কর্মচঞ্চল অর্থনীতিতে জোর স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের

প্রকাশিতঃ 10:44 pm | March 29, 2023

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বের হয়ে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীতের ফলে কর্মচঞ্চল অর্থনীতিতে জোর দিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম। ২০৪১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত দেশে পরিবর্তিত হতে তিনি নিজ মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকেও সামনে এনেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা কাজ করে যেতে পারলে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশে পরিবর্তিত হতে পারবো। এজন্য যে ম্যাকানিজম দরকার তাঁর একটি বিরাট অংশ স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের।’ দক্ষ ও কর্মতৎপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলামের গতিশীল নেতৃত্বে মন্ত্রণালয়ের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মদক্ষতায় গুরুত্ব দিয়ে উন্নত দেশে রূপ দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ী শপথ নিতেও আহ্বান জানান স্থানীয় সরকার বিভাগের এ সচিব।

বুধবার (২৯ মার্চ) জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর মিলনায়তনে চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এমন দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম। আলোচনা সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সরোয়ার হোসেন, স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সালেহ আহমেদ মোজাফফর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম বলেন, ‘মার্চ মাসটি আমাদের জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মার্চ। আমাদের জাতীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ চারটি ঘটনা এই মার্চ মাসে ঘটেছে। প্রথমটি মুক্তিযুদ্ধের জন্য বাঙালি জাতির স্বাধীনতার শপথ ঐতিহাসিক ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী ভাষণ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, ২৫ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি দেশ দিয়ে গেছেন। আমরা অত্যন্ত ভাগ্যবান তাঁর সুযোগ্য কন্যার হাতে আমাদের দেশের ডেস্টিনেশন নির্ধারণের দায়িত্ব দিতে পেরেছিলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দুর্বল অর্থনীতির দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে নিয়ে গেছেন। আমরা তার নেতৃত্বে কাজ করতে পারলে আমরা ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশে পরিবর্তিত হতে পারবো। এজন্য যে ম্যাকানিজম দরকার তাঁর একটি বিরাট অংশ স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।’

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মহাকর্মযজ্ঞের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বলেন, ‘সিঙ্গাপুর ও কম্বোডিয়ার মতো দেশে এই মন্ত্রণালয়ের নাম মিনিস্ট্রি অব ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট। অর্থাৎ জাতীয় উন্নয়নের মন্ত্রণালয়। আমাদের এখানেও আমরা ওয়াটার স্যানিটেশন, পল্লী অবকাঠামো নির্মাণ, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মাধ্যমে পল্লী ও শহরের যোগাযোগের সেতুবন্ধ নিশ্চিত করেছি। আমাদের কাজ প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, শহর অঞ্চলগুলোতে আমাদের কাজ জন্ম মৃত্যু নিবন্ধন।’

ডায়নামিক মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম এমপি
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘অভিভাবক’ মো.তাজুল ইসলামকে একজন ডায়নামিক মন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বলেন, ‘অত্যন্ত ডায়নামিক একজন মাননীয় মন্ত্রী আমাদের নেতৃত্বে রয়েছেন। আমরা আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করতে সক্ষম হবো।’

এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরের ঘটনায় বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম বলেন, ‘স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আমাদের সঙ্গে সম্প্রতি একটি সম্মেলনে ছিলেন। সেখানে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে এসেছিলেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে একটি অনুষ্ঠান হয়েছিল। আমাদের মতো বড় দেশগুলো যখন এলডিসি থেকে মিডিল ইনকাম কান্ট্রি হই তখন যদি আমরা আমাদের অর্থনীতিকে আরও কর্মচঞ্চল করে তুলতে না পারি তাহলে আমরা কিন্তু উন্নত হতে পারি না। ওই সম্মেলনে দেখানো হয়েছিল, বহু বছর যাবত ব্রাজিল মধ্যম আয়ের আদেশ। কিন্তু তারা উন্নত দেশ হতে পারছে না। উন্নত দেশ সেগুলোই হয়েছে যেমন সিঙ্গাপুর, হংকং বা ইউরোপের কয়েকটি দেশ যেগুলো এক শহরের দেশ, দ্বীপরাষ্ট্র।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ বিরাট। আমরা হয়তো ভাবছি আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়ে গেছি, সুতরাং আমরা খুব সহজে উন্নত দেশ হয়ে যাবো। কিন্তু ঘটনাটি সেরকম ঘটবে না। তাই স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সবাই আসুন দৃঢ় প্রত্যয়ে শপথ করি, এ দেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে আরও কর্মদক্ষতার সঙ্গে আমরা আমাদের পরবর্তী কার্যক্রমগুলো চালিয়ে নিবো।’

কালের আলো/এমএএএমকে

Print Friendly, PDF & Email