জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকার আরও কঠোর হতে বাধ্য হবে: কাদের

প্রকাশিতঃ 3:52 pm | June 03, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলোঃ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, করোনার সংক্রমণ রোধে মানুষ সচেতনতার প্রাচীর গড়ে তুলতে না পারলে জনস্বার্থে এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকার আরও কড়াকড়ি আরোপ তথা কঠোর হতে বাধ্য হবে।

বুধবার (৩ জুন) সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবন থেকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।

জনসাধারণের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার সাধারণ ছুটি তুলে নেওয়ার সময় এবং আগে-পরে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও কিছু কিছু মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানতে শৈথিল্য প্রদর্শন করেছে যা সংক্রমণের মাত্রাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে।

তিনি বলেন, মানুষের এই অবহেলা নিজের জন্যই শুধু নয়, পরিবার, সমাজ তথা অন্যদের জন্য ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। তাই জনসাধারণকে সচেতনতার প্রাচীর গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি, না হয় জনস্বার্থে এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকার আরও কড়াকড়ি আরোপ তথা কঠোর হতে বাধ্য হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, সংক্রমণ বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকার এ সংক্রমণ রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং নিচ্ছে। শেখ হাসিনার সরকার জনগণের পাশে আছে সব সময়। ক্রম অবনতিশীল এ পরিস্থিতিতে সরকার সংক্রমিত এলাকা এবং নানা দিক বিবেচনায় নিয়ে এলাকাভিত্তিক বা জোন ভিত্তিক করার বিষয়টি ভাবছে। বিশ্লেষকগণ এ বিষয়ে কাজ করছে, কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছে। জনগণের ঘনত্ব, সংক্রমণের মাত্রা, রোগীর সংখ্যা, পার্শ্ববর্তী এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা টেস্টিং সুবিধা, চিকিৎসা সুবিধা সমূহ নানা বিষয় এর সাথে জড়িত। বিস্তারিত পরিকল্পনা পাওয়া গেলে যাচাই-বাছাই করে সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

গণপরিবহন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অধিকাংশ পরিবহন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে। আবার কিছু কিছু অভিযোগও পাচ্ছি। এজন্য প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানোর কথা বলেন। যাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, নিজেদেরকেও সচেতন থাকতে হবে, না হয় বাস টার্মিনাল এবং বাস যাত্রা হতে পারে সংক্রমণের কেন্দ্র। গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ব্যাপারে আমি মালিক-শ্রমিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। একই সঙ্গে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছি।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংকট সমাধানে বিরোধীদলসহ নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে কিন্তু বিএনপি সার্কাসের হাতির মতো সমালোচনা বৃত্তে আবর্তিত হচ্ছে।

করোনা সংক্রমণ রোধে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, সংক্রমণ রোধে দলীয় নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের কতিপয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেমন-অফিস-আদালত দোকান-পাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্রই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সংক্রমণ রোধে কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করা। গণপরিবহন চলাচলের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা। সবসময় মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলা। দলীয় নেতাকর্মীরা নিজের স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলবেন এবং তা প্রতিপালনের জনগণকে সচেতন করবেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সংক্রমণ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। জনপ্রতিনিধিরা অঞ্চলভিত্তিক তদারকির মাধ্যমে সংক্রমণের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতেও ভূমিকা রাখবেন। আপৎকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অসহায় দুস্থ মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার নির্দেশ দেন।

দলীয় নেতা-কর্মীদের এ সকল নির্দেশনা প্রতিপালন এবং দৃঢ় মনোবল দিয়ে বিরোধী লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকলকে সচেষ্ট হতে হবে। অতীতের যেকোনো দুর্যোগে মতো আমাদের ঐক্যবদ্ধ সংকট উত্তরণের পথ সুগম করবে।

কালের আলো/এনএম/বিআর