রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতি ঘন্টায় জন্ম নিচ্ছে ৩ নবজাতক

প্রকাশিতঃ 9:51 pm | August 28, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিঘন্টায় প্রায় ৩ নবজাতকের জন্ম হচ্ছে। এক বছরে সেখানে জন্ম নিয়েছে প্রায় ২২ হাজার নবজাতক। তবে জন্ম নেওয়া এসব শিশুকে নাগরিকত্ব দিবে না বাংলাদেশ এমনটাই জানিয়েছে বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যস্থাপনা ও ক্রাণ মন্ত্ণালয়ের শরণার্থীবিষয়ক সেল।

বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের শরণার্থীবিষয়ক সেলের তথ্যমতে, গত ২৫ আগস্ট ২০১৭ থেকে ১৯ আগস্ট ২০১৮ পর্যন্ত কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫৫৭ জন, প্রতিদিন জন্ম নিচ্ছে ৬০ জন নবজাতক, আশ্রয়প্রার্থী এতিম শিশুর সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৪১ জন, গর্ভবতী নারীর সংখ্যা ৩৮ হাজার ৩৩৮ জন। এছাড়া রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শূণ্য থেকে ১০ বছরের শিশুর সংখ্যা ৪ লাখ। এসব শিশুদের মধ্যে ৫২ শতাংশ স্কুলে যায়।

এ বেপারে কথা হয় কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন আব্দুস সালামের সাথে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যেসব রোহিঙ্গা শিশুরা জন্ম নিচ্ছে তাদের কোনো নিবন্ধন আমরা করছি না। যেহেতু তারা শরণার্থী তাই তাদের মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। আমাদের সরকারি হিসেবে প্রতিদিন ষাটের মতো নবজাতক জন্ম নিচ্ছে।’

এসব শিশুর নিবন্ধন নিয়ে কোন সিন্ধান্ত না হলেও তাদের জন্মনিবন্ধনের বেপারে সরকার ভাবছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যস্থাপনা ও ক্রাণ মন্ত্ণালয়ের শরণার্থীবিষয়ক সেলের প্রধান যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হাবিবুল কবির চৌধুরী। তিনি বলেন, কক্সবাজারের গত এক বছরে জন্ম নিয়েছে প্রায় ২২ হাজার রোহিঙ্গা নবজাতক। প্রাথমিকভাবে এসব শিশুর জন্মনিবন্ধনের করা কথা ভাবছে সরকার। তবে নিবন্ধন করা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।

রোহিঙ্গা শিশুদের কোনো নাগরিকত্ব বাংলাদেশ দেবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে জন্ম নেয়া রোহিঙ্গা নবজাতকদের নাগরিকত্ব দেবে না বাংলাদেশ। আমরা চাই তাদের নাগরিক মর্যাদা দিয়ে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়া হোক।

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়টি বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারে আলোচনা হয়েছে। যাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্বের সত্যতা পাওয়া যাবে তাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে। এছাড়া যাদের কাছে কোনো নাগরিক পরিচয় নেই তাদের ফেরাতেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

যুগ্ন সচিব আরো বলেন, বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেয়ার পরে প্রথমে তাদের ক্যাম্পে অশ্রয় দেয়া হবে। পরে সেখান থেকে তাদের নিজ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা এবং অন্য এলাকায় মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় দেশটির সেনাপ্রধানসহ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের অবশ্যই তদন্ত ও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে বলে তাগিদ দিয়েছে জাতিসংঘ।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন ও গণহত্যার শিকার হয়ে গত বছর ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা।

কালের আলো/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email