কোনো সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না: আইজিপি
প্রকাশিতঃ 6:50 pm | April 03, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংক ও থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংক লুটের ঘটনায় কোনো সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
তিনি বলেছেন, কোনো সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না। রুমা সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজারকে উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে বান্দরবানের রুমায় এসে সোনালী ব্যাংকসহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন শেষে আইজিপি এসব কথা বলেন। তিনি ব্যাংকের পাশাপাশি পাশের মসজিদও পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ব্যাংক কর্মকর্তা ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পুলিশপ্রধান বলেন, বান্দরবানে এসেছি, কাল রাতে জঘন্য যে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে কী হয়েছে তা জানার জন্য এসেছি। আমরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি, আমাদের লোকজনের উপর আক্রমণ হয়েছে, মসজিদে তারা আক্রমণ করেছে, আনসার ক্যাম্পে তারা আক্রমণ করেছে, পরবর্তীতে অস্ত্র নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আনসার, পুলিশের অস্ত্র নিয়েছে এবং সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজারকে নিয়ে গেছে। আমরা দেখছি, অস্ত্রগুলো কোথায় আছে খুঁজে দেখব। এবং এর সঙ্গে যারা জড়িত এদের বিরুদ্ধে যথাযথ কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইজিপি যখন রুমা পরিদর্শনে ছিলেন তখন ভরদুপুরে থানচিতে কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে হামলা চালায় একদল সশস্ত্র গোষ্ঠী।
সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা একটু আগেই বিষয়টি শুনেছি। আমরা সতর্ক ছিলাম বলেই তারা এসে পালিয়ে গেছে। আমরা এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছি।
প্রতিটি ঘটনার বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, যারা দৃষ্কৃতকারী তাদের আইনের আওতায় আনা হবে এবং যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, পুলিশের সক্ষমতা একটি চলমান প্রক্রিয়া। একটা সময় তথাকথিত সোর্স নির্ভর তদন্ত হত। এখন আর আমরা সোর্স নির্ভর তদন্ত করি না। কারণ আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, একসময় এদেশে জঙ্গিবাদের হোলি খেলা চলেছে। সন্ত্রাসীদের দাপট ছিল। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সাধারণ মানুষ, একজন স্কুল শিক্ষক সেখানে বাসবাস করতে পারতেন না। তাদেরকে চাঁদা দিতে হয়েছে। এখন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চালু হয়েছে। সারাদেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্সের যে নীতি, সেই নীতির আলোকে আমরা সক্ষমতা বৃদ্ধি অর্জন করেছি”, বলেন পুলিশ-প্রধান।
এদিকে বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংক লুটের পর থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকেও ডাকাতি করেছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
এর মধ্যে সোনালী ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা এবং কৃষি ব্যাংক থেকে দুই লাখ ৪৫ হাজার টাকা থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে থানচি বাজার ঘেরাও করে অস্ত্রধারীরা। পরে থানচি সোনালী ব্যাংক ও পাশের কৃষি ব্যাংকে ঢুকে সবাইকে জিম্মি করে লুটতরাজ চালায়। পরে বাজারের বেশ কয়েকজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে চলে যায় তারা।
কৃষি ব্যাংকের থানচি উপজেলার শাখার ব্যবস্থাপক হ্লা সুই থোয়াই বলেন,তারা চোখের পলকে আমাদের ব্যাংকে ঢুকে সবাইকে জিম্মি করে একটি কক্ষে নিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তারপর তারা লুটতরাজ চালায়।
এর আগে মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে ৭০-৮০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী রুমা উপজেলা পরিষদ এলাকা ঘেরাও করে। তারা সোনালী ব্যাংকে গিয়ে পাহারারত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয় এবং মারধর করতে থাকে। ব্যাংকে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। সেই সঙ্গে ব্যাংকের ম্যানেজারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
স্থানীয় জনগণ ও প্রশাসনের ধারণা,এ ঘটনা নব্য বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ঘটিয়েছে।
কালের আলো/ডিএস/এমএম