বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা

প্রকাশিতঃ 7:44 pm | April 25, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

আগের চেয়ে সুযোগ সুবিধা কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম শ্রেণির ৫৭ কর্মকর্তা সম্প্রতি চাকরি ছেড়েছেন। এদের মধ্যে একজন উপ-পরিচালক ও একজন অফিসার রয়েছেন, বাকি ৫৫ জন সহকারী পরিচালক। যারা চাকরি ছেড়েছেন তাদের অনেকেই বিসিএস কিংবা অন্য কোনো চাকরিতে যোগদানের জন্য চাকরি ছাড়েন।

গত ৩১ মার্চ, ১৫ ও ১৬ এপ্রিল একজন করে, ১৮ এপ্রিল দুই জন এবং ২১ এপ্রিল চারজনের পদত্যাগ কার্যকর হয়েছে। চাকরি ছেড়ে যাওয়া এসব কর্মকর্তা বেশিরভাগই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত ছিলেন।

এ ছাড়া খুলনা ও বরিশাল অফিসে তিনজন করে, সিলেট অফিসে দুইজন, মতিঝিল, চট্টগ্রাম ও রংপুর অফিসে একজন করে কর্মরত ছিলেন।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

জানা গেছে, এক সময়ে অনেকে ভালো ভালো চাকরি ছেড়েও বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারি পরিচালক পদে যোগদান করতেন। বর্তমানে তার ব্যতিক্রম ঘটছে। অনেকে মেধাবীরা বাংলাদেশে ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যাচ্ছেন। এক সময় মেধাবীদের বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরিতে আসার একটি বড় কারণ ছিল নিজস্বতা, সৎভাবে জীবন যাপন করলেও আর্থিক সচ্ছ্বলতা আসতো। নানা ধরনের বৈধ সুযোগ সুবিধা ছিল। এছাড়াও স্বাধীনভাবে তারা বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন। এখন পরিদর্শনসহ বেশির ভাগ সিদ্ধান্ত ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে অনেকের মধ্যে হতাশা রয়েছে। আবার অন্য যে কোনো প্রতিষ্ঠানের চেয়ে সুযোগ-সুবিধাও কিছুটা বেশি পেতেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। বর্তমানে সেই অবস্থাটা আর আগের মতো নেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি অন্য যে কোনো চাকরির মধ্যে তুলনায় সুযোগ সুবিধা ও সম্মান অনেক বেশি ছিল। পাশাপাশি ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরিতে নানাভাবে উৎসাহিত করার ব্যবস্থা ছিল। সব ক্ষেত্রে মেধাবীদের প্রাধান্য ছিল। ২০১৮ সাল পর্যন্ত সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর একাডেমিক রেজাল্টের ভিত্তিতে চারটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হতো। ২০১৯ সালের এডি ব্যাচ থেকে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে অনেকেই বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরির প্রতি আগ্রহ হারিযে ফেলছে।

অন্যদিকে, ২০২২ সালের আগ পর্যন্ত তিন বছর পূর্ণ হলে পদ খালি থাকা সাপেক্ষে পরবর্তী ধাপে পদোন্নতির যোগ্য হতেন কর্মকর্তারা। এখন পদ খালি থাকলেও পাঁচ বছর না হলে পদোন্নতি পান না। আগে যোগদানের পর নয় মাসের ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ করানো হতো। এখন এক থেকে তিন মাসে নামিয়ে আনা হয়েছে। আবার এই প্রশিক্ষণে ৮০ শতাংশ নম্বর পেলে অতিরিক্ত একটা ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হতো। সেটিও এখন বন্ধ।

এছাড়াও সরকারি চাকরি পঞ্চম গ্রেডে প্রতি মাসে ৪৫ হাজার টাকা কার মেইনটেন্যান্স ভাতা দেওয়া হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকে তা দেওয়া হয় না। এ সব কারণে অনেকে ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগদান করছে।

কালের আলো/এসবি/এমএম