হরতালের নামে নৈরাজ্য করলে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি ডিএমপি কমিশনারের
প্রকাশিতঃ 10:08 am | October 29, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
হরতালের নামে অনেকেই নৈরাজ্য করে থাকে উল্লেখ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, যারা হরতালের নামে সাধারণ মানুষের জান-মালের ক্ষতি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত তাৎক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি নিয়ে পুলিশের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে ডিএমপি।
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, হরতাল একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। আবার হরতাল না মানাও একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু অনেক দল আছে, যারা হরতালের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে থাকে। আমাগীকাল রাজনৈতিক দল হরতাল ডেকেছে। যদি হরতালের নামে কেউ সাধারণ মানুষের জান-মালের ক্ষতি করার চেষ্টা করে, তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
শনিবার দুপুরে রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে রাজধানীর কাকরাইল, নয়াপল্টন, মতিঝিল, ফকিরাপুলসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপির কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পল্টনের নাইটিঙ্গেল মোড়, কাকরাইল, দৈনিক বাংলা মোড় এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় পুলিশের এক কনস্টেবল নিহত হন। আহত হন আরও ৪১ পুলিশ সদস্য। এছাড়াও বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজধানীতে একাধিক গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। সেই সঙ্গে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে দুটি অ্যাম্বুলেন্সেও অগ্নিসংযোগ করেছে।
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, আজ পল্টন ও এর আশপাশ এলাকায় বিএনপিসহ আরও বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ছিল। অনুমতি গ্রহণের সময় বিএনপি নেতৃবৃন্দ নিজেরাই উল্লেখ্য করেন, বিজয়নগর থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত তারা এক থেকে এক লাখ বিশ হাজার লোকের জমায়েত করবেন। তাদের সমাবেশে কেউ যেন বাধাগ্রস্ত না করে এবং নাশককতামূলক কর্মকাণ্ড না চালাতে পারে, সেজন্য পুলিশসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সার্বিক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু সকাল ১০টা নাগাদ বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী কাকরাইল মোড় ও এর আশপাশে অবস্থান গ্রহণ করে। তারা এ সময় বিনা-কারণে বাস ও বিভিন্ন যানবাহনে ভাঙচুর করে।
এর কিছুক্ষণ পর তারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে অতর্কিত হামলা করে এবং গেট ভেঙে ফেলে। এক পর্যায়ে লাঠিসোঁটা হাতে বাসভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং সেখানেও ভাঙচুর চালায়। এরপর পুলিশি বাধার মুখে তারা বাসভবন থেকে বের হয়ে যায়। এরপর তারা পার্শ্ববর্তী সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বাসভবন জাজেস কমপ্লেক্সে আক্রমণ চালায় এবং রিসেপশন কক্ষে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। এছাড়ার জাজেস কমপ্লেক্সের সিসিটিভি ক্যামেরাসহ আশপাশের পুলিশের শত শত সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে।
সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সাংবাদিকরা আমাদের বন্ধু, সাংবাদিকরা জনগণের বন্ধু। এই ঘটনাটি যেহেতু ব্যস্ততার কারণে আমার নজরে এখনো আসেনি। যদি সেই ধরনের কোনো কিছু হয়ে থাকে, তাহলে সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কালের আলো/ডিএস/এমএম