ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সিঙ্গাপুর নেয়া হচ্ছে না দগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রীকে
প্রকাশিতঃ 11:22 am | April 09, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আপাতত সিঙ্গাপুরে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। নুসরাতের অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। ৫ ঘণ্টা বিমান ভ্রমণ করে নুসরাতের মতো রোগীকে সেখানে নিয়ে যাওয়া ঝুঁকির। স্টেয়াবল (অবস্থা স্থিতিশীল) হলে তখন নেয়া যেতে পারে বলে মত দিয়েছে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার(৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টায় ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাতের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটের চিকিৎসকরা।
এরপর সকাল ১০টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে সাংবাদিকদের একথা বলেন নুসরাতের চিকিৎসার বিষয়ে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমরা নুসরাতের চিকিৎসা-সংক্রান্ত সমস্ত ডকুমেন্ট আদান-প্রদান করেছি। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা তা দেখে আপাতত নুসরাতকে সেই দেশে নেয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ বলে মত দিয়েছেন। এ কারণে এই মুহূর্তে তাকে সিঙ্গাপুর নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, সকাল ৯টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকদের সাথে আমাদের দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে। লাইফ সাপোর্টে থাকা রাফিকে এই অবস্থায় সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়াটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায় বলে তারা জানিয়েছেন। সিঙ্গাপুর হাসপাতালে চিকিৎসকরা রাফির জন্য নতুন কিছু চিকিৎসা সাজেশন দিয়েছেন। সেই সাজেশনগুলোও অনুসরণ করা হবে।
ডা. সেন আরও বলেন, কিছুক্ষণ পর রাফির ড্রেসিং করা হবে। তার বিষয়ে বিকেলে আবার সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালেরর চিকিৎসকদের সাথে কথা হবে। রাফিকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে না এই বিষয়টি আমরা ওর বাবা-মাকেও খুব ভালো মত বুঝিয়েছি। আগামী ১৭ তারিখ ৫ দিনের জন্য সিঙ্গাপুর হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক এখানে আসবেন। রাফি যদি ততদিন স্ট্রে করে তাহলে তারা রাফিকেও দেখবেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাহ -এমন অভিযোগ এনে ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ তাৎক্ষণিক অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়।
ওই ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। অন্যদিকে আরেকটি অংশ শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে।
এদিকে এ ঘটনায় গত রোববার থেকে আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত মাদরাসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ও অনির্দিষ্টকালের জন্য হোস্টেল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কালের আলো/এসআর/এএ