এমপি হবার পর থেকেই নির্বাচনী প্রস্তুতি বাবেল গোলন্দাজের

প্রকাশিতঃ 12:57 pm | February 26, 2018

বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:

গফরগাঁও। দক্ষিণ ময়মনসিংহের বৃহত্তম উপজেলা। রাজনৈতিকভাবে বলা হয় এলাকাটি আওয়ামীলীগের শক্ত ঘাঁটি। নিজের জীবদ্দশায় ময়মনসিংহ-১০ এ আসনে সব ক’টি নির্বাচনে বিএনপিকে ধরাশায়ী করেছিলেন প্রয়াত তিনবারের সংসদ সদস্য আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ।

তার মৃত্যুর পর প্রথমে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং পরবর্তীতে এ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তারই যোগ্য উত্তরসূরী ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল। বয়সে তরুণ এ সংসদ সদস্য কমিটমেন্টে বিশ্বাসী। দলের ভেতরে-বাইরে ও স্থানীয় ভোটারদের কাছে নিজের অবস্থান ও জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন তিনি।

এ সংসদ সদস্য মনে করেন ‘নির্বাচন আসুক পরে দেখা যাবে’ যারা বিশ্বাসী এ তত্ত্বে ভোটে সমস্যা হয় তাদেরই। আর এ কারণেই এমপি হবার দিন থেকেই পরবর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং মাঠে রয়েছেন ফাহমি গোলন্দাজ। তিনি বলেন, এলাকার উন্নয়ন আর জনগণের সুখে-দু:খে পাশে থাকাই আমার কাজ।

বাবার কাছ থেকেই এমনটি শিখেছি। তার দুর্বলতা ছিলেন গফরগাঁওয়ের মানুষ। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তার অসামান্য অর্জন ধরে রেখেই এগুচ্ছি’ যোগ করেন ফ্যাশন সচেতন ও আধুনিক মনস্ক এ রাজনীতিক।

গফরগাঁওয়ের নিজ বাসায় দৈনিক কালের আলো’র সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। আলাপের আগে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি নিরবিচ্ছিন্নভাবে বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে যোগ দেন। যখন কথা বলছিলেন তখনো তার সঙ্গে দেখা করতে আসছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই।

পরিচিত হলেই নাম ধরে তাকে ডাকছেন। খোঁজ খবর নিচ্ছেন। কথাও বলছেন। অল্প শুনেই পুরো বিষয় উপলব্ধি করেন। চেষ্টা করেন সহযোগিতা করার। স্থানীয় জনসাধারণের জন্য তার দরজা সব সময় খোলা জানিয়ে এমপি বাবেল গোলন্দাজ বলেন, বাবার মতো মানুষের আস্থা ও ভালবাসার ঠিকানা হতে চাই।

গফরগাঁওয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা অন্যান্য উপজেলার তুলনায় বেশ নির্জীব। অবস্থাটা এমন কার্যত গফরগাঁও বিএনপি-জামায়াতমুক্ত হয়ে পড়েছে। আর এ এজন্য বিএনপি নেতারা অভিযোগের আঙুল তুলেন স্থানীয় এ সংসদ সদস্যের দিকে।

তবে তাদের অভিযোগ ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে বাবেল গোলন্দাজ বলেন, ‘বিএনপি সাংগঠনিকভাবে এতোটা দুর্বল যে তারা নিজেদের কারণেই নিজেরা কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারে না।

নিজেদের ব্যর্থতার কারণেই তারা অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে। আর এখানকার বাসিন্দারা সবাই নৌকা ও আওয়ামীলীগমুখী, বলতে থাকেন রেকর্ড ভোটে গত সংসদ নির্বাচনে জয়ী এ রাজনীতিক।

তরুণ এ সংসদ সদস্য বলেন, আমার আদর্শ বঙ্গবন্ধু। আমি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার একজন কর্মী। আর গফরগাঁওয়ের প্রতি তার যে বিরল ভালবাসা রয়েছে-সেখানে আমি আস্থাশীল। কেননা গফরগাঁওয়ের মাটি ও মানুষ জননেত্রী শেখ হাসিনার, যোগ করেন তিনি।

মাঠ রাজনীতির পাশাপাশি অনলাইনেও সমান তালে সক্রিয় ফাহমি গোলন্দাজ। তার মতে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে সর্বক্ষেত্রেই অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। কিন্তু অনেক জায়গায় জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ম্যাসেজ যাচ্ছে না। আর এজন্য দায়ী তাদের অনলাইনবিমুখ নীতি।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, আমি এমপি হবার পর পরই থানা ছাত্রলীগকে সভা আহবান করতে বলি। সেখানে ছাত্রলীগের ১৫ ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের উপস্থিত ছিলো। তাদেরকে আমি নির্দেশনা দেই, জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে হবে। এজন্য অনলাইন অ্যাক্টিভিটিস বাড়াতে হবে।

একই সঙ্গে নিয়ম করে দিয়েছি, ছাত্রলীগ করতে হলে সবার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। অনলাইন অন না থাকলে তৃণমূলের দোড়গোড়ায় উন্নয়নের ম্যাসেজ পৌছানো সম্ভব নয়। নেত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজদ জয়কে ফলো করতে হবে।
তার ফেসুবক, টুইটার, ইন্সট্রাগ্রাম আছে। আমি ছাড়া ময়মনসিংহের আর কোন সংসদ সদস্যের ফেসবুক পেইজ ভেরিফাইড না। সাড়ে ৬ লাখের ওপরে লাইক আছে। গফরগাঁওয়ে অনলাইন অ্যাক্টিভিটিস বেশি।’

আওয়ামীলীগের বড় কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি সেটি গফরগাঁও, ময়মনসিংহ বা রাজধানী ঢাকাতেই হোক সেখানে গফরগাঁওয়ের অংশগ্রহণ থাকবেই। আর সেই অংশ গ্রহণ হলো নেতা-কর্মীদের ঢল। এটি কীভাবে সম্ভব প্রশ্ন করতেই দৃঢ়তার সঙ্গে বললেন, ‘আমার বাবা প্রয়াত নেতা আলতাফ গোলন্দাজ সাংগঠনিকভাবে দক্ষ ছিলেন।

তিনি জানতে কীভাবে নেতা-কর্মী তৈরি ও প্রশিক্ষণ দিতে হয়। তার প্রশিক্ষণের কারণেই সেই ধারাবাহিকতা আমি ধরে রেখেছি। গফরগাঁওয়ের জনগণ জননেত্রী শেখ হাসিনা ও নৌকামুখী। এ কারণে অরগাইনজ সুবিধা।

 

কালের আলো/এসএম/আরআই

Print Friendly, PDF & Email