পুরনো কর্মক্ষেত্রে স্মৃতিকাতর কৃষি মন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 6:30 am | January 23, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

‘এই বিল্ডিংটা আমার খুব আপন। ১৯৮০ সালে এই প্রতিষ্ঠানেই আমি যোগ দিয়েছিলাম সায়েন্টেফিক অফিসার হিসেবে। ২০০১ সালে এই বিল্ডিং থেকেই অশ্রুসিক্ত চোখে বিদায় নেই, এটা ছাড়া আমার জীবনে আর কোনো কর্মক্ষেত্র নেই। ‘

গলা ধরে আসা কন্ঠে বলছিলেন দেশের প্রথম কৃষিবীদ কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক এমপি।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের প্রায় চল্লিশ বছরের পুরনো লাল ইটের দালানের মিলনায়তনে কৃষি বিজ্ঞানীদের কৃষি বিষয়ক টেকসই লক্ষ্যমাত্রার রোডম্যাপ তৈরির কর্মশালায় এভাবেই স্মৃতিকাতরতায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন মন্ত্রী।

কিছুটা সামলে উঠে মন্ত্রী ড.আবদুর রাজ্জাক আবারো বললেন, ‘আজ আমি যা, আমার সব আনন্দ, সাফল্য, ব্যর্থতা সব জড়িয়ে আছে এই বিল্ডিংকে ঘিরে। আজ এখানে আপনাদের মধ্যে ফিরে আসতে পেরে আমি খুব আনন্দিত।’

নতুন কৃষিমন্ত্রীর আনন্দে বিভোর হয়ে ওঠেন তার সাবেক সহকর্মীরাও। তালি দিয়ে উৎসাহিত করেন মন্ত্রীকে।

আরো পড়ুন:
‘গুরুভক্ত’ কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক

এরপর মন্ত্রী ফিরেন আসল কথায়। একে একে ব্যাখ্যা করা শুরু করেন কৃষি বিষয়ে বর্তমান সরকারের পরিকল্পনার কথা। তিনি বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে আমরা ক্ষুধাকে জয় করব এবং ২০৫০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যকে অর্ধেকে নামিয়ে আনবো।’

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে ‘কৃষি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট এসডিজি রোড ম্যাপ প্রণয়ন’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশ ২০১৩ সাল থেকে দানা জাতীয় খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তবে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা শুধু খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ছিল না।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সাবেক এই বিজ্ঞানী বলেন, আমরা পর্যাপ্ত খাদ্য এবং খাদ্যের প্রাপ্যতার পাশাপাশি নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে নিয়ে এগিয়েছি।

বাংলাদেশ এখন আর ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের দেশ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৮-১৪ সালে খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় দেখেছি মঙ্গা অঞ্চলের মানুষরাই দিনে দুইবেলা করে খাবার পাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য ২৮ ভাগে নামিয়ে আনার কথা ছিল যা ২৩ ভাগে নেমে আসে। এখন টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমাদের এভাবে কাজ করতে হবে।

কৃষি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট এসডিজি রোডম্যাপ প্রণয়ন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. কবির ইকরামুল হক, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম, এমেরিটাস বিজ্ঞানী ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা প্রমুখ।

কালের আলো/এএম/এমএইচএ