মস্কোতে হামলা চালাতে ইউক্রেনকে বারণ করলেন ট্রাম্প
প্রকাশিতঃ 9:30 am | July 16, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কলের আলো:
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে হামলা চালানো ইউক্রেনের উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এর আগে সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গত ৪ জুলাই এক ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় ট্রাম্প ইউক্রেনকে রাশিয়ার ওপর হামলা আরও বাড়ানোর উৎসাহ দিয়েছেন।
তবে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ইউক্রেনের উচিত মস্কোয় হামলা না চালানো। খবর বিবিসির।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের ওই প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানতে চেয়েছিলেন— যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র দেয়, তাহলে তারা কি মস্কোতে হামলা চালাতে পারবে কিনা?
তবে এই সপ্তাহে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এমন কিছু করতে চায় না। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপে ট্রাম্প আসলে পরিস্থিতি বোঝার জন্য প্রশ্ন করেছিলেন, কাউকে হত্যার উসকানি দিতে চাননি।
প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, এই যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং হত্যাযজ্ঞের অবসান ঘটাতে তিনি (ট্রাম্প) নিরন্তর চেষ্টা করছেন।
এর আগে গত সোমবার ট্রাম্প ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র পাঠাবে। একইসঙ্গে তিনি রাশিয়াকে হুঁশিয়ারি দেন, ৫০ দিনের মধ্যে যদি যুদ্ধবিরতিতে দেশটি না আসে, তাহলে রাশিয়ার বাকি বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
নতুন অস্ত্র সহায়তায় কী কী রয়েছে তা স্পষ্ট না হলেও ট্রাম্প বলেন, প্রতিরক্ষামূলক প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রসহ “সবকিছু” এর মধ্যে থাকবে।
সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটে জানিয়েছেন, এই অস্ত্রচুক্তির বিস্তারিত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও ইউক্রেন এখনো আলোচনায় আছে।
এদিকে জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন মাসে রাশিয়া ইউক্রেনে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে যাতে ২৩০ জনের বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। তিন বছরের যুদ্ধের মধ্যে এটি একটি মাসে সর্বোচ্চ প্রাণহানি।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস আরও জানায়, ট্রাম্পের এই প্রশ্ন (মস্কোতে হামলার বিষয়ে) এসেছিল পুতিনের সঙ্গে একটি ‘খারাপ’ ফোনালাপের পরের দিন।
পত্রিকাটি জানায়, এরপর জেলেনস্কিকে ফোন করে ট্রাম্প প্রশ্ন করেন, ভলোদিমির, তুমি কি মস্কোতে হামলা চালাতে পারো? সেন্ট পিটার্সবার্গেও?
মূলত চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দেওয়া অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভেতরে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে ইউক্রেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি এই যুদ্ধ শেষ করতে চান। কিন্তু বাস্তবে কাজটি তার কল্পনার চেয়ে অনেক জটিল হয়ে উঠেছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কার্যকর আলোচনা না হওয়ায় তিনি হতাশ। এ কথা তিনি এখন নিজেই স্বীকার করেছেন।
সোমবার বিবিসিকে ট্রাম্প বলেন, তিনি পুতিনের আচরণে “হতাশ” হলেও, তিনি হাল ছেড়ে দেননি বা “তার সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়নি”।
তিনি বলেন, আমি চেষ্টা করছি তাকে বোঝাতে যাতে ইউক্রেনে মানুষ মারা না যায়। মাঝে মাঝে মনে হয় কাজ হয়ে যাচ্ছে, হঠাৎ দেখি পুতিন কিয়েভে কোনো একটা ভবন ধ্বংস করে দিচ্ছেন।
চলতি বছরের শুরুতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দুটি শান্তি আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তবে এরপর আর কোনো বৈঠক হয়নি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মঙ্গলবার বলেন, ট্রাম্পের অস্ত্র পাঠানোর ঘোষণা এবং নতুন শুল্ক আরোপ যুদ্ধ বন্ধের সংকেত নয় বরং এটি যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার বার্তা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
কালের আলো/এএএন