চ্যালেঞ্জ নিতে জানেন সাংবাদিক-রাজনীতিক আরিফুর রহমান
প্রকাশিতঃ 3:01 am | February 26, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
চ্যালেঞ্জ নিতে জানেন দেশের খ্যাতিমান সাংবাদিক ও রাজনীতিক আরিফুর রহমান দোলন। সাপ্তাহিক এই সময় ও ঢাকা টাইমস’র সম্পাদক আরিফুর রহমান একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ (মধুখালী-বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা) আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে চষে বেড়াচ্ছেন ভোটের মাঠ।
বাংলাদেশ কৃষক লীগের সহ-সভাপতি ও ফরিদপুর জেলা আ’লীগের কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুর রহমান স্কুল জীবনেই ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে নাম লেখান। ১৯৮৮ সালে আলফাডাঙ্গা থানা ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।
পরবর্তীতে ঢাকা কলেজের উত্তর ছাত্রাবাস শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি হন। উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতায় অবস্থানকালে পশ্চিমবঙ্গে অধ্যয়নরত ছাত্রলীগের আদর্শের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ছাত্রলীগ পশ্চিমবঙ্গের (ভারত) এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন আরিফুর রহমান।
তাকে ঘিরে এ আসনটিতে পরিবর্তনের স্বপ্ন বুনছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। আসনটিতে দলটির বর্তমান সংসদ সদস্যের ভিত নড়েবড়ে হয়ে ওঠেছে। আলফাডাঙ্গা উপজেলার কামারগ্রামের মুন্সী পরিবারের সন্তান আরিফুর রহমান দোলন সাংবাদিকতার মতো রাজনীতিতেও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে রয়েছেন।
ভোট রাজনীতির মাঠে তাকে ঘিরে চলছে নতুন হিসাব-নিকাশ। আসনটি ধরে রাখার স্বার্থে তাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার জোর দাবি ওঠেছে তৃণমূলে।
দেশের প্রথিতযশা সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা ও সাপ্তাহিক ২০০০ পত্রিকার মাধ্যমে এ পেশায় নাম লেখান। তারপর যোগ দেন দৈনিক প্রথম আলোয়। পত্রিকাটির বিশেষ প্রতিনিধি, উপ-প্রধান প্রতিবেদক এবং সিনিয়র প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন টানা ১০ বছরের বেশি সময়।
পরে যোগ দেন দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিষ্ঠাকালীন উপ-সম্পাদক হিসেবে। পাঠকপ্রিয়তায় পত্রিকাটি নাম্বার ওয়ান পর্যায়ে পৌঁছার পেছনে পত্রিকাটির ওই সময়কার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক নঈম নিজামের পাশাপাশি তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
এরপর দৈনিক আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনের বার্তা সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।
ফরিদপুর-১ (মধুখালী-বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা) আসনে ভোটারদের হৃদয়-মন জয়ের মিশন নিয়ে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে বেড়ানো আরিফুর রহমান দোলন একজন সংবাদকর্মী থেকে রাজনীতিতে আসার গল্প লিখেছেন নিজের ফেসবুক ওয়ালে।
আরিফুর রহমান দোলন লিখেছেন, বিচিত্রা খ্যাত ক্যারিশম্যাটিক ও সৃষ্টিশীল সম্পাদক শাহাদত চৌধুরীর পরম স্নেহ আর ভালোবাসা পেয়েছি। জনকন্ঠ যখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে তখন সুযোগ পেয়েও সেখানে যোগ না দিয়ে প্রায় সদ্য প্রকাশিত প্রথম আলোতে গিয়েছি। আমি চ্যালেঞ্জ নিতে জানি।
জনপ্রিয় ও সবভাবে প্রতিষ্ঠিত জনকন্ঠে আমার মতো জুনিয়র কাজের সুযোগ কতখানি পাবে এনিয়ে নিজের মধ্যে নানা প্রশ্ন ছিল। যদিও নিউ ইস্কাটনের বিশাল অট্টালিকা গনমাধ্যমে কাজ করতে আসা যে কোনো নবীনকে সহজেই টানবে। জনকন্ঠে যোগদানের পক্ষেই কথা বলবে। আমি ওই পথে পা বাড়াইনি নতুন কাগজে কাজ করার চ্যালেঞ্জ নেবো বলে।’
তিনি লিখেছেন, আবার প্রথম আলো ছেড়ে যখন বাংলাদেশ প্রতিদিনে যাই তখন সুহৃদ প্রায় সকলেই রীতিমতো আকাশ থেকে মাটিতে পড়েন। প্রথম আলোর কর্পোরেট টাইপ অফিসের তুলনায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের মগবাজারের অফিসটি ছিল একেবারেই ম্যাড়ম্যাড়ে। দিনেদুপুরেও মশার উপদ্রুব।
শাজাহান সরদার তখন সম্পাদক। নঈম নিজাম ব্যবস্থাপনা সম্পাদক। আমি উপ-সম্পাদক। সম্পাদক তো সম্পাদকই। নঈম ভাই আর আমি যে কি সীমাহীন পরিশ্রমটাই না করেছি। চ্যালেঞ্জ একটাই। এক নম্বর পত্রিকা হতে হবে বাংলাদেশ প্রতিদিন। হলোও।’
পুনরায় নিজের চ্যালেঞ্জ গ্রহণের গল্প বলতে গিয়ে ডাকসাইটে সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন লিখেছেন, ‘আবার চ্যালেঞ্জ নিলাম। বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক পক্ষের অফুরান ভালোবাসা পেয়েছি, পাচ্ছি এখনো। কিন্তু যখন মনে হয়েছে ছাড়তে হবে, ছেড়েছি। এমনকী পদত্যাগপত্র বসুন্ধরা গ্রুপের সম্মানিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরম ভালবাসা প্রদর্শনে ছিড়ে ফেলার পরেও।
সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে। সম্পাদক নঈম নিজামের সাথে ভাতৃত্বের বন্ধন আরও দৃঢ় হয়েছে। স্বল্প সময়ের জন্যে বাংলাভিশন টেলিভিশনে বার্তা সম্পাদক ছিলাম। নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে ইউনিক গ্রুপ, পিএইচপি আর আমান গ্রুপ মালিকানাধীন আমাদের সময়ের উপসম্পাদক, নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে কাজ করলাম।
মন নতুন কিছু করার কথা ভাবছিল। নতুন চ্যালেঞ্জ ঢাকা টাইমস, এই সময় এবং অবশ্যই উদ্যোক্তা। হাঁটি হাঁটি পা পা করেই এগিয়েছি, এগোচ্ছি। একবারে দৌড় হয়না। জানি, মানি।’
নিজের পারিবারিক সমাজকর্মের ইতিহাস তুলে ধরে আরিফুর রহমান জানিয়েছেন, যখন যেখানে থেকেছি চেষ্টা করেছি নিজের জন্মস্থানের কল্যাণের। একটু একটু করে ব্যাপ্তি বেড়েছে। পরিচিত, অপরিচিত অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছে। অকুন্ঠ সমর্থন করেছেন।
আবার ঘনিষ্ঠজনের কেউ কেউও খানিকটা এবং ক্ষেত্র বিশেষ অনেকটা ঈর্ষান্বিত হযেছেন উল্টো। বিনা কারণে নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো নিন্দা মন্দ করতে কার্পন্য করেননি, করছেন না।
দমে যাওয়ার পাত্র আমি নই। সমাজকর্মের ব্যাপ্তি বাড়াতে, দীর্ঘায়িত করতেই প্রকাশ্য রাজনীতিতে আসা। মানুষের, সমাজের, দেশের কল্যাণই তো রাজনীতি। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে কলম ধরেছি, কথা বলেছি সব সময়।
আর এখন রাজনীতির ময়দানে সেই চর্চা করছি আওয়ামী লীগের পতাকাতলে। রাজনীতি তো মানুষের জন্যেই নিরন্তর কাজ করে যাওয়া। ঈর্ষাকাতরদের প্রতি অনুরোধ কাজ করে দেখান অথবা গঠনমুলক সমালোচনা করুন।
এমপি হলেও আছেন না হলেও আছেন এমন জোরালো উচ্চারণ করে আরিফুর রহমান বলেছেন, ‘আমার লক্ষ্য মানুষের জন্যে কাজ করা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ায় সারথী হওয়া-ভালো মানুষ হওয়া। মনে করি না এমপি হতেই হবে। কর্মই বলে দেবে সব। এমপি হলেও আছি, না হলেও আছি। চ্যালেঞ্জ নিতে জানি।’
কালের আলো/এসআর/আরএম