ভারতের সঙ্গে পুড়ছে বাংলাদেশও
প্রকাশিতঃ 8:42 pm | April 21, 2024
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, কালের আলো:
ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চলছে দাবদাহ। সেখানে কোথাও কোথাও দিনের তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়েছে। একই ধরনের আবহাওয়া বিরাজ করছে বাংলাদেশ জুড়েও। যদিও বাংলাদেশে এখনও তাপমাত্রার পারদ ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে আরও খানিকটা দূরে। তাতেই দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
সে তুলনায় পাকিস্তান ও মিয়ানমারসহ অন্য দেশগুলো কিছুটা স্বস্তিতেই রয়েছে। কিন্তু প্রচণ্ড গরমে পুড়ছে বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর ও দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, ভারতের বেশিরভাগ স্থানের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। শনিবার (২০ এপ্রিল) উড়িষ্যার বারিপদার তাপমাত্রা ছিল ৪৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বাংলাদেশে শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে যশোরে। এটিই চলতি মৌসুমে দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।
বৈশাখের প্রথম সপ্তাহে ভারতের পানাগড় রাজ্যের ১৮টি জায়গায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়। শুক্রবার কলকাতায় দিনের তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওইদিন পানাগড়ের দিনের তাপমাত্রা ছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শনিবার ঝাড়খন্ডের ডালটনগঞ্জে তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৪৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এই পরিস্থিতিতে সেখানে ছুটির বিকল্প হিসেবে বদলে দেওয়া হয়েছে স্কুলের সময়। এদিন ছত্তিষগড়ের রাজনন্দাগাঁওতে তাপমাত্রা ছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মিয়ানমারের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, দেশটির একেবারে দক্ষিণ দিকের সীমান্তঘেঁষা শহর কাউথাংয়ে গত ১৬ এপ্রিল আগের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙেছে। সেখানে ওইদিন ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল, এর আগে ২০১০ সালে ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল।
মিয়ানমারের সাগাইন অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর মোনিয়ায়ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়েছে।
তবে শনিবার বাংলাদেশের তিনটি অঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়। এছাড়া ৯টি অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পার হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন পাবনা (৪২), যশোর (৪২.৬) ও চুয়াডাঙ্গায় (৪২.৪) অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল।
রাজশাহী জেলা, খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং ঢাকা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, ফেনী, কক্সবাজার, চাঁদপুর ও রাঙ্গামাটি জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
প্রায় সারাদেশে গরম চরম আকার ধারণ করেছে। বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাভাবিক জনজীবন। আজ রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল, কিন্তু গরমের কারণে ছুটি আরও সাতদিন বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে দাবদাহের কারণে হাসপাতালগুলো প্রতিকূল পরিবেশের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ মুহূর্তে হাসপাতালে জরুরি রোগী ছাড়া ভর্তি না করার নির্দেশনা দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘ভারতে আমাদের থেকেও কঠিন অবস্থা যাচ্ছে। ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে থর মরুভূমি রয়েছে। ওই অঞ্চলটা খুবই উষ্ণ, তাপমাত্রা বেশি থাকে। প্রায়ই ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকে।’
তিনি বলেন, ‘ভারতে এখন তাপমাত্রা বেশি। পাকিস্তানের কিছু অংশেও গরম রয়েছে।’
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, ‘ভারতের দক্ষিণে গরম অপেক্ষাকৃত কম, উত্তরে বেশি। পাকিস্তানে বৃষ্টি হচ্ছে। মিয়ানমারে আমাদের লাগোয়া অংশে গরম রয়েছে।’
কালের আলো/এমএইচ/এসবি