ফাতেমাকে নিয়ে ধোঁয়াশা
প্রকাশিতঃ 9:39 pm | February 10, 2018
বিশেষ প্রতিবেদক:
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত পরিচারিকা ফাতেমা তার সঙ্গেই রয়েছে দাবি করেছিলেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া। কিন্তু তারই অপর আইনজীবীরা দাবি করেছেন, ডিভিশন অনুযায়ী একজন পরিচারিকা থাকার কথা থাকলেও ফাতেমাকে কারাগারে দেওয়া হয়নি।
আর এতে করে খালেদা জিয়ার দুই দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করা ৩৫ বছরের ফাতেমাকে নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। ফাতেমা এখন কোথায়— উঠেছে সে প্রশ্ন।
‘কারাগারে বিএনপি চেয়ারপারসন সাধারণ কয়েদির মতো বন্দিজীবন শুরু করেছেন। সাধারণ কয়েদির মতো খাবার পাচ্ছেন। তাকে ডিভিশন দেওয়া হয়েছে বলে সরকার গুঞ্জন ছড়াচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। আজ ১০ ফেব্রুয়ারি কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে এসে গণমাধ্যমকে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার মওদুদ আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে একজন পরিচারিকা দেওয়ার কথা ছিল, সেটিও দেওয়া হয়নি।’
অথচ, গত ৮ ফেব্রুয়ারি অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া জানিয়েছিলেন, ফাতেমা ম্যাডামের সঙ্গেই রয়েছেন। বিশেষ জজ আদালত থেকে কারাগারে যাবার সময়ে একই গাড়িতে ওঠে ফাতেমা, যদিও কারা কর্তৃপক্ষ বরাবরই তা নাকচ করে এসেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা এ ধরনের কোনো কাগজ এখনো পাননি।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার পরই খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে তার আইনজীবীরা গৃহপরিচারিকা ফাতেমাকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে রাখার জন্য আবেদন করেন আদালতের কাছে। কিন্তু সেদিন এ বিষয়ে আদালত তাদেরকে অনুমতি দেয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেদিন রাতেই খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাসায় (খালেদা জিয়ার) খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ফাতেমা তার সঙ্গেই আছে এবং একই গাড়িতে করে সে ম্যাডামের সঙ্গে কারাগারে গিয়েছে।’
কিন্তু ফাতেমার কারাগারে থাকার বিষয়টি নাকচ করেছে বিএনপিরই অপর আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, ‘ফাতেমাকে তার (খালেদা জিয়া) সঙ্গে দেওয়ার কথা থাকলেও সেটি দেওয়া হয়নি।’
এদিকে, কারা অধিদফতরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন্স) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খালেদা জিয়া একজন ডিভিশন পাওয়া কয়েদি হওয়ায় তিনি বিধি অনুযায়ী একজন সেবক পাবেন। সেটা কারা কর্তৃপক্ষের দিক থেকেও হতে পারে আবার যিনি রয়েছেন তার ব্যক্তিগতও হতে পারে। কিন্তু আদালতের নির্দেশনা ছাড়া ব্যক্তিগত সেবক দেওয়া যাবে না।’
তারা আদালত থেকে এখনও এ ধরনের কোনো নির্দেশনা পাননি বলেও জানান তৌহিদুল ইসলাম।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। এ ছাড়া রায়ে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ অন্য চারজন আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা জরিমানা করা হয়।
কালের আলো/ওএইচ