স্বার্থান্বেষী মহলের অপচেষ্টা নস্যাৎ, প্রতিমা বিসর্জনে বিশেষ নিরাপত্তা দেবে র‍্যাব

প্রকাশিতঃ 5:35 pm | October 23, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল অথবা দুষ্কৃতকারীরা দেশের কয়েকটি স্থানে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা তৈরির মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করেছিল, ওই দুষ্কৃতকারীদের শনাক্ত করে তাদের অপচেষ্টা নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেছেন, শারদীয় দুর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জনে বিশেষ নিরাপত্তা দিতে যা যা প্রয়োজন সবকিছু করা হবে। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে র‍্যাব সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবে।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজামণ্ডপে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসেবে র‍্যাব ফোর্সেসের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) কর্নেল মোঃ মাহাবুব আলমসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজামণ্ডপ গৃহীত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ১৬ অক্টোবর থেকে র‍্যাব বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সারাদেশে ৩২ হাজারের বেশি পূজা মণ্ডপে ৪ হাজারের বেশি সাদা পোশাক ও ইউনিফর্মে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। র‍্যাবের স্পেশাল বাহিনী, ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং কার্যক্রম পরিচালনা করছি।

যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় র‍্যাবের স্পেশাল ফোর্স ও হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানান মঈন।

তিনি বলেন, দুর্গাপূজায় এখন পর্যন্ত সফলভাবে র‍্যাব দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হয়েছে র‍্যাব। দেশের প্রতিটি এলাকায় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। ব্যাটালিয়নের ইউনিট প্রধানরা পূজার নিরাপত্তা পরিদর্শনে যাচ্ছেন। র‍্যাব সদর দপ্তর থেকে এলাকাভিত্তিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করে। তাদের আইনের আওতায় আনতে র‍্যাবের সাইবার ইউনিট কাজ করছে।

এখন পর্যন্ত জঙ্গি বা নাশকতার হামলার আশঙ্কা নেই জানিয়ে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের অপতৎপরতা রোধে কাজ চলছে। নারী দর্শনার্থীরা ইভটিজিং কিংবা হেনস্তার শিকার না হয় সেজন্য গোয়েন্দা নজরদারি চলমান।

অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের যে স্লোগান, ধর্ম যার যার উৎসব সবার, এ মূলমন্ত্রকে ধারণ করে শারদীয় দুর্গাপূজা যেন নিরাপদে উদযাপন করতে পারি সেজন্য আমরা দেশব্যাপী বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সারা দেশে ৩২ হাজার ৪০৭টি পূজামণ্ডপ রয়েছে। এসব মণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ৪ হাজারের বেশি র‌্যাব সদস্য পোশাকে ও সাদা পোশাকে কাজ করছেন। ৩ শতাধিক টহল টিম পরিচালনা করা হচ্ছে। যাতে করে আমাদের এ উৎসবকে কোনো দুষ্কৃতকারী বা স্বার্থান্বেষী মহল বানচাল করতে না পারে।

আমরা বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট স্থাপন করেছি। বিভিন্ন পয়েন্টে আমাদের গোয়েন্দা সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন। তারা তথ্য সংগ্রহ করছেন। বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে সুইপিং করা হচ্ছে। সারাদেশে যেখানে প্রয়োজন সেখানে সুইপিং করা হচ্ছে।

যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য র‍্যাবের স্পেশাল ফোর্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ডগস্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হচ্ছে। র‌্যাবের হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সবার সার্বিক সহযোগিতায় এখন পর্যন্ত সফলভাবে দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি।

খন্দকার আল মঈন বলেন, আমাদের প্রতিটি এলাকায় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে যেসব পূজা মণ্ডপ রয়েছে, সেখানকার পূজা কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে যা যা করা প্রয়োজন তা করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইউনিট প্রধানরা নিয়মিত পূজামণ্ডপগুলো পরিদর্শন করছেন। র‍্যাব সদর দপ্তর থেকে আমরা সমন্বয় করে সারাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

পূজা কমিটিকে ধন্যবাদ দিয়ে কমান্ডার মইন বলেন, পূজার বিরতিকালে দেখেছি স্বার্থান্বেষী বা সুযোগ সন্ধানী মহল বিভিন্ন ধরনের তৎপরতা বা অপচেষ্টা করেন। পূজা কমিটিকে ধন্যবাদ, পূজার বিরতিকালে বা মধ্যরাতে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করছেন। আমরা সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি।

যেসব নারী পূজামণ্ডপে আসছেন, তারা যেন কোনোভাবে ইভটিজিংয়ের স্বীকার না হয় সেজন্য র‌্যাব গোয়েন্দা সদস্যরা সাদা পোশাকে কাজ করছে। বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে গোয়েন্দা সদস্যরা কাজ করছে।

পূজা উদযাপন কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে একটা সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। বিগত সময়ে দেখেছি বিভিন্ন দল তাদের কর্মসূচি পালন করে আসছে। ‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’ এ মূলমন্ত্রকে লালন করে দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রের সম্পদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাবে র‍্যাব। এ বিষয়ে গোয়েন্দা তৎপরতা চলমান।

কালের আলো/ডিএস/এমএম

Print Friendly, PDF & Email