সেনা মালঞ্চে জাতির সূর্য সন্তানদের মিলনমেলা, হৃদয়গ্রোথিত আবেগে স্মরণ বঙ্গবন্ধুকে

প্রকাশিতঃ 9:14 pm | May 29, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

মহান স্বাধীনতার অগ্রদূত এবং মহানায়ক ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর অবিনশ্বর চেতনা ও মৃত্যুঞ্জয়ী আদর্শকে ধারণ করেই ষোল কোটি বাংলাদেশের অহংকার ও গর্বের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেনারেল আজিজ আহমেদ।

আপোসহীন ও রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্মলাভ করা দেশপ্রেমিক এ বাহিনী প্রতি বছরই পবিত্র মাহে রমজানে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে ইফতার ও নৈশ ভোজের আয়োজন করে। এবারো এ আয়োজনটি কার্যত স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে নিয়ে আসা জাতির বীর সন্তানদের এক মিলনমেলায় পরিণত হয়।

আরো পড়ুন: আত্মশক্তিতে বলীয়ান মুক্তিযোদ্ধারা, সেনাপ্রধানের কন্ঠে চির আরাধ্য স্বাধীনতার সার কথা

এ মিলনমেলায় মুক্তিযুদ্ধের সুমহান চেতনার আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের পথ ধরেই আলোকিত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণের পানসিতে চড়ে দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গৌরবময় পথচলার অমিয় বাণীই উচ্চারণ করলেন সেনবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

বুধবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় ঢাকা সেনানিবাসস্থ সেনা মালঞ্চে নিজের উদ্যোগে অনন্য এ মিলন মোহনায় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ‘আজকের এই দিনে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

আরো পড়ুন: খুলেছে সম্ভাবনার দুয়ার, কুয়েতে যাচ্ছে আরও ৩৮৯ সেনাসদস্য

যার দীপ্ত আহবান ও বলিষ্ঠ আহবানে সূচিত হয়েছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম। সকল শহীদ ও যুদ্ধাহত এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা যারা জাতির জনকের আহবানে সাড়া দিয়ে নিজের জীবনবাজি রেখে ছিনিয়ে এনেছে আমাদের সর্বোচ্চ প্রাপ্তি প্রাণপ্রিয় স্বাধীনতাকে।’

মুক্তিযোদ্ধারা হচ্ছেন আমাদের দেশ তথা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, এমন মন্তব্য করে বঙ্গবন্ধুর অমর, অবিনশ্বর এ চেতনায় উদ্দীপ্ত সেনাপ্রধান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে আমাদের পরম কাঙ্খিত স্বাধীনতা। তাদের অবদান চির স্মরণীয় ও অম্লান।

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে এ ইফতার আয়োজন করতে পেরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সত্যিই গর্বিত, বলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্ম একটি স্বাধীন দেশ অর্জনের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে চির ঋণী হয়ে থাকবে। আপনারা সকলে অনেক কষ্ট করে ইফতার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ায় আমি আপনাদের কাছে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’

‘আপনাদের আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত থেকে উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যেতে পারে এজন্য আপনাদের দোয়া কামনা করছি’ সংযোজন করেন সেনাবাহিনী প্রধান।

এ ইফতার মাহফিলে তিন শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করেন। সেনাবাহিনী প্রধান অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছেই জাতির সূর্য সন্তানদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় অনেক মুক্তিযোদ্ধাই তাকে কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে উঠেন। নিজেদের না বলা অনেক কথাই আওড়াতে থাকেন দেশপ্রেমিক এই বাহিনীর প্রধানের কাছে।

সেনাপ্রধান তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা রেখেই কথা শুনেন এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, নৌ বাহিনী প্রধান আওরঙ্গজেব চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ও মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের উর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা ইফতার মাহফিলে অংশ নেন।

কালের আলো/এইকেআ/এএএমকে