বাস্তবেও ‘দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ’ গফরগাঁও

প্রকাশিতঃ 1:08 pm | April 17, 2018

বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সবচেয়ে নিরাপদ ও শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে বিবেচিত হয় গোপালগঞ্জ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ জন্মভূমির বাসিন্দারা বঙ্গবন্ধু আর আওয়ামী লীগের ভক্ত। শেখ হাসিনা আর নৌকা ছাড়া কিছুই বুঝেন না। গোপালগঞ্জের মতোই অনেকটা অভিন্ন চিত্র ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের।

এখানকার বাসিন্দারাও নিখাদ নৌকাপ্রেমী। বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনা অন্ত:প্রাণ। জাতীয় নির্বাচনেও এখান থেকে ভোটাররা বার বার নৌকার প্রার্থীকেই বিজয়ী করে সংসদে পাঠিয়েছেন। ফলে গফরগাঁও’র নামের পাশে যুক্ত হয়েছে ‘দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ’ উপমা।

অবশ্য গফরগাঁওয়ের এভাবে ‘দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ’ হয়ে ওঠার নেপথ্যে রয়েছেন প্রয়াত কিংবদন্তি রাজনীতিক আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ। জীবদ্দশায় তিনিই গফরগাঁওকে আওয়ামী লীগের ‘দুর্গ’ হিসেবে গড়েছেন। বার বার ভোটযুদ্ধে বিএনপিকে পরাস্ত করে রেকর্ড গড়েছেন।

তিনবারের এ সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর এখানে ‘নৌকা’র কান্ডারী’র ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তাঁরই রক্তের উত্তরাধিকার, সাবেক ডাকসাইটে ছাত্রলীগ নেতা ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল।

বাবা’র মতোই উন্নয়ন আর জনকল্যাণকে ‘নিয়ামক’ হিসেবে বেছে নেন তরুণ এ সংসদ সদস্য। নিশ্চিত করেন জনমানুষের ক্ষমতায়ন ও অংশীদারিত্ব। ফলে নির্বাচনী রাজনীতিতেও গফরগাঁও বাবেল গোলন্দাজের নেতৃত্বে একাট্টা। এ আসনটিতে সংসদের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দল বিএনপি’র মাথা তুলে দাঁড়ানোরও কোন নজির নেই।

আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বলছেন, গফরগাঁওয়ের আওয়ামী লীগ দেশের যে কোন এলাকার চেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাবেল গোলন্দাজ রেকর্ড ভোটে এমপি হবার পর প্রতিটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তিনি দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করে তৃণমূলে দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্য ও শক্তির নিদর্শন স্থাপন করেছেন। ফলে ‘দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ’ স্বীকৃতির প্রকৃত দাবিদার গফরগাঁওই।

এমন দাবির বিষয়টি খোলাসা করে দলীয় প্রার্থী হিসেবে জিতে আসা এক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, বাবেল গোলন্দাজের ক্যারিশমাটিক নেতৃত্বের দৌলতেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, ১৫ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়মাল্য পড়েছেন।

জেলা পরিষদ নির্বাচনেও উপজেলার ২৪৪ টি ভোটের মধ্যে ২৪৩ টি ভোট পেয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী। এমন রেকর্ড ফলাফলই প্রমাণ করে কথাই নয় বাস্তবেও গফরগাঁও দেশের ‘দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ’। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এমপি বাবেল গোলন্দাজের প্রতি স্থানীয় ভোটারদের আস্থা ও বিশ্বাস অটুট রয়েছে, এমন ফলাফল তাঁরই ইঙ্গিত’ যোগ করেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান।

ভোট রাজনীতির এমন অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ জানান দেয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই নিজেকে অন্য রকম এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন আলতাফ হোসেন গোলন্দাজের এ উত্তরসূরী।

দলটির এক নেতা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভোটের মাঠে এমপি বাবেলের সঙ্গে মনোনয়ন প্রতিযোগিরা অনেকটাই নি:সঙ্গ। কুটকৌশলকারী নেতারা কেউ গফরগাঁওয়ে ভিড়তে পারেন না। হয় ময়মনসিংহ নয়তো ঢাকা থেকেই তারা হাঁকডাক মারেন। আন্ডারগ্রাউন্ড সভা-সমাবেশ করে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে লম্ফঝম্ফ করেন।’

টিপ্পনি কেটে উপজেলা ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, ‘দল নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী কথিত সেইসব নেতারা ‘প্রবাসী’ হিসেবে পরিচিত। এলাকায় তাদের জনভিত্তি নেই। দলীয় নেতা-কর্মীদের নুন্যতম সমর্থনও নেই। বুক পকেটে তাঁরা বিরহ নিয়ে ঘুরেন। খেই হারিয়েই মাঝে মধ্যে আবোল-তাবোল বকেন।’

বাবা’র চির অনুপস্থিতির সময়েও গফরগাঁও আওয়ামী লীগের ‘দুর্ভেদ্য ঘাঁটি’ হিসেবে ধরে রাখার মূল কারিগর স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল এসব বিষয়ে কালের আলোকে বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমার আদর্শ। আমি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার একজন কর্মী। আর গফরগাঁওয়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বিরল ভালবাসা রয়েছে, সেখানে আমি আস্থাশীল। কেননা গফরগাঁওয়ের মাটি ও মানুষ জননেত্রী শেখ হাসিনার।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গফরগাঁওবাসীকে অভূতপূর্ব উন্নয়ন উপহার দিয়েছেন। আমার এলাকার মানুষের আত্নবিশ্বাস রয়েছে নেত্রী থাকলে গফরগাঁওয়ে উন্নয়ন হবে।’

 

কালের আলো/আরএইচ/এসএ/ওএইচ

Print Friendly, PDF & Email