায়াজিপাম’ ঘুমের ইনজেকশনকে চেতনানাশক ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশনে রূপান্তরিত করে এ চক্র দীর্ঘদিন ধরে বাজারজাত করে আসছিল।

হারুন বলেন, রাজধানীর অনেক খ্যাতনামা হাসপাতালের নিচের বিভিন্ন ফার্মেসিতে এসব ওষুধ ব্যবহার করা হয়। আমরা বারিধারা জেনারেল হাসপাতালের নিচের ফার্মাসিস্টকে এর সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছি, তাকে আটক করা হয়েছে।

কালের আলো/ডিএস/এমএম

Print Friendly, PDF & Email