প্রশ্নবিদ্ধ আইন দিয়ে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না

প্রকাশিতঃ 6:26 pm | March 08, 2025

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, কালের আলো:

রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সামান্তা শারমিন বলেছেন, নাগরিক অধিকারের সঙ্গে নারীর যে অধিকার তা নিশ্চিত করে আইনগতভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। কোনো প্রশ্নবিদ্ধ আইন দিয়ে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না।

শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে সাম্প্রতিক সময়ে দেশজুড়ে নারীর প্রতি সংঘটিত ধারাবাহিক সহিংসতা, নিপীড়ন ও সাইবার হয়রানির প্রতিবাদে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

সামান্তা শারমিন বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা যেভাবে বাড়ছে সেটা অভ্যুত্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। নারীর নিরাপত্তার সঙ্গে নাগরিক নিরাপত্তাও জড়িত। আমাদের দেশে সেই নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন। নাগরিক হিসেবে যে অধিকার পাওয়ার কথা সে অধিকার নিশ্চিতে ৫৩ বছরে কোনো কাজ করা হয়নি। আমাদের দেশকে বিশ্বের কাছে আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করিয়ে দেওয়া হলেও উন্নত রাষ্ট্রে নাগরিকদের যে অধিকার তা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়নি। বরং এই অধিকার কীভাবে দমন করা যায় তা সব কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মাগুরায় ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণের যে ঘটনা ঘটেছে আর তার জন্য আমরা রাজপথে বিচারের দাবিতে খেদিয়ে যাচ্ছি সেটাই প্রমাণ করে দেয় আমরা যে ফ্যাসিস্ট কাঠামোর বিলোপ চেয়েছিলাম তা এখনো বিলোপ হয়নি। এই কাঠামোর বিলোপের জন্য আমাদের ধারাবাহিক লড়াইয়ের প্রয়োজন আছে এবং এই লড়াইয়ে আমাদের নারীরা সংযত আছে। তাই আমাদের অসংযত হতে বাধ্য করবেন না।

তিনি আরো বলেন, নারীদের যে সংগ্রাম রয়েছে তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। অভ্যুত্থানের প্রতি ধাপে ধাপে যে ভূমিকা তাদের ছিল অভ্যুত্থানের পরে সেসব অস্বীকার করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। নারীর অধিকার নিয়ে শুধু নারীকে বলতে হবে এই জায়গা থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। আমাদের পুরুষ সহযোদ্ধারা কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে। আমাদের সজাগ ও সচেষ্ট থাকতে হবে যেন এই রাষ্ট্রীয় কাঠামো আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করতে না পারে। নতুন রাষ্ট্র পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকাঠামোতে নারীর নেতৃত্ব তুলে আনতে যা করা প্রয়োজন কাঠামো ঠিক তার উল্টো দিকে চলছে।

সামান্তা শারমিন বলেন, নারী নেতৃত্ব তৈরি করতে সংসদের সংরক্ষিত আসন আর কোনো ধরনের ভূমিকা রাখবে না। এই সংরক্ষিত আসনগুলো কীভাবে ইলেকটোরাল উপায়ে আনা যেতে পারে আমরা সে চিন্তা করতে পারি। সর্বোপরি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে নারীদের নেতৃত্ব, নারীদের সুযোগ ও সমতা নিশ্চিতে আমাদের সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে। যে নারী কমিশন গঠন করা হয়েছে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সে কমিশনের রিপোর্ট দেখতে চাই। একইসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো নারীদের নিয়ে কী ভাবছে সেটাও প্রকাশ করতে হবে। আমরা দেখতে তারা নারীদের নেতৃত্ব নিয়ে কী ভাবছে।

কালের আলো/এসএকে