ওয়াসার পানির উৎসে জীবাণু নেই, প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসার পর মুখে কুলুপ ষড়যন্ত্রকারীদের

প্রকাশিতঃ 7:46 pm | May 01, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

রাজধানীতে ডায়রিয়া বা কলেরার জন্য দায়ী করা হচ্ছে ঢাকা ওয়াসার পানিকে। কোন কোন গণমাধ্যম বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেনে যারা অনির্বাচিত সরকারের পক্ষে লম্ফঝম্ফ করে বেড়িয়েছেন তাদের সরাসরি অভিযোগের তীর ঢাকা ওয়াসার দিকেই। একটি ইংরেজি গণমাধ্যম এক ধাপ এগিয়েই বিভ্রান্তি ছড়াতে লিখেছিল- ওয়াসার পানিতে ভিব্রিও কলেরার জীবাণু পাওয়া গেছে।

কোন রকম গবেষণা বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই সবজান্তার মতোই তাঁরা অভিযোগের ফুলঝুড়ি আওড়েছে। অথচ এই অভিযোগের নূন্যতম কোন ভিত্তি নেই। ঢাকা ওয়াসার পানিতে অন্যান্য জীবাণু থাকলেও কলেরার জীবাণু ঢাহা মিথ্যাচারেরই নামান্তর। মূলত জনমনে আতঙ্ক ছড়াতেই এমন কূটকৌশল থিওরি প্রয়োগ করেছে বিরাজনীতিকরণের খোয়াব দেখা চক্রটি।

কিন্তু গত বৃহস্পতিবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকের অনির্ধারিত আলোচনায় সাফ সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ওয়াসার পানির উৎসে কোন ‘জীবাণু’ নেই। তবে বাসাবাড়ির রিজার্ভার এবং ‘বেআইনিভাবে লাইন টানার সময়’ ছিদ্র থেকে ব্যাকটেরিয়া ছড়াচ্ছে।

মন্ত্রিসভায় আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশুদ্ধ পানি পানের বিষয়ে সবাইকে সচেতন করার ওপর জোর দিয়েছেন। ফলত ওয়াসার পানি নিয়ে ওয়ান ইলেভেনের অরাজনৈতিক শক্তির কুশীলবদের নানা বাহানা আর শেষ পর্যন্ত হালে পানি পায়নি।

শুধু তাই নয়, বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মন্ত্রিসভার আলোচনার বিষয়বস্তু বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঢাকার কলেরা পরিস্থিতি নিয়ে অনির্ধারিত এক আলোচনা হয়। সেই আলোচনায় পানি দূষিত হওয়ার কারণের ‘ময়না তদন্ত’ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ওয়াসার সার্বিক কার্যক্রম সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

সূত্র জানায়, মঈন-ফখরুদ্দিন সরকারের অনুকম্পাপুষ্টরা কারণে-অকারণে ছুঁতো খুঁজে বিভিন্ন সময় ঢাকা ওয়াসা এবং তাঁর দক্ষ ও কার্যকর নেতৃত্ব ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে ঘায়েল করতে ঘৃণ্য কায়দায় কলকাঠি নাড়েন। কিন্তু প্রতিবারই তাদের সব উদ্যোগ-আয়োজন ভেস্তে গেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় ও বলিষ্ঠ সিদ্ধান্তের দৌলতে।

ঢাকা ওয়াসা নিয়ে বাগাড়ম্বর কোন সময়েই হালে পানি পায়নি। উল্টো নানা সঙ্কটে ওয়াসার নেতৃত্ব নিজেদের বিচক্ষণতার প্রমাণ দেওয়ায় ফুটো বেলুনের মতোই চুপসে যেতে হয়েছে কুচক্রী-ষড়যন্ত্রকারীদের।

একই সূত্র জানায়, এবার ডায়রিয়ার ব্যাপক প্রকোপ দেখা যাওয়ার পর থেকেই ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে আবারও ঢাকা ওয়াসাকে ‘টার্গেট’ করে অপপ্রচার ছড়াতে শুরু করে। মোটা দাগে তাঁরা ওয়াসাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করায় জনসম্মুখে।

অথচ তাদের হাতে কোন রকম গবেষণা প্রতিবেদন নেই। অবিবেচনাপ্রসূত কাল্পনিক কায়দায় সেবাধর্মী একটি প্রতিষ্ঠানকে হেয় করতেই কল্পিত অভিযোগ উত্থাপন করতে থাকে। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ওয়াসার বিষয়ে বক্তব্যে পুরো বিষয়টি পরিস্কার হয়ে গেছে। এর মাধ্যমে মূলত ষড়যন্ত্রকারীরাও মুখে কুলুপ আঁটতে বাধ্য হয়েছেন। সবকিছু দিবালোকের মতো উদ্ভাসিত হওয়ায় মুখ ঢেকে পিছু হটেছেন সেই কুশীলবরা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক শেষে সচিবালয়ে গত বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেছেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে ১০-১২ দিন ধরে ট্র্যাক করছি। আইসিডিডিআর’বি, আইইডিসিআর, ডিজি হেলথ, ওয়াসার সঙ্গে কথা বলেছি। কয়েকটি কারণ আমরা ফাইন্ড আউট করেছি। বিষয়গুলো কেবিনেটেও আলোচনা হয়েছে।

“আমরা চেক করে দেখলাম, ওয়াসার পানির সোর্সে কোথাও ব্যাকটেরিয়া নেই। অনেক বাসাবাড়িতে ওয়াসা থেকে পৃথক লাইনে মোটর দিয়ে পানি টেনে নেওয়া হয়। তখনই বাইর থেকে ব্যাকটেরিয়াটা মিশে যায়- এটা অন্যতম একটা কারণ। অলমোস্ট সব জায়গাতেই এটা হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় এবার একটু বেশি হল।”

কালের আলো/এনএল/এসবিএফ

Print Friendly, PDF & Email