নির্বাচনে অংশ নেওয়ার নামে নাটক করেছে বিএনপি : কাদের

প্রকাশিতঃ 6:45 pm | January 01, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার নামে নাটক করেছে বিএনপি। সেটা সারাবিশ্বকে দেখানোর জন্য এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি তারা গ্রহণ করেনি।

মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এদিন আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করার কথা থাকলেও তা প্রথমে বাতিল করা হয়। পরে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী মতবিনিময় করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি অবাক হয়েছি, এতবড় দল বিএনপি কিন্তু তাদের কোনও সাংগঠনিক অবকাঠামোই নেই। তারা যে আন্দোলন করতে পারেনি, তাদের সাংগঠনিক কাঠামোতে দুর্বলতা— এটাই ছিল বড় কারণ। এবারকার নির্বাচনে দেখা গেছে, তারা তাদের সেই সাংগঠনিক শক্তিটা প্রদর্শন করতে পারেনি। তাদের অবস্থা এতই দুর্বল ও নড়বড়ে সংগঠন যে, তারা বিভিন্ন কেন্দ্রে, তাদের মধ্যে যাদেরকে হেভিওয়েট বলা হয় তারাও নিজেদের কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারেননি। কোথাও তাদের পোস্টার-ব্যানার না থাকাটা কিসের লক্ষণ? নির্বাচনে হারার আগেই তারা হাল ছেড়ে দিয়েছেন, তাহলে নির্বাচন করবে কেমন করে? নির্বাচন করার মতো কোনও প্রস্তুতিই তাদের মধ্যে ছিল না। তবে মওদুদ আহমদ সাহেবের সঙ্গে আমি এমন জয় আশা করিনি। আমি ভাবছিলাম তিনি থাকবেন, ওনার এজেন্টরা থাকবেন, তাহলে তো ভোটের ব্যবধানটা অনেক কমে যেত। এত ব্যবধান হতো না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবার তাদের পরাজয়টা ছিল অবধারিত। পরাজয়টা হয়তো কোনও কোনও জায়গায় অস্বাভাবিক মনে হয়, সেটাও তাদের ভুলের কারণে। আপনি এজেন্ট দেবেন না, তাহলে নির্বাচনে অংশ গ্রহণের কী প্রয়োজন ছিল? আপনি ব্যানার-পোস্টার করবেন না কেন? যদি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেন, তাহলে প্রচারে পিছিয়ে ছিলেন কেন?’

এসময় একাদশ সংসদ নির্বাচনে জনগণের রায় মেনে নিয়ে শপথে অংশ নেওয়ার জন্য ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের আহ্বান জানান তিনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি এখনও মনে করি, তারা জনগণের রায়কে অপমান করবেন না। তারা গতবার নির্বাচন বর্জন করে ভুল করেছেন। এবারও জনগণ যে রায় তাদের দিয়েছে, এতে তাদের সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির ব্যাপার আছে। এর মধ্যে যে কয়জন নির্বাচিত হয়েছেন, তারা জনগণের রায়ে নির্বাচিত হয়েছেন। জনগণের রায়কে যেন অসম্মান না করেন— এটা আমি এই আহ্বান জানাতে চাই।’

নির্বাচন প্রত্যাখান করে বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণাকে আওয়ামী লীগ কীভাবে দেখছে, জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন করার মতো দেশে কোনও অভজেকটিভ কন্ডিশন নেই এবং আন্দোলনে অংশ নেওয়ার মতো কোনও সাবজেকটিভ প্রিপারেশনও তাদের নেই। এ অবস্থায় আন্দোলনের সূত্র তাদের বিরুদ্ধে। গতকাল (সোমবার) সংবাদ সম্মেলনে তাদের নেতাদের চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখেছেন? এত নার্ভাস, তারা হতাশায় ভেঙে পড়েছেন। নেতারাই হতাশায় ভেঙে পড়েছেন, কর্মীরা কীভাবে আশাবাদী হবেন? কর্মীদের মধ্যে কীভাবে গতি পাবে? আন্দোলন করতে হলে সেরকম চেতনা দরকার, সেরকম মানসিকতা দরকার, সু-সংগঠিত করতে সেরকম প্রস্তুতি দরকার। সেই প্রস্তুতিটা তাদের মধ্যে আছে বলে মনে হয় না। যদি থাকতো তাহলে সারাদেশে তাৎক্ষণিক একটা মিছিল করতে পারতো, এরকমটাও দেখলাম না। বিএনপি অচিরেই কোনও আন্দোলন গড়ে তুলবে— এটা ভাবার কোনও কারণ নেই।’

ইশতেহারে দেওয়া ওয়াদাগুলো পূরণ এবং বাস্তবায়নই নতুন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে এ সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মন্তব্য করেন। এবারের নির্বাচন ৫৪ ও ৭০ সালের মতো হয়েছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সারাদেশে যে গণজোয়ার, ৭০ সালের পর আমরা এমন জোয়ার দেখিনি। ৭০ সাল ও ৫৪ সালের নির্বাচনের ফলাফল যেমনটা নৌকার পক্ষে হয়েছিল, এবারও সেরকমটাই হয়েছে।’

জাতীয় পার্টি এবারেও প্রধান বিরোধী দল হিসেবে অবস্থান করছে, সেক্ষেত্রে তাদেরকে মন্ত্রীত্ব দেওয়া হবে কিনা, প্রধান বিরোধী দল হিসেবে রাখা হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর এবিষয়ে স্বিদ্ধান্ত জানানো যাবে।’

কালের আলো/এএ/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email