তৈরি হতে পারে অশান্ত পরিবেশ, সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী 

প্রকাশিতঃ 8:44 pm | June 21, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকায় দেশে অশান্ত পরিবেশ তৈরি হওয়ার শঙ্কায় পুলিশ বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন: জীবন-মান রক্ষায় পুলিশই হচ্ছে শেষ ভরসা : প্রধানমন্ত্রী 

তিনি বলেছেন, আমরা চাই আমাদের দেশ শান্তিতে থাকুক। একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকলেই আমরা অর্থনৈতিক উন্নতি করতে পারব। যদিও আজকে বিশ্বব্যাপী যে সমস্যা একদিকে করোনাভাইরাস অতিমারি, তারপরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যার ফলে সারা বিশ্বেই আজকে খাদ্যের অভাব। সারা বিশ্বেই আজকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। একটা অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আমাদেরকেও সতর্ক থাকতে হবে।

মঙ্গলবার (২১ জুন) বিকেলে পদ্মা সেতু দক্ষিণ আর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের পদ্মা সেতু উত্তর থানাসহ পুলিশের পাঁচটি বিশেষ কার্যক্রমের ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ আয়োজনে যুক্ত ছিলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতু উত্তর থানা ও পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার কার্যক্রম, দ্বিতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশ পুলিশের নির্মিত ১২০টি গৃহ হস্তান্তর, ১২টি পুলিশ হাসপাতালের আধুনিকায়ন, বাংলাদেশ পুলিশের ৬টি নারী পুলিশ ব্যারাক এবং অনলাইন জিডি কার্যক্রমেরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে যা পারবেন, উৎপাদন করবেন। পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন জায়গা, ব্যারাক আপনারা যা পারেন নিজেরা একটু উৎপাদন করেন, কিছু জিনিস আপনারা নিজেরা করে নিতে পারেন, যাতে অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না বা বাজারের ওপরে চাপ পড়বে না।

তিনি বলেন, এভাবে যদি আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিই যে এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখব না, আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, আমাদের খাদ্যপণ্য আমরা উৎপাদন করব, এই যে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা, আমাদের ওপর যেন কোনো প্রভাব ফেলতে না পারে।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদেরকে অনেক ভর্তুকিও দিতে হচ্ছে, আপনারা জানেন। সেটা আমরা দিয়েও যাচ্ছি, চেষ্টা করে যাচ্ছি। যদি আমরা নিজেরা নিজেদের উদ্যোগ নিই তাহলে আমরা মনে করি যে আমরা বিশ্ব থেকে অনেক ভালো থাকতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘এমনকি উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে, এমনকি ইংল্যান্ডের মতন জায়গায় একটা পরিবার কতটুকু ভোজ্যতেল কিনতে পারবে, কতটুকু খাদ্য কিনতে পারবে সেগুলো কিন্তু মেপে দেয়া হচ্ছে, কাউকে কিন্তু অধিক পরিমাণে কিনতে দেয়া হচ্ছে না।

‘জার্মানির মতো জায়গাতেও সে অবস্থা। ইউরোপ এবং আমেরিকার অবস্থা আরও খারাপ। সেখানে প্রত্যেকটা খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দেশে আমরা এখনও আমাদের প্রাণপণ চেষ্টা হচ্ছে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক সময় পুলিশের থানায় যেয়ে কারও কারও পক্ষে ডায়েরি করা সম্ভব হয় না অন্যায় অবিচার হলে। অনেক সময় বয়স্ক লোকও থাকেন, আবার অনেক সময় পরিবেশের কারণেও যেতে পারেন না, সে ক্ষেত্রে তারা যেন যে যেখানে অবস্থান করছেন কিংবা নিজের ঘরে বসেও যদি কোনো সময় কোনো রকম সমস্যায় পড়েন বা আক্রান্ত হন তারা যেন সাধারণ ডায়েরিটা অনলাইনে করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অর্থাৎ পুলিশ সেবা ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে মানুষকে দেয়া হবে।’

আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে পুলিশকে আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পুলিশ তাহলে আরও বেশি জনবান্ধব হবে, তাদের সেরাটা জনগণ আরও পাবে।’

হলি আর্টিজেনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরপর থেকে তেমন কোনো বড় ঘটনা কিন্তু ঘটেনি। যখন যেখানে ঘটতে গেছে পুলিশ জীবন দিয়ে হলেও এই সন্ত্রাস দমন করেছে। যেমন সিলেটের ঘটনা বা শোলাকিয়া ময়দানের ঘটনা। পুলিশকে নিজের জীবন দিতে হয়েছে। কিন্তু তারা জঙ্গিবাদকে মোকাবিলা করেছে এবং দমন করেছে।’

পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা সহযোগিতা বাড়াতে ১২টি জেলায় পুলিশ হাসপাতাল আধুনিকায়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে কটা বাকি আছে সেগুলো ধীরে ধীরে করে ফেলা হবে।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশ সব থেকে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে। কাজেই সঙ্গে সঙ্গে যেন চিকিৎসাটা পায় সেই ব্যবস্থাটা আমরা করতে চেয়েছি।’

কালের আলো/এসবি/এমএম

Print Friendly, PDF & Email