পিরোজপুর-১: কারা হচ্ছেন আ’লীগ-বিএনপি’র প্রার্থী

প্রকাশিতঃ 3:40 pm | February 23, 2018

কালের আলো, পিরোজপুর:

পিরোজপুরের নেছারাবাদে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া লেগেছে। দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততই পিরোজপুর-১ আসন থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশিদের বাড়ছে তৎপরতা। মনোনয়ন আশা জানিয়ে আওয়ামীপন্থি একাধিক নেতারা পোষ্টার সাটিয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন জায়গায়। কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে চালাচ্ছেন মত বিনিময় সভা, গনসংযোগ।

অপরদিকে নেতৃত্বর কোন্দল, একাধিক গ্রুপিং, লবিং সহ পুলিশি ঝামেলার অযুহাত তুলে কেন্দ্রীয় ঘোষিত নূণ্যতম কোন কর্মসূচী নিয়েও মাঠে নামতে অনিহা দেখাচ্ছে উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলো।

এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-১ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশিদের নাম বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। এদের মধ্যে পাঁচ জনের নাম লোক মুখে বেশি শোনা যাচ্ছে। এরা হলেন, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডঃ শ, ম রেজাউল করিম, বর্তমান এমপি একেএম আউয়াল, তারই ভাই পিরোজপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ হাবিবুর রহমান মালেক, সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ মোঃ শাহ্ আলম, সহ শেখ এ্যানি রহমান। মনোনয়ন প্রত্যাশি একেএম আউয়াল, এ্যাডঃ শ, ম রেজাউল করিম, পিরোজপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ হাবিবুর রহমান মালেক এর নাম শোনা যাচ্ছে বেশ জোরেসোরে। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্র ও হাটেঘাটে সাধারন মানুষের আলাপ-আলোচনায় এ্যাডঃ শ, ম রেজাউল করিম এবং বর্তমান এমপি আউয়াল এর মধ্যেই হতে পারে মনোনয়ন যুদ্ধ। মনোনয়ন প্রত্যাশি এ্যাডঃ শ, ম রেজাউল করিম, শেখ এ্যানি রহমান ইতোমধ্যে উপজেলা আওয়ামী নেতৃবৃন্দদের সাথে নিয়ে করেছেন মত বিনিময় ও গনসংযোগ।

তারা সর্বদা যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন তৃনমুল নেতা-কর্মীদের সাথে। তবে অবস্থানের দিক দিয়ে বর্তমান এমপি এ, কে, এম আউয়াল ও পিরোজপুর পৌরসভার মেয়র মো. হাবিবুর রহমান মালেক দু‘টি গ্রুপ এ উপজেলায় বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। মূলত তাদের দু‘জনার পৃথক পৃথক নেতৃত্বে এখানকার আওয়ামী লীগ দু‘টি গ্রুপে বিভক্ত রয়েছে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সংসদীয় সীমানা পরিবর্তনে পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ নিয়ে গঠিত গঠিত হয় পিরোজপুর-১আসন। সে নির্বাচনে মনোনয়ণ প্রত্যাশি সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ মো. শাহ্ আলমের দুর্গে মনোনয়ন প্রত্যাশি হয়ে হানা দেয় এমপি আউয়াল। মূলত সেই থেকেই নেছারাবাদে এমপি আউয়াল ও অধ্যক্ষ শাহ আলমের বলয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগে বিভাজন সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ, হঠাৎ ২০১৬ সালের এপ্্িরলে পিরোজপুর জুড়ে এমপি আউয়ালের বিরুদ্ধে একচ্ছত্র আধিপত্যের অভিযোগ তুলে এমপি আউয়াল থেকে সরে দাড়ান তারই ভাই পিরোজপুর পৌর মেয়র মো. হাবিবুর রহমান মালেক।

তিনি আওয়ামীলীগের আদলে থেকেই সাবেক সাংসদ বতর্মান মনোনয়ন প্রত্যাশি অধ্যক্ষ শাহ্ আলম-কে সাথে নিয়ে জোট হয়ে এমপি আউয়ালের বিপক্ষে অবস্থান তৈরী করেন। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুইদুল ইসলাম সহ উপজেলা আওয়ামীলীগের উল্লেখযোগ্য অধিকাংশ নেতৃবৃন্দদের দেখা যায় তাদের গ্রুপে। অপরদিকে উপজেলার উলেখযোগ্য নেতা-কর্মীদের মধ্যে এমপি আউয়ালের পক্ষে দেখা যাচ্ছে স্বরূপকাঠি পৌর মেয়র, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সহ উপজেলার একাধিক একাধিক ইউপি চেয়ারম্যান। সে থকেই উপজেলায় অব্যাহত রয়েছে তাদের পাল্টা-পাল্টি সভা-সমাবেশ সহ দলীয় কর্মসূচী।

আওয়ামীলীগে নির্বাচনী হাওয়া আর বিএনপির এ অবস্থার কারন জানতে স্থানীয় দলীয় সূত্রে জানাযায়, বিগত ২০০৯ সালে উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রয়াত মতিউর রহমানকে সভাপতি ও বর্তমান স্বরূপকাঠি উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ওয়াহিদুজ্জামান-কে সম্পাদক করা হয়। সে সময়ে দলের সাংগঠনিক তৎপরতা বেশ ভালই চলছিল।পরে সভাপতি মতিউর রহমান সিকদারের মৃত্যুতে শূন্য হয়ে পড়ে দলটির সভাপতির পদ। পিরোজপুর জেলা বিএনপির তখনকার আহবায়ক গাজী নুরুজ্জামান বাবুল ও ১নং যুগ্ন আহবায়ক মো. আলমগীর হোসেন আসেন জেলার দায়িত্বে। তখন সে কমিটি ভেঙ্গে ২০১০ সালে কমিটির সাধারন সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান-কে বাইরে রেখে মো. ফকরুল আলমকে আহবায়ক করে গঠিত হয় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি। সে থেকেই অনেকটা ভাটা লাগে নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমে। নেতৃত্বের টানপোড়নে তখন থেকে দ্বিধাভিবক্ত হয়ে পড়ে নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপি।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি উপজেলার বিবাদমান দু‘পক্ষ পাল্টা-পাল্টি সম্মেলন করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। ওয়াহিদ বলয়ের সম্মেলনের উদ্ধোধন করেন জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও নাজিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খাঁন। এবং অপর বলয়ের উদ্ধোধনে থাকেন জেলা বিএনপির সভাপতি গাজী নুরুজ্জামান বাবুল। এ সম্মেলন থেকে ঘোষণা আসে দুটি কমিটির। বিষয়টি তৃণমুল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত জানাজানি হলেও দন্ধ নিরসনে দেখা যাচ্ছেনা কোন অগ্রগতি।

কালের আলো/এমকে