কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ চর্চার পরিবেশ তৈরি হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 9:55 pm | March 16, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ চর্চার পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, আমরা ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব খুঁজি। আর ছাত্রজীবন থেকেই তা গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য স্কুল পর্যায়ে ক্যাবিনেট চালু হয়েছে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ চর্চার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আগে রাজনীতির পরিবেশ এতো সুষ্ঠু ছিল না, এখন সুন্দর পরিবেশ ফিরে এসেছে। নেতৃত্ব তুলে আনতে এই ডাকসু নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ মার্চ) গণভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের নবনির্বাচিত নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা বিষয় আমাকে খুবই ব্যথিত করে। আর তা হলো– কোটা আন্দোলনের সময় ভিসির বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর। ভিসির বাড়িতে ঢুকে লুটপাট, ভাঙচুর, আগুন দেওয়া, ভিসির ওপর হামলা –এসব কিন্তু কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।’

তিনি বলেন, ‘আন্দোলন আমরাও করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাড়িতে অবস্থান ধর্মঘট হয়েছে। খুব বেশি হলে বাড়ির সামনে কয়েকটা ফুলের টবই ভাঙা হতো। কিন্তু কোনোদিনই ভিসির বাড়িতে ঢুকে আগুন দেওয়া বা এ ধরনের ঘটনা কখনও ঘটেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভিসির বাসভবনে হামলার রাতে যখন ছাত্রীরাও হল থেকে বের হয়ে আসলো, আমি পরে আর ঘুমাতে পারিনি। কারণ, কিছু ওৎ পেতে থাকা লোক এসব আন্দোলনে মিশে যায়। স্বাভাবিকভাবে একটা উদ্বেগ কাজ করেছে মনে। ওই রাতে যদি একটা ছেলে বা একটা মেয়ের ক্ষতি হতো, যারা আন্দোলনে ছিল তারা কী প্রটেকশন দিতে পারতো। এসব ভেবে আমি আমাদের নেতাদের বিষয়টি দেখার নির্দেশ দিই। পরে ডিএমপি কমিশনার যখন সকাল ৬টার দিকে জানালেন, মেয়েরা নিরাপদে হলে ফিরেছে, তখন আমি বিশ্রাম নিতে যাই। তাই আমি তোমাদের বলবো, সাহস থাকা ভালো, তবে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন থাকাটাও জরুরি। একটা ঘটনা বা দুর্ঘটনা আরও অনেক সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের পরপরই দেশজুড়ে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন শুরু হয়। পরে এ আন্দোলনেও সুযোগ সন্ধানীরা ঢুকে পড়ে। তবে ওই সময় সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ঘরে ফেরার আহ্বান জানালে তারা ঘরে ফিরে যায়।’
ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি আমি সবসময় একটা বিষয় সংশ্লিষ্ট সবাইকেই বলেছি, ডাকসু নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়। এখানে যেন বোমা বা গুলির আওয়াজের কোনও ঘটনা না ঘটে, এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। কে ভোট পেলো, আর কে পেলো না –এটা আমার দেখার বিষয় নয়। আমি শুধু একটা সুষ্ঠু ভোট দেখতে চাই।’

নির্বাচনে ভিপি পদে হেরে যাওয়া শোভনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভোটে হারার পর শোভন আমার কাছে এসেছে। আমি শোভনকে বলেছি, ভোটে হেরেছ, এবার যাও তাকে (নুর) অভিনন্দন জানাও। সে তাই করেছে। আমি এ জন্য শোভনকে ধন্যবাদ জানাই। সে রাজনেতিক পরিবারের সন্তান। তার দাদা এমপি ছিল, বাবা উপজেলা চেয়ারম্যান। সে তার রাজনৈতিক উদারতা দেখিয়েছে।
এর আগে বক্তব্য রাখেন ডাকসু সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরাও বক্তব্য রাখেন।

প্রসঙ্গত, গত ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নুর। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে জয়লাভ করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এছাড়া সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) নির্বাচিত হন ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন।
কালের আলো/এমএইচএ