খুলেছে সম্ভাবনার দুয়ার, কুয়েতে যাচ্ছে আরও ৩৮৯ সেনাসদস্য
প্রকাশিতঃ 9:47 am | May 31, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
টানা ২৮ বছর যাবত মরুভূমির দেশ কুয়েত পুনর্গঠনে নিজেদের মেধা ও শ্রম ঢেলে দিচ্ছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ১৯৯১ সাল থেকে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় দেশটির নিরাপত্তা ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ যে ভূমিকার সূচনা হয়েছিল এখনো বজায় রয়েছে সেই ধারাবাহিকতা।
আরো পড়ুন: সেনা মালঞ্চে জাতির সূর্য সন্তানদের মিলনমেলা, হৃদয়গ্রোথিত আবেগে স্মরণ বঙ্গবন্ধুকে
অবশ্য এরই মধ্যে আবারো নতুন করে এসেছে সুখবর। তেল সমৃদ্ধ এ দেশটিতে অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠনের (ওকেপি) অংশ হিসেবে সেখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওকেপি-৯ কন্টিনজেন্টের সদস্য সংখ্যা ২৫০ জন থেকে বেড়ে ৬৩৯ জনে উন্নীত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) আরো ৩৮৯ সেনাসদস্যকে কুয়েতে পাঠানোর অনুমোদনের পাশাপাশি শিগগির এসব জনবল সেখানে পাঠানোর জন্য সেনাবাহিনীকে অনুরোধও জানিয়েছে কুয়েত সরকার।
ফলে নতুন করে আবারো সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও দূরদর্শিতার দৌলতেই এমনটি সম্ভব হয়েছে।
আরো পড়ুন: আত্মশক্তিতে বলীয়ান মুক্তিযোদ্ধারা, সেনাপ্রধানের কন্ঠে চির আরাধ্য স্বাধীনতার সার কথা
একই সঙ্গে কুয়েত সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতাও এ সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে অন্যতম নিয়ামকের ভূমিকা পালন করেছে।
মুসলিম বন্ধুপ্রতিম দু’টি দেশের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মর্যাদা ও পরিশ্রমের অনন্য এক স্বীকৃতি হিসেবেও জনবল বৃদ্ধির এ বিষয়কে বিবেচনা করা হচ্ছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওকেপি -৯ কন্টিনজেন্ট সরাসরি কুয়েতে সশস্ত্র বাহিনীর অধীনে বেশ সফলতার সঙ্গেই বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ কাজে নিজেদের নিয়োজিত রেখে দক্ষতা ও সুনাম অর্জন করেছে।
এর ফলে সৈনিকদের জীবনযাত্রার সার্বিক মানের সঙ্গেই বাংলাদেশেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বাড়ছে।

সূত্র মতে, পারস্য উপসাগরের তীর ঘেষে গড়ে উঠা এ দেশটিকে মাইনমুক্ত ও পুনর্গঠনে এখনো নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা। বিশ্বের অনেক দেশ যেখানে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে সেখানে সাহসিকতার সাথে ঝুঁকিপূর্ণ এ কাজ করে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে গর্বিত সেনাসদস্যরা।
গোটা কুয়েতেই বাংলাদেশের সেনা সদস্যদের নিষ্ঠা, আন্তরিকতা, সাহস, নৈতিক মনোবল আর আত্মত্যাগকে বিশেষ মর্যাদায় দেখা হয়। বাংলাদেশের চেয়ে আট গুণ ছোট এ দেশটিকে গড়ে তোলার প্রধান কারিগরও বলা হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদেরই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পারস্পরিক কল্যাণে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাওয়া বাংলাদেশ ও কুয়েত সেনাবাহিনীর মধ্যকার সুস্পর্ক আরো জোরদার হয় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের সাম্প্রতিক কুয়েত সফরের মধ্যে দিয়ে।
চলতি বছরের ১১ মার্চ থেকে ১৪ মার্চ পর্যন্ত চারদিনের সরকারি সফরে সেনাপ্রধান কুয়েতের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অফ জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ খালিদ আল-খাদের’র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাতে কুয়েতের শীর্ষ এ সেনা কর্মকর্তা বাংলাদেশকে কুয়েতের প্রকৃত বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেন।
একই সূত্র মতে, ওই সময় সেনাপ্রধান তাঁর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতামূলক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কন্টিনজেন্টের সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর অনুরোধ করেন।
ফলপ্রসু এ আলোচনার প্রায় আড়াই মাসের মাথায় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের অনুরোধে সাড়া দেয় কুয়েত সরকার।
ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওকেপি-৯ কন্টিনজেন্টের সদস্য সংখ্যা ২৫০ জন থেকে বেড়ে ৬৩৯ জনে উন্নীত করার অনুমোদন দিয়েছে সেই দেশের সরকার।
এর ফলে আধুনিক ও শক্তিশালী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও কুয়েতের সেনাবাহিনী আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে। অতীতের মতোই কুয়েতের উন্নয়নে নতুন এ বীর সেনানীরাও বিশাল অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।
কালের আলো/এইকেআ/এএএমকে