বিএনপির কথা এবং কাজ সবই ধ্বংসাত্মক : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 1:51 pm | October 19, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বিএনপির কথা এবং কাজ সবই ধ্বংসাত্মক জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি এখন নির্বাচন নিয়ে কথা বলে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে তারা নানা কথা বলে। আমি এখন সমালোচনা করতে চাই না। এদের কথা এদের কাজ সবই ধ্বংসাত্মক। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে আমি সতর্ক করব। আজকের উন্নয়ন ধ্বংস করুক, সেটা আমরা চাই না।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) তেজগাঁও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় ১৫০টি সেতু, ১৪টি ওভার পাস, স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস পরীক্ষা কেন্দ্র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা অনেক ভালো কাজ করেছি, ভালো কথাই বলতে চাই। ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকারে আসি, তখন সারা বাংলাদেশে কী ভাবে উন্নয়ন গড়ে তুলবো সেই প্রচেষ্টা আমরা চালাই।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল তারা দেশকে কী দিয়েছে? তারা দেশের মানুষের জন্য কতটুকু করেছে? তারা দেশের কতটুকু উন্নতি করেছে, সেটাই হলো বড় প্রশ্ন। আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে, তখনই এ দেশের উন্নয়নে জাতির পিতার আদর্শ-পদাঙ্ক অনুসরণ আমরা করেছি। তার আদর্শ নিয়ে আমরা কাজ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত যতগুলো ব্রিজ, পুল ব্রিজ, রাস্তা-ঘাট আমরা করেছি সব হিসাব দিতে গেলে অনেক সময় লাগবে।’

এ সময় উল্লেখযোগ্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের বর্ণনা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০১ সালে সরকারে আসতে পারিনি, সেটা আমি বহুবার বলেছি। কারণ আমাদের গ্যাস অন্য দেশ কিনবে; আমি রাজি হইনি। খেসারত দিতে হয়েছে, ক্ষমতায় আসতে পারিনি। জনগণের ভোট পেয়েছিলাম কিন্তু চক্রান্তের শিকার হয়েছিলাম। তার পরে দেশটার অবস্থা কী হয়েছিল? বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি—অপশাসনের কারণে এ দেশে ইমার্জেন্সি ঘোষণা হয়। তার আসে আর্মি ব্যাকড তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

‘সেই সময়টার কথা একবার চিন্তা করে দেখেন মানুষের কী দুরাবস্থা ছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য করার কোনো সুযোগ ছিল না। বিএনপির আমল থেকে যে অত্যাচার নির্যাতন শুরু হয়েছিল এ দেশের মানুষের ওপর, তারই ধারাবাহিকতা চলতে থাকে। যা হোক একটা পর্যায়ে ২০০৮ সালে তারা নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়,’ বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ এর নির্বাচনের রেজাল্ট; ২০ দলীয় ঐক্যজোট বিএনপি-জামায়াত পেয়েছিল মাত্র ২৯টি সিট। পরে বোধ হয় রিইলেকশনে একটা—৩০টা। ৩০০ সিটের মধ্যে তাদের প্রাপ্তি ছিল মাত্র ৩০টি সিট। এই হলো তাদের শক্তি, জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা।

‘এখন তারা নির্বাচন নিয়ে কথা বলে। অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন; নানা কথা বলে। সেটা নিয়ে আমি এখন সমালোচনা করতে চাই না কারণ অনেকগুলো ভালো কাজ করেছি ভালো কথাগুলো বলে যেতে চাই কিন্তু এদের কথা এবং এদের কাজ সবই ধ্বংসাত্মক। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে আমি সতর্ক করতে চাই। আজকে এই উন্নয়নগুলো ধ্বংস করুক সেটা আমরা চাই না,’ যোগ করেন তিনি।

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নি সন্ত্রাসের সময় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিল বা মারা গিয়েছিল আমরা কিন্তু প্রত্যেককে প্রায় তিন হাজার ৮০০ জনকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলাম। আর যারা অগ্নিদগ্ধ তাদের এখনো চিকিৎসা বা যা প্রয়োজন হচ্ছে আমরা সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের জীবনে যেন এই ধরনের অগ্নি সন্ত্রাস বা এই ধরনের ঘটনা আর না আসে। তখন তারা এগুলো করেছে। এখন তারা আন্দোলন করছে ঠিক আছে, যদি দেখি এখনো তারা চেষ্টা করে বাসে আগুন দিতে, গাড়িতে আগুন দিতে—আমি বলে দিয়েছি, এই আগুন যারা দিতে যাবে; এখন সিসি ক্যামেরা এবং নিরাপত্তায় যারা থাকবে বা গোয়েন্দা সংস্থা সবাইকে বলেছি, সবার ক্যামেরা অন থাকবে, যদি কেউ এ রকম করতে চায় সঙ্গে সঙ্গে যা ব্যবস্থা নেওয়ার তাই নেবে। যেন মানুষের ক্ষতি করতে না পারে। আবার ওই অগ্নি সন্ত্রাসে যেতে পারে। আন্দোলন করুক আমার আপত্তি নাই।

‘আমরা তো সারা জীবন আন্দোলন করে তার পরে না ক্ষমতায় এসেছি। তারা যেতে চাচ্ছে কিন্তু এই ধরনের মানুষের ক্ষতি করা, এটা যেন করতে না পারে। সে ক্ষেত্রে আমি মনে করি, আপনারা সবাই সজাগ থাকবেন,’ বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

কালের আলো/বিএসবি/পিএম