প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিমান বাহিনী পেশাদার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে : বিমান বাহিনী প্রধান
প্রকাশিতঃ 9:43 pm | November 20, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান বলেছেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্ব ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ইতোমধ্যেই একটি পেশাদার বিমান বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।’ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর আধুনিকায়ন এবং সম্প্রসারণে নিরন্তর অনুপ্রেরণা ও সময়োপযোগী দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য বিমান বাহিনীর সকল সদস্যের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে সনির্বন্ধ কৃতজ্ঞতা জানান বিমান বাহিনী প্রধান।
এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান বলেন, ‘একুশে নভেম্বর বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য একটি গৌরবময় ও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অকুতোভয় সদস্যগণ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে অপ্রতিরোধ্য আক্রমণ সূচনা করেছিলেন। এই সম্মিলিত আক্রমণে হানাদার বাহিনী দিশেহারা হয়ে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় এবং বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। আমাদের বীরত্ব, সাহস এবং গর্বের এই উৎস ২১শে নভেম্বরকে সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। এই আনন্দঘন মুহূর্তে আমি সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীনতা অর্জন করে। আজকের এই মহতী দিনে আমি জাতির পিতাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। আমি আরও স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। যাঁরা নির্লোভ দেশপ্রেম এবং নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমাদেরকে শিখিয়ে গেছেন যে, দেশের জন্য জীবন উৎসর্গের চেয়ে বড় গৌরবের আর কিছু নেই।’
‘আমি বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করছি, যিনি চিরদিন আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এমন একটি বাহিনী, যে বাহিনী যুদ্ধ চলাকালে কিলো ফ্লাইট নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এই কিলো ফ্লাইট আকাশযুদ্ধে অসংখ্য সফল আক্রমণ পরিচালনার মাধ্যমে আমাদের কাঙ্ক্ষিত বিজয়কে ত্বরান্বিত করে এবং স্বতন্ত্র বিমান বাহিনী গঠনে অসামান্য অবদান রাখে। আমাদের গর্বের প্রতীক কিলো ফ্লাইটের সকল সদস্যের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি’-বলেন এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ও সামরিক কৌশলগত দিক বিবেচনায় জাতির পিতা একটি অত্যাধুনিক, পেশাদার ও চৌকশ বিমান বাহিনী গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তদানুযায়ী তিনি স্বাধীনতার পরপরই বিমান বাহিনীতে সংযোজন করেন সে সময়ের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার ও এয়ার ডিফেন্স র্যাডার। জাতির পিতার অপরিসীম প্রজ্ঞা এবং দূরদৃষ্টিকে সামনে রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমান বাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন। এরই ধারাবাহিকতায়, ইতোমধ্যে বিমান বাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, পরিবহন বিমান, প্রশিক্ষণ বিমান ও সিমুলেটর, বিভিন্ন ধরনের র্যাডার এবং ক্ষেপণাস্ত্র। ফোর্সেস গোল-২০৩০-এর আওতায় অত্যাধুনিক বিমান, হেলিকপ্টার ও সামরিক সরঞ্জাম সংযোজন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান আরও বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ বিমান বাহিনীর সকল সদস্য দেশের আকাশসীমা প্রতিরক্ষার পাশাপাশি দেশগঠন, আর্তমানবতার সেবা ও জনকল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে সদাপ্রস্তুত। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা কার্যক্রমে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যগণ নিজেদের আন্তরিকতা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাগত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। আমি আশা করি, সশস্ত্র বাহিনী দিবসের চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ভবিষ্যতেও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার অসামান্য অবদান সমুন্নত রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।’
‘সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরার লক্ষ্যে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করতে যাচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এ মহতী উদ্যোগ নিঃসন্দেহে তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত করবে। পরিশেষে, আমি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করছি। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। জন্য বাংলা’-বলেন বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান।
কালের আলো/ডিএসকে/এমএইচএ