আরব নেতাদের সাথে বৈঠকের পর যা বললেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 10:28 pm | November 04, 2023

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান যুদ্ধ নিয়ে কথা বলতে শনিবার (৪ নভেম্বর) জর্ডানের রাজধানী আম্মানে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।আম্মানে আরব বিশ্বের পাঁচ দেশ সৌদি আরব, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে একটি বৈঠকে অংশ নেন তিনি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, এই বৈঠকে আরব নেতাদের চাপের মুখে পড়েন ব্লিঙ্কেন। তারা গাজায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির দাবি জানান এবং হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে অবস্থান নিয়েছে এতে তারা সমর্থন জানাননি।
বৈঠক শেষে সংবাদম সম্মেলনে কথা বলেন ব্লিঙ্কেন। রুমভর্তি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ব্লিঙ্কেন বলেন, আরব নেতাদের সৌজন্যতা এবং তাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়ে তিনি কৃতজ্ঞ। তিনি জানান, আরব নেতাদের মতো তিনিও চান এই যুদ্ধ বন্ধ হোক এবং এই অঞ্চলে একটি দীর্ঘমেয়াদি শান্তি আসুক।
গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় তিনি মিসরকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি সাংবাদিকদের আরও জানান, গাজা-মিসরের সীমান্তবর্তী রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজায় আজও ১০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো— হামাসের হাতে যেসব বন্দি আছে তাদের উদ্ধার করা।
তবে গত কয়েকদিনের মতো জর্ডানে গিয়েও সেই একই কথা বলেছেন ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। তবে আত্মরক্ষার নামে অভিযান চালানোর সময় যেন বেসামরিক মানুষ হতাহত না হন সেদিকটিতে ইসরায়েলকে খেয়াল রাখতে হবে বলে জানান তিনি।
ব্লিঙ্কেন জানান, গাজায় এই অভিযান অব্যাহত রাখার মাধ্যমে হামাসকে দমন করা সম্ভব হবে। এতে হামাস ইসরায়েলে দ্বিতীয়বারের মতো আর হামলা চালাতে পারবে না।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে বলেন, যখন তিনি দেখতে পান ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে গাজার শিশুদের টেনে তোলা হয়; তখন সে দৃশ্য তার মনে প্রচণ্ড আঘাত করে।
তিনি জানান, তাদের সবাইকে একে অপরের প্রতি মানবিক হতে হবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনো গাজায় কোনো যুদ্ধবিরতি চায় না বলে জানিয়েছেন ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেছেন, যুদ্ধবিরতি করলে হামাস আবার সংঘটিত হবে এবং ৭ অক্টোবরের মতো হামলা চালাবে।
ব্লিঙ্কেনের পর সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ সোরকি। তিনি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির দাবি জানান।
এছাড়া তিনি দ্বিমুখী ও ভণ্ডামি না করতে পশ্চিমাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘যখন ফিলিস্তনিদের উপর অত্যাচার হয় তখন এ নিয়ে অন্যগুলোর মতো একই প্রতিক্রিয়া দেখানো হয় না। বিষয়টি যেন এমন আরবদের রক্ত অন্যদের রক্তের চেয়ে কম দামী।’
জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেছেন, কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ডই গ্রহণযোগ্য নয়। এছাড়া এটি কোনো ধর্মীয় যুদ্ধ নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে এক সাংবাদিক ব্লিঙ্কেনকে জিজ্ঞেস করেন, গাজায় ১০ হাজার মানুষ হত্যা করে ইসরায়েল কি অর্জন করেছে। এর জবাবে ব্লিঙ্কেন বলেছেন, কোনো দেশই তার বেসামরিকদের হত্যার বিষয়টি মেনে নিত না। তবে হামাস বেসামরিক মানুষদের মধ্যে লুকিয়ে থাকায়, অস্ত্র মজুদ করায় বেশি ফিলিস্তিনি হতাহত হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
সূত্র: বিবিসি
কালের আলো/এসএমআর